শোকার্ত: গাজলের কদমতলিতে পরিজনেরা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
জমি ভাগাভাগি নিয়ে পারিবারিক বিবাদের জেরে এক ব্যক্তিকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল সৎ দাদা এবং তার ছেলেদের বিরুদ্ধে। রবিবার সকালে মালদহের গাজলের কদমতলি এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
মৃতের আরও দুই ভাইকে হাঁসুয়া ও শাবল দিয়ে কুপিয়ে খুনের চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম আনারুল হক (৩৫)। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। বাকি দুই ভাই মনিরুল ইসলাম ও কবিরুল ইসলামের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাঁদের মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর দুপুরেই তাদের স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতায়। ঘটনার পরই অভিযুক্ত আজিজুর হক ও তার সঙ্গীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। গাজলের সার্কল ইনস্পেক্টর আত্রেয়ী সেন বলেন, ‘‘পারিবারিক বিবাদের জেরে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত তফজ্জল হকের প্রথম পক্ষের চার ছেলে, এক মেয়ে ও দ্বিতীয় পক্ষের চার ছেলে ও তিন মেয়ে। ছেলেরা প্রত্যেকেই পাঁচ বিঘে করে জমি পাবে বলে বেঁচে থাকতেই মৌখিক ভাবে জানিয়েছিলেন তিনি। জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ারও কথা বলেছিলেন তফজ্জল। বছর ১৫ আগে আচমকাই তিনি মারা যান। দ্বিতীয় পক্ষের ভাইয়েরা নাবালক হওয়ায় তাদের চার ভাইয়ের জমি দেখভাল করতেন প্রথম পক্ষের বড়দাদা আজিজুর হক। কিন্তু পরে সেই জমি সৎভাইদের দিতে আজিজুর অস্বীকার করেন। বিষয়টি নিয়ে গ্রাম্য সালিশিও বসে। সেখানে আনারুলদের জমি তাঁদের ফিরিয়ে দিতে বলা হয়। গত শনিবার থেকে জমির মাপজোকও শুরু হয়।
অভিযোগ, এ দিন বাড়ি ফেরার সময় রাস্তায় পরিকল্পিত ভাবে আজিজুর ও তার পাঁচ ছেলে আচমকাই হাঁসুয়া, শাবল নিয়ে আনারুল ও মনিরুলের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। হাঁসুয়ার এলোপাথারি কোপে ঘটনাস্থলেই মারা যান আনারুল। মনিরুলের নাক কেটে দেওয়া হয়। ছুটে আসেন তাঁদেরই এক ভাই কবিরুল ইসলাম। তাঁকেও কোপানো হয়। তিনজন লুটিয়ে পড়তেই অভিযুক্ত বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে সপরিবারে এলাকা ছেড়ে পালায়। রত্তাক্ত দুই ভাইকে বাসিন্দারা উদ্ধার করে গাজল হাসপাতালে ভর্তি করান। আলাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ ফারুক বলেন, ‘‘জমির জন্য এমন খুনোখুনি, ভাবতেই পারছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy