Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বোমায় পুড়ে মৃত্যু যুবকের, খুনের অভিযোগ মাড়গ্রামে

ট্রাক্টরের জন্য তেল কিনে বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমায় খুন হলেন এক যুবক। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম চন্দ্রকান্ত মাল (৪৫)। বাড়ি মাড়গ্রাম থানার বড় কার্তিকচুংড়ি গ্রামে। শনিবার রাতে ঘটনার পরই গ্রামের ছ’জন বাসিন্দার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন নিহতের ছেলে সুমন্ত মাল। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ এক জনকে আটক করেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৫ ০২:১৪
Share: Save:

ট্রাক্টরের জন্য তেল কিনে বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমায় খুন হলেন এক যুবক। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম চন্দ্রকান্ত মাল (৪৫)। বাড়ি মাড়গ্রাম থানার বড় কার্তিকচুংড়ি গ্রামে। শনিবার রাতে ঘটনার পরই গ্রামের ছ’জন বাসিন্দার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন নিহতের ছেলে সুমন্ত মাল। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ এক জনকে আটক করেছে।

তবে এই খুনের পিছনে ব্যক্তিগত আক্রোশ না কি অন্যকোনও কারণ রয়েছে, তার তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক জোবি থমাস কে জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। তাঁদেরকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চন্দ্রকান্ত মাল একটি নতুন ট্রাক্টর কিনেছিলেন। সেই ট্রাক্টরে বালি তোলার কাজ করতে গিয়ে সাড়ে সাত মাস আগে মাড়গ্রাম থানার মথুরাপুরে দুর্ঘটনায় বড়কার্তিকচুংড়ি গ্রামের যুবক শিবু মাল মারা যান। শিবু মালের পরিবার ক্ষতিপূরণ চেয়ে চন্দ্রকান্তবাবুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলা এখনও আদালতে চলছে। দাবি মতো ক্ষতিপূরণ না পেয়ে তাঁর বাবাকে বোমা মেরে খুন করা হয়েছে বলে দাবি সুমন্ত মালের। এই মর্মে গ্রামের ছ’বাসিন্দার নামে অভিযোগও দায়ের করেছেন সুমন্ত। বড়কার্তিকচুংড়ি গ্রামের বাসিন্দা তথা মাড়গ্রাম থানার হাঁসন ২ পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের দীপেন মাল দীপেন মাল বলেন, ‘‘সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ গ্রামে ঢুকতে কেশারপুকুর পাড়ে দু’টি বোমা ফাটার আওয়াজ পাই। তারপর এলাকায় গিয়ে দেখি, একটি সাইকেল ও ডিজেলের ব্যারেলে আগুন লাগে। পরে সেই আগুনে পুড়ে যান চন্দ্রকান্ত মাল। এর পর পুলিশ এসে চন্দ্রকান্তবাবুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানিয়ে দেন।’’

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সম্ভবত পূর্ব আক্রোশ বশত দুষ্কৃতীরা চন্দ্রকান্তবাবুকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে। ওই বোমা ফেটে ডিজেলের ব্যারেলে আগুন যায়। এ পরে সেই আগুন চন্দ্রকান্তবাবুর দেহে লেগে যায়। নিহতের সাইকেলটিও পুড়ে গিয়েছে। দীপেনবাবুর দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, ‘‘আগে চন্দ্রকান্তবাবুর ট্রাক্টরে বালি তোলার কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় গ্রামের যুবক শিবু মালের যান। তখন শিবুর পরিবার থেকে ক্ষতিপূরণের দাবি করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে মৌখিক ভাবে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে পুলিশে অভিযোগ হয়। সে জন্য সমস্যার সমাধান করা যায়নি।’’

এ দিকে, পুলিশ অভিযুক্তদের মধ্যে উজ্জ্বল মণ্ডল নামে এক যুবককে রাতেই আটক করেছে। বাকি অভিযুক্তরা পলাতক বলে পুলিশের দাবি। তবে সুফল মণ্ডল নামে এক অভিযুক্তের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার সময় গ্রামে মেলা দেখছিলাম। অনেকের সঙ্গে আমিও গ্রাম ঢোকার আগে কেশারপুকুর পাড়ে বোমার আওয়াজ পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখি, চন্দ্রকান্ত মালের দেহে আগুন জ্বলছে। তারপর বাড়ি চলে আসি। পরে শুনেছি আমার নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE