মারপিট: অয়ন্তিকার (ডান দিকে) সঙ্গে মারপিট সুশ্বেতার। নিজস্ব চিত্র
ছাত্রীদের মধ্যে মারপিট ঘিরে ধুন্ধমার হল শিলিগুড়ি মহিলা কলেজে। গোলমালের মধ্যে এসে এক ছাত্রীকে চড় মারার অভিযোগও উঠল কলেজেরই এক পড়ুয়ার বাবার বিরুদ্ধেও। শুক্রবার দুপুরে ডাবগ্রামে শিলিগুড়ি মহিলা কলেজের ঘটনা। অভিযুক্ত অজয় চক্রবর্তী সিটু নেতা হিসেবে পরিচিত। টিএমসিপি সমর্থক ওই ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে অজয়বাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। চড় মারার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যদিও আনন্দবাজার ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি।
শিলিগুড়ি মহিলা কলেজের ছাত্র সংসদ তৃণমূলের দখলে। বৃহস্পতিবার তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশের প্রস্তুতি মিছিলে কলেজের বেশ কিছু ছাত্রীকে জোর করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে এসএফআই। প্রতিবাদ জানিয়ে সেদিনই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগপত্র দেন কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী অনিন্দিতা চক্রবর্তী ও আরও কিছু এসএফআই সমর্থক। অনিন্দিতা অজয় চক্রবর্তীর মেয়ে। এই নিয়ে শুক্রবার সকাল থেকে কলেজে প্রতিবাদ জানাতে থাকে টিএমসিপি।
অভিযোগ, শুক্রবার অনিন্দিতা কলেজে পৌঁছলে তাঁকে দিয়ে জোর করে মুচলেকা লেখায় কলেজের টিএমসিপি নেতা-কর্মীরা। জোর কাউকে মিছিলে নিয়ে যাওয়া হয়নি, এরকম অভিযোগের কোনও প্রমাণ তাঁর কাছে নেই-এরকম জানিয়ে মুচলেকা দিতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ অনিন্দিতার। বোন কলেজে আটকে পড়েছে খবর পেয়ে দিদি অয়ন্তিকা তাঁকে নিতে কলেজে গেলে টিএমসিপির তিন ছাত্রী তাঁকে ঢুকতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। তখানেই টিএমসিপি নেত্রী সুশ্বেতা কর চৌধুরীর সঙ্গে অয়ন্তিকার মারপিট শুরু হয়। অভিযোগ, সুশ্বেতা ও কিছু টিএমসিপির সমর্থক অয়ন্তিকাকে মাটিতে ফেলে মারধর করে। ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন অজয়বাবু। তিনি সুশ্বেতাকে চড় মারেন বলে অভিযোগ।
সুশ্বেতার দাবি, ‘‘মেয়ে মুচলেকা দিয়েছিল। পরে দিদি আর বাবা এসে আমাদের উপর চড়াও হয়, চড় মারে। সুদিপ্তী চট্টোপাধ্যায় ও মন্দিরা দাসকেও মারধর করে।’’ যদিও অজয়বাবুর দাবি, তিনি কাউকে মারধর করেননি। তাঁর কথায়, ‘‘মারধর করব কেন? আমি কি আমার মেয়েকে মারের হাত থেকে বাঁচাতেও যেতে পারব না?’’ এ দিন অনিন্দিতাও থানায় কলেজের টিএমসিপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে অজয়বাবুকে থানায় নিয়ে যায়। টিএমসিপির দার্জিলিং জেলা সভাপতি জেলা সভাপতি নির্ণয় রায় বলেন, ‘‘সিপিএম আমল নেই, যে আমাদের ছাত্রীদের সিটু নেতার হাতে মার খেতে হবে। কেন বহিরাগতরা কলেজে ঢুকবে?’’
এসএফআইয়ের জেলা সভাপতি সাগর শর্মার দাবি, ‘‘অনিন্দিতাকে মারধর করে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে। অজয়বাবু মেয়েকে বাঁচাতেই গিয়েছিলেন।’’
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনেক সময় ফেল করা ছাত্রীরাও কলেজে আসেন। আলাদা করা যায় না। আমি অধ্যক্ষ এবং পরিচালন সমিতির কাছে পরিচয়পত্র এবং পোষাক চালু করার প্রস্তাব দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy