Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

সন্ধেতেই বন্ধ হায়াতভবন

মাথা নিয়েই এখন মাথাব্যথা শুরু হল মালদহের কংগ্রেসে।

চিন্তিত: মুহুর্মুহু ফোন। ব্যস্ত ইশা খান চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র

চিন্তিত: মুহুর্মুহু ফোন। ব্যস্ত ইশা খান চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র

জয়ন্ত সেন 
মালদহ শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:৩৪
Share: Save:

মাথা নিয়েই এখন মাথাব্যথা শুরু হল মালদহের কংগ্রেসে।

সোমবার নবান্নে গিয়ে মালদহ জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী মৌসম নুর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরই লোকসভা ভোটের ঠিক প্রাক্কালে দল কে সামলাবে, তা নিয়েই বড়সড় প্রশ্ন উঠে গেল জেলা কংগ্রেসে। জেলা কংগ্রেসের এক সাধারণ সম্পাদক হেমন্ত শর্মাকেও এ দিন মৌসমের সঙ্গে নবান্নে দেখা গিয়েছে। সেটাও ধাক্কা বলে মনে করছে কংগ্রেস। কারণ, এযাবৎকালে জেলায় দল পরিচালনার ক্ষেত্রে মৌসমের অন্যতম সহযোগী ছিলেন তিনি।

বরকত গনিখান চৌধুরীর বোন রুবি নুরের মৃত্যুর পর ২০০৮ সালে প্রথম সুজাপুর বিধানসভা থেকে নির্বাচিত হয়ে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় মৌসমের। এক বছরের মধ্যেই উত্তর মালদহ লোকসভা আসন থেকে জিতে প্রথম বারের জন্য সাংসদ হন তিনি। ২০১৪ সালে দ্বিতীয় বার ওই একই আসনে জেতেন তিনি। তার আগে অবশ্য ২০১৩ সালে মামা আবু হাসেম খান চৌধুরী তথা ডালুকে (ইশার বাবা) সরিয়ে জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী হয়েছেন মৌসম।

মৌসমের দলবদলের খবর কতটা অভিঘাত তৈরি করেছে জেলা কংগ্রেস দফতরে, তা স্পষ্ট হয়ে গেল সন্ধ্যাবেলাতেই। সাড়ে সাতটা নাগাদ দেখা গেল হায়াত ভবন তালা বন্ধ! গনিখানের জেলা হিসেবে এত দিন যে মালদহ ছিল কংগ্রেসের গড়, সোমবার সন্ধ্যায় সেখানেই নেতৃত্বের প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।

মৌসম শুধু দল বদলই করলেন না, একই সঙ্গে ডাক দিলেন কংগ্রেস কর্মীদেরও। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপির বিরুদ্ধে দিদি (মমতা) জোরালো ও আগ্রাসী ভাবে লড়ছেন। তাঁর হাত শক্ত করতেই তৃণমূলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।’’ একই সঙ্গে বলেন, ‘‘মালদহের কংগ্রেস কর্মীদেরও দিদির সঙ্গে আসার জন্য ডাক দিচ্ছি।’’ তাঁর কথায়, যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৭ সালে মালদহের ভয়াবহ বন্যায় এসে পাশে দাঁড়িয়েছেন, যিনি আফরাজুল হত্যার খবর পেয়ে মন্ত্রীদের পাঠিয়েছেন কালিয়াচকের গ্রামে, তাঁর সঙ্গে কেন জোট বাঁধায় কেন সহযোগিতা করবে না প্রদেশ কংগ্রেস? এই সময়ে এক ধাপ এগিয়ে তিনি গনিখান চৌধুরীর সঙ্গে মমতার তুলনা করে বলেন, ‘‘দু’জনই মালদহের ভালর জন্য কাজ করেছেন।’’

এই মুহূর্তে কে হবেন জেলা সভাপতি এবং হাল ধরবেন, তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়ে গেল দলের অন্দরে। দলের একাংশ চাইছেন, ফের ডালুবাবুকেই ফের সভাপতির পদে ফিরিয়ে আনা হোক। যদিও দলের অন্যতম জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা মালদহের বিধায়ক অর্জুন হালদার বলেন, ‘‘এটা ঠিক করবে দলের হাইকম্যান্ড।’’

মৌসমের দলবদল কতটা ধাক্কা দেবে ভোটবাক্সে? কোতোয়ালি পরিবারের সদস্য তথা সুজাপুরের বিধায়ক ইশা খান চৌধুরী বলেন, ‘‘কংগ্রেস ছেড়ে যাঁরা গিয়েছেন মানুষ তাঁদের শিক্ষা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হবে না। মৌসমের এই সিদ্ধান্ত যে ভুল তা আগামী দিনে মানুষ জবাব দেবে।’’

বিজেপিকে ঠেকাতে তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা করে যে ত্রিশঙ্কু পঞ্চায়েত বোর্ডগুলি গঠন করা হয়েছিল তার কী হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক মোস্তাক আলম অবশ্য বলেন, ‘‘একবার বোর্ড গঠন হলে আড়াই বছর আগে তা ভাঙার কোনও আইন নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Congress Malda Mausam Noor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE