ফাইল চিত্র
ঝালদা শহরও লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নিল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। সোমবার দুপুরে প্রশাসনের তরফে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার জানান, জরুরি ভিত্তিতে প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত। বিকেল চারটের আগে থেকেই লকডাউনের কথা প্রচার করা শুরু হয় ঝালদায়। এ দিন ৫টা থেকে শহর লকডাউন করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ২৭ মার্চ রাত ১২টা পর্যন্ত এই নির্দেশ জারি থাকবে।
সোমবার রাজ্যের বিভিন্ন শহরাঞ্চলে লকডাউনের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই তালিকায় বাঁকুড়ার ক্ষেত্রে জেলা সদর শহর ছাড়াও বিষ্ণুপুর ও বড়জোড়ার নাম রয়েছে। পুরুলিয়ার ক্ষেত্রে লকডাউনের কথা গোড়ায় ঘোষণা করা হয়েছিল শুধু জেলা সদর শহরের জন্য। এ দিন সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে ঝালদাও। কিন্তু রঘুনাথপুর, আদ্রার মতো শহর বা কাশীপুর, বলরামপুর, মানবাজার-সহ বেশি জনবসতির ব্লক সদরগুলিতে কী হবে? জল্পনা চলছে সেখানকার মানুষজনের মধ্যে। তবে জেলাশাসক বলেন, ‘‘পুরুলিয়া শহরের জনসংখ্যা প্রায় এক লক্ষ তিরিশ হাজার। পাশাপাশি জেলা সদরে প্রচুর মানুষজন আসেন। ঝালদাও লকডাউন থাকবে। তবে অন্য জায়গার ক্ষেত্রে এখনই কিছু ভাবা হয়নি।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন থেকেই আন্তঃরাজ্য সীমানা সিল করে দেওয়া হয়েছে। জেলার নাকা পয়েন্টগুলিতে সোমবার পর্যন্ত ২০ হাজারেরও বেশি মানুষকে পরীক্ষা করা হয়েছে। পুরুলিয়ার উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গুরুদাস পাত্র জানান, যাঁদের হোম কোয়রান্টিনে থাকার কথা বলা হচ্ছে তাঁরা বাড়িতে আলাদা থাকবেন। যদি কারও একটাই ঘর থাকে, সে ক্ষেত্রে কমিউনিটি কোয়রান্টিন চালু করা হয়েছে। সেখানে গিয়ে থাকতে পারবেন। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই বাইরে ঘোরা চলবে না। পুরুলিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘জেলায় সংক্রমণের কোনও খবর নেই। বাইরে থেকে মানুষজন ফিরছেন। তাঁদের তো বটেই, বাকিদেরও সতর্ক থাকতে হবে।’’
জেলায় বাড়ানো হয়েছে কোয়রান্টিনের শয্যাসংখ্যাও। এত দিন দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতাল ও সরকারি মেডিক্যাল কলেজের হাতোয়াড়া ক্যাম্পাস মিলিয়ে শয্যা ছিল তিনশো। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়া জেলায় কোয়রান্টিন শয্যা বাড়িয়ে মোট সাড়ে পাঁচশো করা হয়েছে। হাতোয়াড়ায় বাড়ানো হয়েছে একশোটি শয্যা। জয়চণ্ডীপাহাড় পর্যটক আবাসে একশো এবং রঘুনাথপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে পঞ্চাশটি করে শয্যা বাড়ানো হয়েছে।
পুরুলিয়া জেলা পরিষদ সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গ্রামাঞ্চলে যাতে বেশি মানুষ এক সঙ্গে না জড়ো হন, আমরা তা নিয়ে প্রচার করছি।’’ জেলার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগান বলেন, ‘‘শহরের ক্ষেত্রে আমরা একসঙ্গে ৭ জনের বেশি মানুষ জড়ো হলেই আইনি পদক্ষেপ করব। গ্রামাঞ্চলে আমরা মানুষজনের কাছে আবেদন করব, এক জায়গায ভিড় না করার জন্য। কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেও আমরা অনুরোধ করব পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে কর্মসূচি পিছিয়ে দেওয়ার জন্য।’’ করোনার মোকাবিলায় কী করা দরকার আর কী করা উচিত নয় তা ট্যাবলোর মাধ্যমেও প্রচার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ সৌমেন বেলথরিয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy