Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
bolpur

জেল থেকে বেরিয়ে বিয়ে, ফের জেলেই

পুলিশ জানায়, এই ঘটনার পরে অভিযুক্তের বাড়ির লোক ওই যুবতীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দু’জনের বিয়ে হবে স্থির হয়। সেই মতো আইনজীবীদের সহায়তায় উভয় পক্ষই বিয়ে করার জন্য শুক্রবার বোলপুর আদালতে আবেদন জানায়। আদালত সেই আবেদনে মান্যতা দিয়ে শনিবার বেলা সাড়ে ১২টা থেকে সাড়ে ৪টের মধ্যে বিয়ে সম্পন্ন করার সময় দেয়

মন্দিরে: পুলিশ প্রহরায় পাত্র-পাত্রী। শনিবার কঙ্কালীতলায়। নিজস্ব চিত্র

মন্দিরে: পুলিশ প্রহরায় পাত্র-পাত্রী। শনিবার কঙ্কালীতলায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:০১
Share: Save:

জেলখানা থেকে সোজা বিয়ের পিঁড়িতে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মালাবদল থেকে সিঁদুরদান— সবই হল বিয়ের নিয়ম রীতি মেনে। বিয়ে শেষে বর ফের ফিরলেন জেলে। শনিবার এমনই একটি বিয়ের সাক্ষী রইল বোলপুরের কঙ্কালীতলা মন্দির।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, লাভপুর থানার দারন্দা গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় সেনাকর্মীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে মহম্মদবাজার এলাকার এক আদিবাসী মহিলার। পাঁচ বছর সম্পর্ক থাকার পরে ওই যুবক মেয়েটিকে বিয়ে করতে বেঁকে বসেন। অভিযোগ, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মেয়েটিকে বোলপুরের একটি হোটেলে ডেকে ওই সেনাকর্মী বিয়েতে আপত্তির কথা জানিয়ে দেন। সে দিনই তাঁর প্রেমিকা বোলপুর থানায় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস ও ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। ওই রাতেই পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। ১৪ তারিখ অভিযুক্তকে বোলপুর আদালতে তোলা হলে জেল হেফাজত হয়।

পুলিশ জানায়, এই ঘটনার পরে অভিযুক্তের বাড়ির লোক ওই যুবতীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দু’জনের বিয়ে হবে স্থির হয়। সেই মতো আইনজীবীদের সহায়তায় উভয় পক্ষই বিয়ে করার জন্য শুক্রবার বোলপুর আদালতে আবেদন জানায়। আদালত সেই আবেদনে মান্যতা দিয়ে শনিবার বেলা সাড়ে ১২টা থেকে সাড়ে ৪টের মধ্যে বিয়ে সম্পন্ন করার সময় দেয়। এর পরেই শুরু হয়ে যায় তোড়জোড়। এ দিন জেল হেফাজত থেকে অভিযুক্তকে পুলিশি প্রহরায় কঙ্কালীতলা নিয়ে আসা হয়। অভিযোগকারিণীকেও কনে সাজিয়ে নিয়ে আসা হয়। কঙ্কালীতলা মন্দিরে তাঁদের চার হাত এক করে দেন পুরোহিত। কিন্তু, মামলাটি এখনও বিচারাধীন থাকায় বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পরেই বরকে পুনরায় সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
অভিযুক্ত সেনাকর্মী বলেন, ‘‘ওকে ভালোবাসার পাশাপাশি বিয়ে করার কথা বাড়িতে জানিয়েছিলাম। কিন্তু সেই সময় আমার বাড়ির লোক রাজি না থাকায় বাধ্য হয়ে বিয়েতে না করতে হয়। কিন্তু পরে দুই পরিবার রাজি হওয়ায় আবার আমাদের চার হাত এক হল। আমি খুব খুশি।’’ তাঁর বাবার কথায়, ‘‘ছেলের জন্য আমরা অন্য পাত্রী খুঁজেছিলাম। সেই সময় ওর এই সম্পর্কের কথা জানতাম না তাই প্রথমে বিয়েতে রাজি ছিলাম না। আজ ওদের বিয়ে দিতে পেরে আমরা খুশি।’’

অভিযুক্তের আইনজীবী বিশ্বনাথ সরকার বলেন, ‘‘পাঁচ বছর ধরে আমার মক্কেলের সঙ্গে ওই মেয়েটির ভালবাসা ছিল। কিন্তু তিনি বিয়েতে রাজি না হওয়ায় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস ও ধর্ষণের মামলা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। কিন্তু, সব ভাল যার, শেষ ভাল। শীঘ্রই মেয়েটির পরিবারের তরফ থেকে মামলা তুলে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে আদালতে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bolpur Kankalitala Wedding
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE