পুষ্পস্তবকে শ্রদ্ধা মন্ত্রী গৌতম দেবের। ছবি: সন্দীপ পাল।
মন্ত্রী এবং জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে কাছে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী প্রয়াত সুমন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবার। বৃহস্পতিবার বিকেলে কিছু সময়ের তফাতে জলপাইগুড়ি শহরের পাহাড়িপাড়ায় সুমন্তিকার বাড়িতে যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এবং জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী। তদন্ত শেষের আগেই সুমন্তিকার রহস্যমৃত্যু নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীর বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন তাঁর পরিবার। প্রশ্ন তোলেন, কেন তাঁর সম্পর্কে অপমানজনক মন্তব্য করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে সঠিক তদন্ত করে দ্রুত তাঁর মৃত্যুর কারণ সামনে তুলে আনার জন্য মন্ত্রী এবং জেলা তৃণমূল নেতার কাছে আবেদন জানান। আজ শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী এবং শিক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মন্তব্য সুমন্তিকার পরিবারকে আহত করেছে। ওই বিষয়ে পরিবারের আপত্তি অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত। কেন উপাচার্য ওই ধরণের কথা বললেন তা নিয়ে শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। এছাড়াও দ্রুত তদন্তের কাজ শেষ করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলব।” জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন,“জেলার বহু মেয়ে কলকাতায় পেয়িং গেস্ট থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। সুমন্তিকার মতো কোনও ঘটনা যেন আর না ঘটে সে জন্য সেখানকার পরিকাঠামো খতিয়ে দেখার পাশাপাশি দ্রুত তদন্ত শেষ করার আর্জি জানিয়েছে সুমন্তিকার পরিবার। শুক্রবার কলকাতায় পৌঁছে ওই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।” গত রবিবার সকালে কলেজ স্ট্রিটের একটি বাড়ি থেকে পদার্থবিদ্যায় এম এসসি প্রথম বর্ষের ছাত্রী সুমন্তিকার দেহ উদ্ধার হয়। এর পর থেকে তাঁর রহস্য মৃত্যু নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্যে বিব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার।
এ দিন বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ সুমন্তিকার বাড়িতে যান জেলা তৃণমূল সভাপতি। সঙ্গে ছিলেন জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু, আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোহন শর্মা এবং প্রদেশ তৃণমূল সম্পাদক কল্যাণ চক্রবর্তী। কেন তদন্ত শেষ হওয়ার আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অভিজিত চক্রবর্তী সুমন্তিকার রহস্য মৃত্যুর পিছনে মাদক যোগের কথা বললেন, সুমন্তিকার বাবা দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, মা শিপ্রা দেবী, কাকু ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মামা রানা মুখোপাধ্যায় তাঁদের কাছে তা জানতে চান। দেবাশিসবাবু বলেন, “এই অপবাদ অসহ্য লাগছে। দ্রুত তদন্ত শেষ করার ব্যবস্থা করুন।” কান্নায় ভেঙে পড়েন মা শিপ্রা দেবী। সৌরভবাবু পরিবারের লোকজনকে আশ্বস্ত করতে গিয়ে বলেন, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক মন্তব্য করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। শুধু সুমন্তিকার পরিবারই নয়, গোটা জেলা শহরই এ কথা মানতে পারছে না। বিকেল সওয়া পাঁচটা নাগাদ সুমন্তিকার বাড়িয়ে যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়। দেবাশিসবাবু এবং শিপ্রা দেবী একই ভাবে মন্ত্রীর কাছেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মন্তব্যকে ঘিরে তাঁদের ক্ষোভের কথা তুলে ধরেন। আর্জি জানান দ্রুত তদন্তের কাজ শেষ করার জন্য। সুমন্তিকার পরিবারের সঙ্গে প্রায় আধ ঘণ্টা কথা বলেন মন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy