অাক্রান্ত: দিনহাটার ভেটাগুড়িতে বাড়িতে হামলাতেই জানলা ভাঙে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র
গোলমাল যেন থামছেই না দিনহাটায়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তার পরেও ফের তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠল দিনহাটার নানা জায়গায়। উদ্ধার হয়েছে বোমাও।
এ দিন দিনহাটার ২ ব্লকের কালমাটিতে সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়ায়। শুক্রবার মূল তৃণমূলের দু’পক্ষের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয় বলে অভিযোগ। আহতদের মধ্যে পাঁচজন দিনহাটা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ে কিছুদিন ধরেই দলের ব্লক সভাপতি ও বিধায়কের অনুগামীদের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ জমা পড়েনি।
পঞ্চায়েতের প্রধান সান্ত্বনা বর্মণের অভিযোগ, ‘‘চঞ্চল রায়ের নেতৃত্বে কিছু দুষ্কৃতী আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।’’ বামনহাট ২ অঞ্চলের মূল তৃণমূলের আহ্বায়ক, বিধায়ক উদয়ন গুহের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত, চঞ্চলকুমার রায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘গ্রাম পঞ্চায়েতের নানা কাজ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরে আমরা ব্লক প্রশাসনকে বৃহস্পতিবার ডেপুটেশন দিই। এরপর রাতেই প্রধানের লোকেরা এলাকার বেশ কয়েকজনের বাড়িতে হামলা এবং ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে।’’ এ দিন সকালে তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের কয়েকজনের বাড়িতে ভাঙচুর চলে ও মারধর করা হয় বলেও চঞ্চলের দাবি।
বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে দিনহাটা থানার খারিজাবালাডাঙাতেও। যুব ও মূল তৃণমূলের দ্বন্দ্বেই এই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। ভেটাগুড়ি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মন্তেশ্বর রায়ের অভিযোগ, রাত ১১টা নাগাদ ১৬টি বাইক ও একটি গাড়িতে একদল দুষ্কৃতী যুব তৃণমূলের নামে স্লোগান দিতে দিতে তাঁর বাড়িতে ঢুকে বোমাবাজি ও গুলি চালাতে শুরু করে। বাড়িতে ভাঙচুরও করা হয়। আরও তিন কর্মীর বাড়ি ও বাজারের একটি দোকান ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ।
যুব তৃণমূলের দিনহাটা ১ নম্বর ব্লকের সাধারণ সম্পাদক অর্জুন চক্রবর্তী বলেন, “ওই ঘটনার সঙ্গে যুব সংগঠনের কেউ জড়িত নয়।” দিনহাটা থানার আইসি সঞ্জয় দত্ত বলেন, “বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”
দিনহাটারই পেটলায় মিলেছে ৯টি তাজা বোমা। শুক্রবার দুপুরে দিনহাটা থানার পেটলা থেকে একটি ব্যাগ ভর্তি ওই বোমা উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই এলাকার বাসিন্দা দীনবন্ধু রায়ের বাড়ির পিছন দিকে একটি পরিত্যক্ত ঘরের কাছে তা রাখা ছিল।
এদিন ওই ঘরের কাছে ব্যাগ দেখতে পেয়ে সন্দেহ হয় পরিবারের সদস্যদের। ব্যাগের ভেতরে বোমা রাখা দেখে তাঁরা বিষয়টি জানিয়ে পুলিশে খবর দেন। এর আগেও দিনহাটার একাধিক স্থানে বোমা উদ্ধার হয়েছে। গোসানিমারিতে মাঠের মধ্যে পড়ে থাকা বোমাকে বল ভেবে খেলতে গিয়ে জখম হয় ৩ জন শিশু।
এ দিনের ঘটনা নিয়ে বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছেন, রাজ্যের শাসক দলের কর্মী-সমর্থকরা দিনহাটার একাধিক এলাকায় বোমা-গুলি মজুত করে রেখেছেন। পেটলাতেও একই ভাবে তা মজুত করে রাখা হয়েছে। তার জেরেই এই ঘটনা ঘটে। ব্যাপারে পুলিশকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার দাবি তুলেছেন তাঁরা। সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া বলেন, “বিরোধীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। ওই ঘটনার পেছেন দুষ্কৃতীদের হাত রয়েছে। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy