তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি’র ডাকে চা শ্রমিকদের স্বার্থে প্রকাশ্য সমাবেশের আয়োজন ঘিরে তৃণমূলের মধ্যেই চাপানউতোর শুরু হয়েছে।
আজ, বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির বাঘা যতীন পার্কে ওই সমাবেশ হওয়ার কথা। একপক্ষ মনে করছেন, দলনেত্রী যখন সব চা শ্রমিক সংগঠনগুলিকে এক ছাতার তলায় আনতে চাইছেন তখন এ ধরনের সমাবেশ করলে অন্য রকম বার্তা যেতে পারে। অন্য পক্ষ অবশ্য মনে করছেন কোনও সমস্যা নেই। এই ঠেলাঠেলির মধ্যে সমাবেশে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের অন্যতম সুব্রত বক্সি অবশ্য আসছেন না। দোলা সেনের আসার কথা থাকলেশেষ পর্যন্ত তিনি আসেন কি না সেটাই দেখার।
সমাবেশ নিয়ে প্রশ্ন ওঠার কারণ, ইতিমধ্যেই চা বলয়ে তৃণমূলের একাধিক সংগঠন গড়ে ওঠায় এবং তাদের বিভিন্ন মতামত নিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই ঐক্যমত হচ্ছে না। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী শক্তি বিশেষ করে মজুরি চুক্তি নিয়ে জয়েন্ট ফোরাম চা শ্রমিক মহলের একটা বড় অংশের সমর্থন আদায় করেছে। ইতিমধ্যেই চা বলয়ে দলের একাধিক সংগঠনকে এক ছাতার তলায় এনে একটি সংগঠন রাখার কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীও। দলের এক শীর্ষ নেতাকে সে ব্যাপারে দায়িত্বও দিয়েছেন। আইএনটিটিইউসি চা শ্রমিকদের স্বার্থ নিয়ে যে বৈঠক ডাকা হয়েছে তাতে মতানৈক্য বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন চা বলয়ের সঙ্গে যুক্ত তৃণমূলের নেতৃত্বের একাংশ।
বর্তমানে চা বলয়ে তৃণমূলের তিনটি সংগঠন রয়েছে। একটি দোলা সেনের নেতৃত্বে বিভিন্ন চা বাগানে আইএনটিটিইউসি’র সংগঠন। অপর দুটি তৃণমূল টি প্ল্যান্টেশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন এবং তরাই ডুয়ার্স প্ল্যান্টেশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন। এক ছাতার তলায় আনার প্রক্রিয়া যখন চলছে তখন আইএনটিটিইউসি’র ডাকা ওই সভা সেই প্রক্রিয়া ব্যহত করবে বলেই অনেকে মনে করছেন। তা ছাড়া জয়েন্ট ফোরামের যে দাবি চা শ্রমিকদের জন্য সরকারি হারে ‘ন্যুনতম মজুরি’ সেই দাবিকে প্রাধান্য দিয়েই সভা ডাকা হয়েছে। আইএনটিটিইউসি’র দার্জিলিং জেলা সভাপতি অরূপরতন ঘোষ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী এক ছাতার তলায় তৃণমূলের বিভিন্ন চা শ্রমিক সংগঠনগুলিকে আনার যে প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তা এই সভায় ব্যহত হওয়ার ব্যাপার নেই। আমরা সমস্ত সংগঠনের প্রতিনিধিদেরকেই আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।”
অরূপবাবুদের দাবি, জয়েন্ট ফোরাম ন্যুনতম মজুরির যে দাবি তুলছে, তা প্রথমে তারাই জানিয়েছিলেন। তবে তা বাস্তবায়িত হতে সময় লাগতে পারে বলে শ্রমিকরা যাতে তার মধ্যে বিপাকে না পড়েন সে জন্য তিন বছরের মজুরি চুক্তি করার কথা জানানো হয়েছিল। তাতে প্রতি বছর ২৩ টাকা করে মজুরি বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। তার মধ্যে ন্যুনতম মজুরি কার্যকর হলে ওই চুক্তি আর মানা হবে না। তাদের অভিযোগ, এত দিন ক্ষমতায় থেকেও বাম সরকার চা বাগানের শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে পারেনি। এই সরকারের আমলেই ২৮ টাকা এক বারে বাড়ানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy