Advertisement
০১ মে ২০২৪

পাট বীজে স্বনির্ভরতা চাইছে রাজ্য

পাট উৎপাদনে দেশের মধ্যে শীর্ষে পশ্চিমবঙ্গ। অথচ পাট বীজের জন্য ভরসা সেই ভিন্‌ রাজ্যই! ফলে চড়া দামে বীজ কিনে চাষিদের পাট চাষ করতে হয়। এই সমস্যা এড়াতে এ বার পাট বীজ উৎপাদনেও স্বাবলম্বী হওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে রাজ্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৬ ০১:৩৩
Share: Save:

পাট উৎপাদনে দেশের মধ্যে শীর্ষে পশ্চিমবঙ্গ। অথচ পাট বীজের জন্য ভরসা সেই ভিন্‌ রাজ্যই!

ফলে চড়া দামে বীজ কিনে চাষিদের পাট চাষ করতে হয়। এই সমস্যা এড়াতে এ বার পাট বীজ উৎপাদনেও স্বাবলম্বী হওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে রাজ্য। দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় পাট বীজ চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেই উদ্দেশ্যে পাটবীজ চাষিদের নিয়ে দু’দিন ধরে একটি প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে বাঁকুড়ায়। বুধবার বাঁকুড়ার কৃষিভবনে এই শিবির শুরু হল। আজ বৃহস্পতিবার সিমলাপালের বিক্রমপুরে দ্বিতীয় দিনের শিবির হবে।

এ দিনের শিবিরে বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও বর্ধমান জেলার শতাধিক চাষি যোগ দিয়েছিলেন। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের অতিরিক্ত কৃষি অধিকর্তা (বাণিজ্যিক ফসল) অনন্তনারায়ণ হাজরা, কেন্দ্রীয় পাট গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বিজ্ঞানী চন্দন সৌরভ কর, রাজ্যের সহকৃষি অধিকর্তা (পাট) রামপ্রসাদ ঘোষ, বাঁকুড়ার উপকৃষি অধিকর্তা আশিসকুমার বেরা, উপকৃষি অধিকর্তা (বীজ সংশোধিতকরণ) বিধান চক্রবর্তী প্রমুখ।

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গের পাঁচটি জেলা বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর ও বর্ধমানে ২৫০-২৭০ হেক্টর জমিতে পাটবীজ চাষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। যা থেকে প্রায় ১৫০ টন পাট বীজ উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে কৃষি দফতরের কর্তাদের আশা। যদিও এ রাজ্যে পাটবীজের চাহিদা অন্তত তিন হাজার টন। ফলে চাহিদার তুলনায় অনেক কম লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।

রামপ্রসাদবাবু বলেন, “ধাপে ধাপে আমরা এই চাষ আরও বাড়াবো। পাট বীজ চাষ করে সফল হওয়া চাষিদের দেখে আরও বহু চাষিই এগিয়ে আসবেন বলে আমরা আশাবাদী। বীজ উৎপাদনের পরে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা মিশন প্রকল্পে চাষিদের কেজি প্রতি ৫০ টাকা করে ভর্তুকিও দেবে সরকার।’’ তিনি জানান, পাট বীজ পেতে পশ্চিমবঙ্গের চাষিরা অন্ধ্রপ্রদেশের উপর নির্ভরশীল। ওই রাজ্যে চাষ ভাল হলে পশ্চিমবঙ্গের বাজারে পাটবীজের দর কমবেশি ১৫০ টাকা প্রতি কেজিতে থাকে। আর প্রাকৃতিক কারণে চাষ কম হলে কেজিতে প্রায় ২৫০ টাকা দরে চাষিদের বীজ কিনতে হয়। তবে এ রাজ্যে পাটবীজের উৎপাদন শুরু হলে অন্ধ্রপ্রদেশের উপর থেকে নির্ভরতা অনেক কমবে বলে আশাবাদী কৃষি বিশেষজ্ঞেরা। তাতে বাজারে বীজের দরও অনেকটাই কমবে।

দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, জুলাই–অগস্ট মাসেই পাটবীজ বপন করার সময়। তিন-চার মাসের মধ্যেই বীজ উৎপাদন হয়ে যায়। উঁচু জমিতে এই চাষ ভাল হয়। প্রতি হেক্টরে পাট বীজ চাষের গড় খরচ প্রায় ২৯ হাজার টাকা। যা ধানচাষের তুলনায় কিছুটা বেশি হলেও পাট বীজ চাষ করে ধানের থেকে লাভ অনেকটাই বেশি হবে বলে দাবি কৃষি দফতরের। জেলার উপকৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) আশিসবাবু বলেন, “রাঢ়বঙ্গের জেলাগুলিতে ব্যাপক ভাবে পাটবীজ চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। উঁচুজমিরও অভাব নেই এইসব জেলায়। চাষিদের ঘরে ঘরে এই বিকল্প চাষের বার্তা পৌঁছে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jute seed independence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE