Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Purlia

মিলছে না ‘মাস্ক’ আর ‘স্যানিটাইজ়ার’, চিন্তায় পুরুলিয়া

পুরুলিয়া শহরের এক ওষুধের স্টকিস্ট আবার জানাচ্ছেন, তাঁরা সংস্থার কাছে ‘মাস্ক’ ও ‘স্যানিটাইজ়ার’ চেয়েও পাচ্ছেন না।

সুরক্ষা: ‘মাস্ক’ পরে রোগী দেখছেন রঘুনাথপুর শহরের এক চিকিৎসক। নিজস্ব চিত্র

সুরক্ষা: ‘মাস্ক’ পরে রোগী দেখছেন রঘুনাথপুর শহরের এক চিকিৎসক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২০ ০৭:১৩
Share: Save:

প্রতিদিনই প্রচুর ক্রেতা ‘মাস্ক’ ও ‘স্যানিটাইজ়ার’ কিনতে দোকানে আসছেন। কিন্তু নোভেল করোনাভাইরাসের আতঙ্ক শুরুর পর থেকেই বাজার থেকে উধাও সে সব। বিপাকে পড়েছেন পুরুলিয়াবাসী।

ঝালদা থেকে শুরু করে রঘুনাথপুর, আদ্রা থেকে পুরুলিয়া শহর— সর্বত্রই এক ছবি। খুচরো ওষুধ বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, স্টকিস্টের কাছেও ‘মাস্ক’ ও ‘স্যানিটাইজ়ার’ নেই। ফলে, ক্রেতারা চাইলেও দিতে পারছেন না তাঁরা।

পুরুলিয়া শহরের এক ওষুধের স্টকিস্ট আবার জানাচ্ছেন, তাঁরা সংস্থার কাছে ‘মাস্ক’ ও ‘স্যানিটাইজ়ার’ চেয়েও পাচ্ছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘সংস্থা থেকেই জোগান নেই। আমরা ওষুধের দোকানে দেব কী ভাবে?”

জেলার বড় শহরগুলির ওষুধের দোকানদারেরা জানাচ্ছেন, নোভেল করোনাভাইরাসের আতঙ্কে গত কয়েক দিনে ‘মাস্ক’ ও ‘স্যানিটাইজার’-এর চাহিদা বেড়েছে কয়েক গুণ।

রঘুনাথপুর শহরের নতুন বাজারের রাস্তার একটি বড় ওষুধ দোকানের মালিক রাজা চক্রবর্তী, বাঁকুড়া যাওয়ার রাস্তার একটি ওষুধের দোকানের মালিক চন্দন গড়াইরা বলেন, ‘‘আসানসোলের স্টকিস্টের কাছ থেকে মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার এনে বিক্রি করি। দশ-পনেরো দিন হল সেগুলি পাওয়াই যাচ্ছে না। এ দিকে প্রতিদিন প্রচুর ক্রেতা এসে

ফিরে যাচ্ছেন।”

একই অবস্থা ঝালদার ওষুধ বিক্রেতা রাজেন মাহাতো, সুবল বন্দ্যোপাধ্যায়দেরও। তাঁরা জানাচ্ছেন, চাহিদা বেড়েছে কয়েক গুন। কিন্তু বন্ধ হয়ে গিয়েছে সরবরাহ।

আদ্রার ওষুধের দোকানগুলি থেকে ফরমায়েশ নিয়ে আসানসোল থেকে ওষুধ এনে দেন নির্মল আগরওয়াল। দীর্ঘদিন ধরে এই কাজ করে আসছেন তিনি। নির্মল বলেন, ‘‘প্রতিটি দোকান প্রতিদিন মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ারের অর্ডার দিচ্ছে। কিন্তু আসানসোলের কোনও স্টকিস্টের কাছে পাওয়া যাচ্ছে না।” কেউ কেউ অনলাইন কেনাকাটার ওয়েবসাইটে ঢুঁ মেরেছেন। তেমনই এক জন বললেন, ‘‘ওয়েবসাইটেও দেখছি, ২৬ মার্চের আগে মাস্ক পাওয়া যাবে না। আর স্যানিটাইজ়ারের জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত।’’

‘মাস্ক’-এর অভাবে সমস্যায় পড়ছেন চিকিৎসকেরাও। রঘুনাথপুর শহরের ভোন্দুর মোড়ের প্রবীণ চিকিৎসক প্রশান্তকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, সম্প্রতি শহরের একটি পেট্রোল পাম্পের মালিক তাঁকে একটি মাস্ক দিয়েছেন। আপাতত সেটি পরেই রোগী দেখছেন তিনি। কিন্তু একটি মাস্ক দীর্ঘদিন ব্যবহার করা উচিত নয়। অন্য দিকে, বাজারে ‘মাস্ক’ অমিল। প্রশান্তবাবু বলেন, ‘‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা পুরুলিয়ায় এখনও পর্যন্ত নেই। কিন্তু সর্তকতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। আমরা প্রতিদিন সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত অনেক রোগী দেখি। পেশাগত দায়বদ্ধতার জন্য কাউকে ফেরানো সম্ভব নয় চিকিৎসকদের পক্ষে। তাই মাস্ক ব্যবহার করটা জরুরি।’’

জেলার বড় শহরগুলির বাজারে আপাতত সাধারণ ‘মাস্ক’ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্বীকৃত এন-৯৫ ‘মাস্ক’ মিলছে না। রঘুনাথপুর কলেজের অধ্যক্ষ ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় প্রতিদিন পুরুলিয়া শহর থেকে ট্রেনে চেপে কলেজে আসেন। দোকানে দোকানে এন-৯৫ ‘মাস্ক’-এর খোঁজ করেছিলেন তিনি। পাননি। একই অবস্থা ঝালদা শহরের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক সোমনাথ খাঁ-র। তাঁরা জানান, ওষুদের দোকানে নিজেদের ফোন নম্বর দিয়ে বলে এসেছেন— ‘মাস্ক’ এলেই যেন খবর দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Purlia Coronavirus Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE