দার্জিলিঙের পদ্মজা নায়ডু হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্কে জন্ম হল দু’টি রেড পান্ডার। চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, একটি শাবকের জন্ম হয়েছে ২৩ জুন, আর একটির ১ জুলাই। তবে তাদের মূল চিড়িয়াখানায় রাখা হয়নি। তাদের জন্মই হয়েছে শৈলশহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে টোবগে দারা এলাকায় তার দিয়ে ঘেরা একটা অঞ্চলে। রেড পান্ডা যেমন প্রকৃতিতে সব থেকে ভাল থাকে, ওই এলাকাটিকে সে ভাবেই তৈরি করা হয়েছে। সেখানেই মায়ের কাছে ঝোপের আড়ালে তিন সপ্তাহ ধরে রয়েছে শাবকগুলি। ধারে কাছে কাউকে যেতে আপাতত বারণ করা হয়েছে। ৯০ দিন এ ভাবেই রাখা হবে তাদের। দার্জিলিং চিড়িয়াখানার অধিকর্তা রাজেন্দ্র জাখর বলেন, ‘‘আমরা অনেকটাই দূর থেকে অত্যন্ত সতর্ক ভাবে নজর রাখছি। আপাতত দু’টি শাবকই সুস্থ রয়েছে।’’ টোবগে দারা-র বিরাট এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরাও রয়েছে। তাতেও মা এবং শাবকদের উপর নজরদারি চলছে।
এই চিড়িয়াখানায় গত বছর তুষার চিতার একটি শাবকেরও জন্ম হয়েছে। তুষার চিতার মতো রেড পান্ডাও বিপন্ন প্রজাতি। তার উপরে চিড়িয়াখানার ঘেরা এলাকায় সন্তান হওয়ায় পশুপ্রেমী সংস্থাগুলো খুবই খুশি। তবে এই চিড়িয়াখানায় ঘেরা এলাকায় রেড পান্ডার জন্ম এই প্রথম নয়। ১৯৯৪ সালেই চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ এবং জু অথরিটি অব ইন্ডিয়া-র তত্ত্বাবধানে প্রথম বার তারে ঘেরা জঙ্গলের এলাকায় একটি রেড পান্ডার জন্ম হয়েছিল।
নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েকটি রেড পান্ডা এনে ‘প্রজেক্ট রেড পান্ডা’ চালু হয়েছিল দার্জিলিঙে। সেই সংখ্যা বেড়ে বেড়ে ৪০ অব্দি পৌঁছয়। অনেক রেড পান্ডা দেশ বিদেশেও পাঠানো হয়েছে। এখন দার্জিলিঙে ১৩টি মহিলা, ৮টি পুরুষ এবং দু’টি সদ্যোজাত শাবক রয়েছে।
বন দফতরের অফিসারেরা জানিয়েছেন, রেড পান্ডা মূলত পাহাড়ের আড়াই হাজার থেকে চার হাজার ফুটের মধ্যে ঘোরাফেরা করে। বাঁশঝাড়ে থেকে কচি বাঁশ পাতা, ফলমূল খেতে ভালবাসে এরা। তবে ধীরে ধীরে সংখ্যা কমতে থাকায় সারা বিশ্বে রেড পান্ডা বিপন্ন প্রাণী হিসাবে চিহ্নিত হয়। তার পরেই হিমালয়ের কোলে হলেও চিড়িয়াখানার ঘেরা এলাকায় তুষারচিতা, রেড পান্ডার মতো প্রাণীদের প্রজননে উদ্যোগী হয় কর্তৃপক্ষ। চিড়িয়াখানার অফিসাররা জানান, সাধারণত জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে মহিলা রেড পান্ডা গর্ভবতী হয়। একশো থেকে দেড়শো দিনের মাথায় মে-জুন মাসে, বর্ষার আগেই তারা প্রসব করে থাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy