Advertisement
০২ মে ২০২৪

পুজোয় কাঁটা কি বৃষ্টি

সব মিলিয়ে শরৎয়ে বৃষ্টিই যেন উদ্যোক্তাদের কাছে ‘অসুর’ হয়ে উঠেছে। অভিযোগ, শহরের দেবীবাড়ি, নিউটাউন, স্টেশন রোড, গোলবাগান, বাদুড়বাগানের মতো বেশ কিছু এলাকার নিকাশি বেহাল। শনিবারে একাধিক রাস্তার জল জমে যাওয়া ওই চিন্তা বাড়িয়েছে।

মোড়ক: বৃষ্টি ঠেকাতে প্লাস্টিকই ভরসা। জলপাইগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র

মোড়ক: বৃষ্টি ঠেকাতে প্লাস্টিকই ভরসা। জলপাইগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:৫৬
Share: Save:

কোথাও মণ্ডপের চত্বর জলে ভাসল, কোথাও আবার ভাসল লাগোয়া রাস্তা। শহরের অন্য একাধিক রাস্তাও বৃষ্টির জলে ছোট নদীর মতো ডুবে থাকল। মহালয়ার দিনে তুমুল বৃষ্টির জেরে এমনই ছিল কোচবিহারের বিস্তীর্ণ এলাকার ছবি।

পুজোর মুখে এই পরিস্থিতিতে উদ্যোক্তাদের রাতের ঘুব উবে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। চিন্তা বেড়েছে মণ্ডপ তৈরির কাজে যুক্ত শিল্পী ও ডেকরেটর কর্মীদের। ২ অক্টোবর পর্যন্ত জেলায় মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার পূর্বাভাস থাকায় তাঁদের উদ্বেগ আরও বেড়েছে। তাই পুজোর দিনগুলিতেও বৃষ্টির আশঙ্কা নিয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছেন না অনেকেই। ত্রিপলের বদলে টিনের ছাউনি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেশ কয়েকটি পুজো কমিটি। তারপরেও মণ্ডপের কাজ শেষ করা নিয়ে উদ্বেগ থাকছেই। বৃষ্টির জেরে চিন্তার কথা জানিয়েছেন মৃৎশিল্পীরাও।

উদ্যোক্তাদের সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহারে ফি বছর গড়ে প্রায় সাড়ে সাড়ে ৩ হাজার মিমি বৃষ্টিপাত হয়। এ বছর ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ২৭৩২ মিমি। সেই হিসেবে প্রায় ৮০০ মিমি বৃষ্টিপাত বাকি রয়েছে। তার ওপর উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রামীণ মৌসম সেবা কেন্দ্রের পূর্বাভাস অনুযায়ী ২ অক্টোবর পর্যন্ত মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ঝুঁকি নিতে চাইছেন না তাঁরা। নিউটাউন ইউনিটের কর্তা অভিষেক সিংহরায় বলেন, “আমাদের মণ্ডপে মাটির শৈল্পিক কাজ রয়েছে। এমন বৃষ্টি হলে তা ধুয়ে যাবে। তাই আর কোনও ঝুঁকি না নিয়ে ত্রিপলের বদলে টিনের ছাউনি করার উদ্যোগ নিতে হয়েছে। এতে খরচ বেড়ে যাবে। সময়মতো কাজ সম্পন্ন করাটাও বড় চ্যালেঞ্জের।” শান্তিকুটির ক্লাবের সম্পাদক রাকেশ চৌধুরী বলেন, “ত্রিপলের ছাউনির বদলে টিনের শেড করার কথা ভাবছি।”

মাথায় হাত পড়ার উপক্রম মণ্ডপের শিল্পী থেকে ডেকরেটর কর্মীদের অনেকেরই। কোচবিহারের এক মণ্ডপ শিল্পী শঙ্কর সাহা বলেন, “রবীন্দ্রনগরের একটি মণ্ডপের পুরো রং ধুয়ে গিয়েছে। মহালয়াতে এত ভারী বৃষ্টি গত পাঁচ বছরে হয়নি। এরকম বৃষ্টি হলে মণ্ডপের কাজ সম্পন্ন করাটাই মুশকিল হয়ে পড়বে।” তিনি জানান, পুজোর সময় গত তিন-চার বছরে বৃষ্টি হয়নি। এ বার সেই চিন্তাও বাড়ছে। কুমোরটুলি জুড়েও ওই এক উদ্বেগের ছাপ। কয়েকজন শিল্পী বলেন, ‘‘হাতে সময় নেই। কিন্তু প্রতিমা শুকনো যাচ্ছে না। জানিনা শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়াবে!’’

সব মিলিয়ে শরৎয়ে বৃষ্টিই যেন উদ্যোক্তাদের কাছে ‘অসুর’ হয়ে উঠেছে। অভিযোগ, শহরের দেবীবাড়ি, নিউটাউন, স্টেশন রোড, গোলবাগান, বাদুড়বাগানের মতো বেশ কিছু এলাকার নিকাশি বেহাল। শনিবারে একাধিক রাস্তার জল জমে যাওয়া ওই চিন্তা বাড়িয়েছে। পুজোর দিনে বৃষ্টি হলে অনেক এলাকায় জল, কাদা না পেরিয়ে মণ্ডপে যাওয়া হবেনা। পুরসভার দাবি, নিকাশির হাল ফেরাতে নানা পদক্ষেপ হয়েছে। গোটা পরিস্থিতি নজরে রাখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja Durga Pujia Weather
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE