Advertisement
১১ মে ২০২৪

ডাক্তারি পরীক্ষা হল না ছাত্রীর

ফেসবুকে ছাত্রীর ভুয়ো প্রোফাইল তৈরি করা ও এমএমএস ছড়ানোর হুমকির ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে ডেকে দু’ঘন্টা বসিয়ে রেখেও ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়নি বলে অভিযোগ করলেন ওই ছাত্রী। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে অভিযোগ জানাতে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারের কাছে গিয়েছিলেন তাঁরা।

সংগ্রাম সিংহ রায়
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:০১
Share: Save:

ফেসবুকে ছাত্রীর ভুয়ো প্রোফাইল তৈরি করা ও এমএমএস ছড়ানোর হুমকির ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে ডেকে দু’ঘন্টা বসিয়ে রেখেও ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়নি বলে অভিযোগ করলেন ওই ছাত্রী। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে অভিযোগ জানাতে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারের কাছে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেখানেও দুপুর থেকে সন্ধে পর্যন্ত বসিয়ে রাখার পর তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি পুলিশ কমিশনার জগমোহন, এমনই অভিযোগ ক্ষুব্ধ ছাত্রীর। যদিও শিলিগুড়ি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কর্তারা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। শুক্রবার ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হবে বলেও জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ কমিশনারকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

ওই ছাত্রীর দাবি, “এদিন ডাক্তারি পরীক্ষাও হবে বলে পুলিশ জানিয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি। কমিশনারের সঙ্গে দেখা করতে গেলেও উনি দুপুর ১২ টা থেকে বসিয়ে রেখে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত দেখা করেননি। আমাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে না। তদন্ত কী এগিয়েছে, তা জানতে চাই।” শিলিগুড়ি পুলিশের এসিপি (ডিডি) তপন আলো মিত্র অভিযোগ ঠিক নয় বলে জানান। তিনি বলেন, “ওই ছাত্রীর জবানবন্দি ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে রেকর্ড করা হয়েছে। শুক্রবার ডাক্তারি পরীক্ষাও হবে। অভিযুক্ত ছাত্রকে জেরা করা হচ্ছে।” তবে ওই ছাত্র তৃণমূল সমর্থক শাহবাজ আলম জেরার মুখে অপরাধ স্বীকার করেছে বলেও পুলিশের দাবি। ফেসবুকে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি, হুমকি দেওয়ার অভিযোগ স্বীকার করলেও এমএমএস বানানোর কথা স্বীকার করেনি অভিযুক্ত বলে জানা গিয়েছে। চারদিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। শাহবাজের মা নাজিমুন বেগম দাবি করেন, তাঁর ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে।

ফেসবুকে এক ছাত্রীর ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি করে তাঁর ফোন নম্বর দিয়ে তাঁকে ফোন করার জন্য আবেদন জানানোর অভিযোগ ওঠে এক তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সমর্থকের বিরুদ্ধে। তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে না করলে ভুয়ো এমএমএস বানিয়ে তা ছড়িয়ে দেবে বলেও হুমকি দেয় আশরফনগরের বাসিন্দা শাহবাজ বলে অভিযোগ ওই ছাত্রীর। গত মঙ্গলবার ওই ছাত্রীকে থানায় অভিযোগ করার জন্য মারধর করে ওই ছাত্র বলে অভিযোগ হয়েছে। তাকে গ্রেফতার করে নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়ির পুলিশ। পরে প্রধাননগর থানার পুলিশের হাতে তাকে তুলে দেওয়া হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২০১৪ এর এপ্রিল থেকে বিভিন্ন নম্বর থেকে ওই ছাত্রীর মোবাইলে ফোন আসে। ফোন করে অশ্লীল কটূক্তি করা হয়। গত জানুয়ারিতে তিনি জানতে পারেন, সানা খান নামে ফেসবুকে একটি প্রোফাইলে তৈরি করা হয়েছে। তাতে তাঁর ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে। লেখা রয়েছে, “আমাকে ফোন করুন।” অ্যাকাউন্টটি তৈরি হয়েছে এপ্রিল মাসে। তিনি প্রধাননগর থানায় ১৭ জানুয়ারি সমস্ত জানিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তের সঙ্গে তাঁর ২০১২ এর গোড়ায় আলাপ ও ক্রমে ঘনিষ্ঠতা বলে জানা গিয়েছে। কয়েক মাস পর থেকে শাহবাজের আচার আচরণ পছন্দ না হওয়ায় সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী ছিলেন না তিনি বলে জানান ওই ছাত্রী।

পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন রাজ্য মহিলা কমিশনের সদস্য তৃণমূলের জ্যোৎস্না অগ্রবাল। তিনি বলেন, “মেয়েটির সঙ্গে কথা বলব। পুলিশ কমিশনারকেও জানাব।” দার্জিলিং জেলা লিগাল এড ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকারও বলেন, “মেয়েটি এমনিতেই মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত। পুলিশের উচিত বিষয়টিকে সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE