জমা জল। নিজস্ব চিত্র
রোগ প্রতিরোধের কাজ যথাযথ না-হওয়াতেই শিলিগুড়ি শহর এবং গ্রামাঞ্চল, দুই ক্ষেত্রেই ডেঙ্গির দাপট বাড়ছে বলে অভিযোগ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের। বৃহস্পতিবার জেলাশাসকের নির্দেশে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে মহকুমা পরিষদে বিশেষ জরুরি বৈঠক হয়। বৈঠকের পরেই উদ্বেগ এবং অভিযোগের কথা জানান মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য। রোগ প্রতিরোধের কাজে নানা ক্ষেত্রেই খামতি থাকছে জানিয়ে ওই কাজে জোর দিতে নির্দেশ দেন। এ দিন বৈঠকে জেলাশাসক নিজে ছিলেন না।
গ্রামাঞ্চলে মশা মারতে ‘ফগিং’-এর কাজ কার্যত হচ্ছে না বলে অভিযোগ। পুর এলাকাতেও যে স্বাস্থ্যকর্মীরা সমীক্ষা করছেন এবং যাঁরা ভেক্টর কন্ট্রোল দলের হয়ে কাজ করছেন, তাঁদের মধ্যে সমন্বয় থাকছে না। গ্রামাঞ্চলে ভিসিটি’র কাছে ফগিং-যন্ত্র নেই। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে চাইলে তবে তা মিলবে বলে জানানো হয়েছে। তাতে সমস্যা বেড়েছে বই কমেনি।
শিলিগুড়ি পুরসভা এবং মহকুমা পরিষদ কর্তৃপক্ষের তরফে ফগিং মেশিন, তেল স্বাস্থ্য দফতর বা রাজ্য সরকারের তরফে যথাযথ সরবরাহ না করার অভিযোগ উঠেছে। তাদের আরও দাবি, ডেঙ্গি প্রতিরোধে সরঞ্জাম কেনা ও প্রচারের কাজে রাজ্য সরকার পুরসভাকে নামমাত্র টাকা দিয়েছে। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ সেই টাকাও পায়নি বলে অভিযোগ। বুধবার মাটিগাড়ায় ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছেন সভাধিপতি তাপস সরকার। ওই ব্লকে আক্রান্তের সংখ্যা একশো। বৈঠকে আঠেরোখাই, মাটিগাড়া-১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ অভিযোগ তুলেছেন বারবার ফগিংয়ের যন্ত্র চেয়েও মিলছে না। তাতে কার্যত ফগিং বন্ধ। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, এ সময় পূর্ণাঙ্গ মশার দাপটই বেশি। যথাযথ ফগিংয়ের ব্যবস্থা করতেই হবে।
সভাধিপতি বলেন, ‘‘প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে স্প্রে করার জন্য অন্তত ২টি করে মেশিন থাকলেও ফগিংয়ের জন্য কোনও যন্ত্র নেই। ব্লক থেকে চাইতে হয়। অভিযোগ, বারবার বলা হলেও অনেক ক্ষেত্রেই মেশিন মিলছে না। এ দিকে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে।’’ পুরসভার তরফে স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ শঙ্কর ঘোষ জানান, তাঁরাও প্রয়োজন মতো ফগিংয়ের মেশিন পাচ্ছেন না। তাতে সমস্ত ওয়ার্ডে নিয়ম মেনে প্রতিদিন দুই বেলা ফগিং করা সম্ভব হচ্ছে না। সাফাই কর্মী কম আসছে।
মহকুমাশাসক সুমন্ত সহায়, ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজের নোডাল অফিসার, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকরা, মহকুমা পরিষদের এইও প্রেমকুমার বরদেওয়া, পুরসভার সচিব সপ্তর্ষি নাগ, পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ অনেকেই এই বৈঠকে ছিলেন। দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘কয়েক সপ্তাহ ধরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। নিয়ন্ত্রণে জোর দিতে বলেছি। অনেক ক্ষেত্রেই ঠিক মতো কাজ হচ্ছে না।’’ জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিং জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ১০২৯ জন। তার মধ্যে পাহাড়ে ৫৩ জন, দার্জিলিং জেলার অধীনে থাকা ৩৩টি ওয়ার্ডে ৮১৮ জন এবং শিলিগুড়ি মহকুমার চারটি ব্লকে ১৫৮ জন। জলপাইগুড়ি জেলার অধীনে থাকা শিলিগুড়ি পুরসভার বাকি ১৪টি ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা ২২২ জন। ইতিমধ্যে বেসরকারি হিসেবে ডেঙ্গিতে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy