Advertisement
১১ মে ২০২৪
Coronavirus in Birbhum

করোনার সংক্রমণ মেডিক্যালে, সংস্পর্শে অনেকে

জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যাও ‘ট্রিপল-সেঞ্চুরি’ পার করল। 

সতর্কতা: রামপুরহাট মেডিক্যালে এসএসভিপির দফতর জীবাণুনাশক স্প্রে করার জন্য খোলা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

সতর্কতা: রামপুরহাট মেডিক্যালে এসএসভিপির দফতর জীবাণুনাশক স্প্রে করার জন্য খোলা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২০ ০১:২২
Share: Save:

এ বার করোনায় আক্রান্ত হলেন রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী। জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যাও ‘ট্রিপল-সেঞ্চুরি’ পার করল।

বুধবার রাতে রামপুরহাট মেডিক্যালের অ্যাকাউন্টস সেকশনের ডেটা এন্ট্রি অপারেটর ওই কর্মীর পজিটিভ রিপোর্ট আসে। রাতেই ওই কর্মীকে তাঁর শ্বশুরবাড়ি, রামপুরহাট পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে রামপুরহাটের কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ, প্রশাসন। বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালের পুরাতন ভবনের দোতালায় ওই কর্মীর অফিস সংলগ্ন অ্যাকাউন্টস সেকশনের আর একটি ঘর সহ অ্যাসিন্ট্যান্ট সুপারের ঘর, ডেপুটি সুপারের ঘর, ডকেট রুম, এমএসভিপি-র ঘর জীবাণুমুক্ত করা হয়। ওই ঘরগুলিতে আপাতত কর্মীদের যাতায়াতও বন্ধ রাখা হয়েছে।

এ দিকে, বীরভূমে গত কয়েক দিনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমে গেলেও বুধবার এবং বৃহস্পতিবার দু’দিনে নতুন করে দশ আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। এঁদের মধ্যে বীরভূম স্বাস্থ্য জেলায় চার জন, বাকিরা রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার। নতুন দশ আক্রান্তকে ধরে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল ৩০৪। বীরভূম স্বাস্থ্য জেলায় মোট আক্রান্ত ১১৮ জন। বাকিরা রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার। বোলপুর কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৬ জন। রামপুরহাট কোভিড হাসপাতালে ১১ জন চিকিৎসাধীন। রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার ছয় আক্রান্তের মধ্যে পাঁচ জন উপসর্গহীন।

তবে চিন্তা বাড়িয়েছে স্বাস্থ্যকর্মীর আক্রান্ত হওয়া। করোনা আক্রান্ত ডেটি এন্ট্রি অপারেটরের হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে যাতায়াত ছিল। ওই কর্মীর কাছে অনেক চাকরি প্রার্থী মেডিক্যাল করাতে আসতেন। সেই কারণে হাসপাতালের কর্মীরা ছাড়াও বাইরে অনেকে ওই কর্মীর সংস্পর্শে এসেছেন। কারা কারা সেই তালিকায় আছেন, সংখ্যাটা কত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা খতিয়ে দেখছেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কর্মী কিছু দিন হল জ্বরে ভুগছিলেন। কয়েক দিন অফিসেও আসেননি। বুধবার অফিসে এসেছিলেন। ৬ জুন লালারস সংগ্রহ করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের বেশ কিছু কর্মীর ফের লালারস সংগ্রহ করা হবে।

মাস দুয়েক আগে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার অধীন ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক নার্সের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। ফের এক স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হওয়ায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে। স্বাস্থ্যকর্তা থেকে সাধারণ কর্মী, ভীত অনেকেই। সাধারণ স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকেই জানিয়েছেন, রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে বিভিন্ন ধরণের রোগীর চাপ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তথ্য বলছে, হাসপাতালের বহির্বিভাগে বিভিন্ন ধরণের রোগের চিকিৎসা পরিষেবার জন্য বুধবার ৯৪১ জন নতুন রোগী এসেছিলেন। এর বাইরে ৩০০ জনের বেশি পুরনো রোগী ছিলেন। সব মিলিয়ে আনলক পর্বে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১২০০ রোগী চিকিৎসার জন্য রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে আসছেন।

হাসপাতালের বর্হিবিভাগ কর্মীদের অনেকের অভিযোগ, হাসপাতালে পরিষেবা নিতে আসা রোগী থেকে রোগীর পরিজনদের মাস্ক ছাড়া ভিতরে ঢুকতে দিতে নিষেধ করলে নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে ঝামেলা হচ্ছে। ঝামেলা এড়াতে অনেকে মাস্ক ছাড়াই ঢুকতে দিচ্ছেন। এতে আবার নিয়ম মেনে প্রবেশ করা রোগী বা রোগীর পরিজনেরা সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন। তাঁদের অভিযোগ, করোনা মোকাবিলায় প্রথম পর্বে যে ভাবে সচেতনতা বৃদ্ধিতে মাইকিং করা হচ্ছিল, বর্তমানে তেমনটা করা হচ্ছে না। স্বাস্থ্যকর্মীর আক্রান্ত হওয়ার পরে সেই ছবি পাল্টাবে বলে আশা অনেকের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE