ভারতীয় পণ্য বোঝাই একটি ট্রাকে বোমা ছোড়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে তেতে ওঠে বাংলাদেশ সীমান্তের মহদিপুর এলাকা। তার জেরেই ব্যাহত হল সীমান্তের বাণিজ্য।
রবিবার রাতে বাংলাদেশের পানামা বন্দরে একটি ট্রাকে দুষ্কৃতীরা বোমা ছুড়লে আগুন ধরে যায়। ওই ঘটনার পরেই ক্ষতিপুরণ ও নিরাপত্তার দাবিতে ট্রাক মালিক ও চালকরা সোমবার সকাল থেকে মহদিপুর সীমান্তে আমদানি-রফতানি বন্ধ করে দেন। এর জেরে দুপুর পর্যন্ত দাঁড়িয়ে যায় প্রায় ১০০ ট্রাক। পরে দুই দেশের কর্তারা সীমান্তে বৈঠক করেন। বাংলাদেশের তরফে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেওয়া হলে বেলা আড়াইটে নাগাদ ফের আমদানি-রফতানি শুরু হয়।
ব্যবসায়ী সংগঠন সূত্রের খবর, এ দিন রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ বাংলাদেশের পানামা বন্দরে দাঁড়িয়ে ছিল একটি ভুট্টা বোঝাই ট্রাক। আচমকা দুষ্কৃতীরা ওই ট্রাকটি লক্ষ করে বোমা মারে বলে অভিযোগ। সঙ্গে সঙ্গেই আগুন ধরে যায় ট্রাকে। ওই সময় গাড়িতে ছিলেন না চালক। অন্য গাড়ির চালকরা ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই মালদহের মহদিপুর সীমান্তে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির চালকরা আমদানি-দফতানি বন্ধ করে দেন।
চলতি মাসের ৪ তারিখ বিহারের গোলাপবাগ থেকে ভুট্টা বোঝাই করে বাংলাদেশে যায় ট্রাকটি। গাড়ির মালিক জসবিন্দর সিংহ কলকাতার দমদমের বাসিন্দা। গাড়ির চালক সারিফুল শেখ ইংরেজবাজারের কাঞ্চনটারের বাসিন্দা। ঘটনার পরে ক্ষতিপূরণ ও নিরাপত্তার দাবিতে সরব হন তাঁরা।
ক্ষতিগ্রস্থ গাড়ির মালিক জসবিন্দর বলেন, “রোজই পণ্য বোঝাই ট্রাক যায়। যে ভাবে দুষ্কৃতীরা গাড়িটিতে বোমা মেরে পুড়িয়ে দিয়েছে তাতে চালকরা নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন। পানামা বন্দরে বহু চালককে দিনের পর দিন থাকতে হয়। আমরা চাই ওই বন্দরের নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হোক।” ট্রাকচালক রাজু শেখ, দিলবাপ রহমানরা জানান, বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হলেও মাসের পর মাস বন্দরে থাকতে হয়। সে জন্য নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি তুলেছেন তাঁরা।
পরিস্থিতি সামাল দিতে সীমান্তে জরুরি বৈঠক করেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওর্য়াড এজেন্টের সম্পাদক পলাশ শেখ, পানামা বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার প্রবীর কুমার শীল, শিবগঞ্জ থানার এসআই মহফুজ শেখ এবং বিজিবির প্রতিনিধিরা এই বৈঠকে যোগ দেন। এপার বাংলার পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন মহদিপুর এক্সপোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সমীর ঘোষ, কোষাধ্যক্ষ ফজলুর হক, এবং গৌড় মালদহ ট্রাক অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক আব্দুল মালেক।
মহদিপুর এক্সপোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সমীর ঘোষ বলেন, “দুষ্কৃতীদের দ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছি। তাঁরা আশ্বাস দেওয়ায় ফের আমদানি-রফতানি শুরু হয়।” পানামা বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার প্রবীর কুমার শীল বলেন, “ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। প্রশাসনের তরফ থেকে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বিজিবি ও পুলিশ দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের জন্য তদন্ত শুরু করেছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy