অভিযোগের ন’দিনের মাথায় শুক্রবার আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিলেন ধূপগুড়িতে মারধর ও যৌন নিগ্রহের ঘটনায় জড়িত মূল অভিযুক্ত যুবক। তবে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা হওয়ার পরও ওই যুবক কীভাবে রাতারাতি জামিন পেল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, শাসকদলের চাপে পুলিশই কায়দা করে ওই যুবককে মামলা থেকে নিষ্কৃতি দিয়েছে। পুলিশের বক্তব্য, সিআরপিসি-র (ফৌজদারি কার্যবিধি) ৪১-এ ধারায় অভিযুক্ত যুবক তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে দেখা করার পর আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।
অভিযুক্তের পক্ষে এ দিন মামলা লড়েন জলপাইগুড়ি আদালতের আইনজীবী পৌলমী রায়। তিনি এ নিয়ে কিছু বলতে না চাইলেও আদালতে মামলাটির শুনানির সময় উপস্থিত অপর এক আইনজীবী বলেন, জামিন অযোগ্য ধারায় যে সমস্ত মামলায় সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত শাস্তির রায় আছে সেসব মামলায় তদন্তকারী অফিসার ইচ্ছে করলে অভিযুক্তকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন। তার মনে না হলে তিনি অভিযুক্তকে গ্রেফতার না-ও করতে পারেন। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। ওই মামলায় এ দিন সরকারি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মৃণ্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে অভিযুক্ত যুবক আদালতে মামলার তদন্তকারী অফিসার পরিমল বৈদ্যের স্বাক্ষরিত একটি নোটিস দেখানোয় সরকারি আইনজীবী এ দিন বিরোধিতার কোনও সুযোগই পাননি। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ডেন্ডুপ শেরপা বলেন, ‘‘আত্মসমর্পণকারী যুবকের নাম এফআইআরে ছিল। এর আগে পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এ ছাড়া এলাকায় অভিযুক্তদের খোঁজে পুলিশ রোজই হানা দিচ্ছে।’’ এ দিকে এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় যারা সাক্ষী ছিলেন তাঁদের কয়েকজনের নামেও নোটিস পাঠিয়েছে ধূপগুড়ি থানার পুলিশ।
যদিও নির্যাতিত যুবক ও তাঁর বোনেদের বক্তব্য, পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে টালবাহানা করায় সেই সুযোগে আইনের ফাঁক গলে অভিযুক্তরা পার পেয়ে যাচ্ছে। নির্যাতিত যুবক বলেন, ‘‘আমরা মূলত তিন জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছি। তাঁদের মধ্যে শুধু একজনের নাম জানতাম। ওই নামটি এফআইআরে উল্লেখ করেছিলাম। বাকিদের নাম জানি না।’’ ধূপগুড়ির সিপিএম নেতা অলোক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বোঝাই যাচ্ছে পুলিশ শাসক দলের চাপে পড়ে অভিযুক্তদের মামলা থেকে রেহাই পাইয়ে দিচ্ছে। তবে এরকম চলতে থাকলে আগামীদিনে পুলিশ প্রশাসনের উপর থেকে মানুষের ভরসা উঠে যাবে।’’
ধূপগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান এবং তৃণমূলের জেলা সম্পাদক রাজেশকুমার সিংহ বলেন, ‘‘পুলিশকে পুলিশের মত কাজ করতে দিলে অপরাধীরা অবশ্যই গ্রেফতার হবে। শুধু শুধু ঘটনাটিতে রাজনৈতিক রং লাগিয়ে কিছু সংবাদমাধ্যম এবং বিরোধীরা এটিকে বড় করে দেখাচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা করি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy