শোকার্ত পরিজন। নিজস্ব চিত্র
শ্বশুরবাড়ি থেকে যৌতুকে পাওয়া সাধের মোটরবাইকটি দাদাকে দিতে চাননি ভাই। তাই নিয়েই সকাল থেকে বচসা। তার জেরে ভাইকে ভোজালির কোপে খুন করার অভিযোগ উঠল দাদার বিরুদ্ধে। শনিবার পাইকর থানার কাশিমনগর গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত যুবকের নাম নাসিবুল শেখ (৩০)। তাঁর দাদা নওশাদ শেখকে পুলিশ গ্রেফতার করে খুনের মামলা রুজু করেছে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল থেকেই নাসিবুলের বাইক নিয়ে বেরোতে চেয়েছিলেন নওশাদ। দাদার জুয়ার নেশা আছে জানা থাকায় প্রিয় বাইকটি দিতে নাসিবুল রাজি হননি। তাঁর স্ত্রী রেণু বিবির দাবি, এর আগেও তিন বার নাসিবুলের বাইক নিয়ে বেরনোর নাম করে তা পাওনাদারদের কাছে দিয়ে এসেছিলেন নওশাদ। এ দিন নাসিবুল সেই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে প্রতিবাদ করায় নওশাদ রেগে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলে প্রতিবেশীরা জড়ো হন। দু’ভাইয়ের বচসা হাতাহাতির পর্যায়ে গেলে পড়শিরাই তখনকার মতো ছাড়িয়ে দেন।
রেণু বিবির অভিযোগ, ‘‘বেলা তিনটে নাগাদ আমার স্বামী স্নান করতে উঠোনের পাশে বাথরুমে গিয়েছিলেন। হঠাৎ ওঁর চিৎকার শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে দেখি, আমার ভাসুর ভোজালি দিয়ে ওঁর পেটে ও পিঠে কোপ দিচ্ছেন। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল উঠোন। আমি ছাড়াতে যেতেই পালিয়ে গেলেন উনি।’’রেণুর কান্না শুনে প্রতিবেশীরাও জড়ো হন। রক্তাক্ত নাসিবুলকে নিয়ে পাইকর হাসপাতালে যান কয়েক জন, আর বাকিরা তাড়া করেন নওশাদকে। পাইকর পঞ্চায়েতের সদস্য রেহেতাজ শেখের বাড়ি ওই এলাকায়। তিনিই পুলিশকে ফোন করে ঘটনাটি জানান। পুলিশ ও গ্রামবাসীরা ধাওয়া করে স্থানীয় কিসান মান্ডির কাছে অভিযুক্তকে ধরে ফেলে। তদন্তকারীরা জানান, মাঠের মধ্যে দিয়ে পালানোর চেষ্টা করছিল নওশাদ। চারদিক থেকে ঘিরে ফেলায় আর পালাতে না পারলেও ভোজালিটা আশপাশের কোনও চাষের জমিতে ফেলে দিয়েছেন। সেটি খোঁজা হচ্ছে।
নওশাদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, বছর কয়েক আগেই নওশাদের প্রথম পক্ষের স্ত্রী-র অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল। এ দিনের ঘটনার পরে নওশাদের দ্বিতীয় স্ত্রীও পলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে। নিহত যুবকের দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হালপাতালে পাঠানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy