ফালাকাটা কলেজে টিএমসিপি-এবিভিপির মধ্যে উত্তেজনা। নিজস্ব চিত্র।
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আগে মনোনয়নপত্র তোলার প্রথম দিন রণেক্ষেত্রের চেহারা নিল আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটা ও কামাখ্যাগুড়ি কলেজ। টিএমসিপি-র সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) নেতা কর্মীদের। এমনকি পুলিশের সামনেই লাঠিসোটা নিয়ে মারামারি হয়। মোট সাত জন জখম হয়েছেন। তার মধ্যে এক জন কামাখ্যাগুড়ি কলেজের এক পড়ুয়ার অভিভাবক।
ফালাকাটা কলেজে এবিভিপির চার সমর্থককে মারধর করা হয়। তাদের সমর্থক তিন ছাত্রীকে টিএমসিপি সমর্থকেরা অপহরণের চেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ। বাধা দিতে গেলে একজন এবিভিপি সমর্থককে মারধর করা হয়।
ওই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বেলা দেড়টা থেকে টানা দু’ঘণ্টা ফালাকাটা নতুন চৌপথির পাশে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান এবিভিপির সমর্থক ও কর্মীরা। টিএমসিপির বিরুদ্ধে দাদাগিরি ও পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে ফালাকাটা কলেজ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবিভিপি।
৩০ জানুয়ারি আলিপুরদুয়ার জেলার মোট সাতটি কলেজে ভোটের দিনক্ষণ ঠিক হয়। মনোনয়ন তোলার জন্য দু’দিনের দিনক্ষণ ঠিক হয়। মঙ্গলবার ছিল প্রথম দিন।
এ দিন বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ প্রথম সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে কামাখ্যাগুড়ি কলেজে। অভিযোগ, এবিভিপি-র সমর্থক পড়ুয়ারা মনোনয়নপত্র তোলার পরে তা ছিড়ে দেয় টিএমসিপির লোকজন। দু’পক্ষের মধ্যে লাঠিসোটা নিয়ে মারামারি শুরু হয়। ঢিল ছোড়াছুড়ি চলে। চার জন এবিভিপি সমর্থক ও দুই টিএমসিপি সমর্থক জখম হন।
আলিপুরদুয়ার জেলা বিদ্যার্থী পরিষদের সভাপতি গুণধর দাস বলেন, “পরিকল্পিতভাবে টিএমসিপি আমাদের আক্রমণ করেছে। পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল।”
টিএমসিপি-র অনিরুদ্ধ বিশ্বাসের পাল্টা দাবি, বহিরাগতদের দিয়ে কলেজে হামলা চালায় বিজেপি-র ছাত্র সংগঠন। আমাদের দুই সমর্থক জখম হয়েছে।
অন্য দিকে, ফালাকাটা কলেজে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে কলেজ মোড়ে টিএমসিপি কর্মীরা তাদের বাধা দেয় বলে অভিযোগ। তারা তিন ছাত্রীকে অপহরণেরও চেষ্টা করে। এবিভিপি সমর্থকদের মারধর করা হয়। ঘটনার পর ফালাকাটা নতুন চৌপথীর পাশে জাতীয় সড়ক অবরোধে নামে এবিভিপি। সংগঠনের ফালাকাটা ব্লকের আহ্বায়ক মন্মথ কর বলেন,“এই ঘটনার প্রতিবাদে আমরা ফালাকাটা কলেজ নির্বাচনে না লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” ফালাকাটার টিএমসিপি নেতা গদাই দে অবশ্য বলেন, “বহিরাগতরা কলেজে ঢুকতে গেলে বাধা দেওয়া হয়।”
জেলা এসএফআই সম্পাদক সফিকুল ইসলাম জানান, বীরপাড়া কলেজে আমরা ১৫টি মনোনয়ন তুলতে পেরেছি। বাকি সব জায়গায় আমাদের বাধা দেওয়া হয়। গত বার এ ভাবেই টিএমসিপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে।
বেলা ১২টা থেকে দুপুর দু’টো পর্যন্ত কলেজগুলিতে মনোনয়ন তোলার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হলেও নির্ধারিত সময়ের আগেই আলিপুরদুয়ার বিবেকানন্দ কলেজের দরজা জোর করে বন্ধ রাখার অভিযোগ ওঠে টিএমসিপির বিরুদ্ধে। এই নিয়ে গোলমাল ছড়ায়। তবে মারামারি হয়নি।
আলিপুরদুয়ার কলেজের মোট আসন সংখ্যা ৪৬ টি। এখনও পর্যন্ত ৭৭টি মনোনয়নপত্র তোলা হয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল অবশ্য কোনও গোলমাল হয়নি বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “কোথাও বড় সংঘর্ষ হয়নি। সর্বত্র পর্যাপ্ত পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। নিরপেক্ষ ভাবে পুলিশ কাজ করছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy