Advertisement
১১ মে ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

আদ্রার পুরনো বাজারে বন্ধ আসা-যাওয়া

পুলিশ পুরনো বাজারে ঢোকার তিনটি রাস্তার মুখে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’-এর ব্যানার ঝুলিয়ে দেয়।

তৎপরতা: সংক্রমণের খবর পাওয়ার পরেই আদ্রার পুরনো বাজার এলাকা জীবাণুমুক্ত করছে পুলিশ ও দমকল। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

তৎপরতা: সংক্রমণের খবর পাওয়ার পরেই আদ্রার পুরনো বাজার এলাকা জীবাণুমুক্ত করছে পুলিশ ও দমকল। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আদ্রা শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২০ ০৬:২৪
Share: Save:

এক বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত হওয়ায় পুরুলিয়ার আদ্রার পুরনো বাজারের প্রায় সমস্ত এলাকা ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ ও ‘বাফার জ়োন’ হিসেবে চিহ্নিত করল পুলিশ-প্রশাসন। সোমবার সকাল থেকেই পুলিশ পুরনো বাজারে ঢোকার তিনটি রাস্তার মুখে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’-এর ব্যানার ঝুলিয়ে দেয়। বেলায় রঘুনাথপুর দমকল কেন্দ্রের একটি ইঞ্জিনের সাহায্যে এলাকায় জীবাণুনাশক ছড়ানো হয়। সেই সময়ে উপস্থিত ছিলেন রেলের আদ্রার কর্মী ও আধিকারিকেরা। পরে সংক্রমিত ব্যক্তির পরিবারের সদস্য-সহ মোট ১৮ জনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে কাশীপুর ব্লক স্বাস্থ্য দফতর।

বিডিও (কাশীপুর) সুদেষ্ণা দে মৈত্র বলেন, ‘‘রবিবার রাতেই আদ্রার পুরনো বাজার এলাকায় করোনা সংক্রমিত ব্যক্তি ও তাঁর সত্তরোর্ধ্ব মাকে পুরুলিয়া শহরের কোভিড-হাসপাতালে পাঠানো হয়।’’

তিনি জানান, ওই বৃদ্ধা অত্যন্ত আতঙ্কিত থাকায় তাঁর কিছুটা শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। তিনি ছেলের সংস্পর্সে আসায় সংক্রমণের আশঙ্কাও রয়েছে। সর্বোপরি তাঁর বয়স অনেক বেশি হওয়ায় কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়ে কাশীপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকেরা তাঁকে কোভিড-হাসপাতালে পাঠান। প্রয়োজনে সেখানে দ্রুত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করা যাবে। সোমবার সেখানে বৃদ্ধার লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রের খবর, আক্রান্ত মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ায় কাজ করেন। সম্প্রতি তিনি আদ্রায় বাড়ি ফেরেন। তার পরেই জ্বর হওয়ায় তিনি প্রথমে রঘুনাথপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে যান। পরে নিজেই দুর্গাপুরের কোভিড-হাসপাতালে গিয়ে করোনা-পরীক্ষা করান। রবিবার দুপুরে তাঁর রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ বলে জানা যায়। ওই ব্যক্তি নিজেই উদ্যোগী হয়ে করোনার পরীক্ষা করানোয় তা প্রশংসনীয় বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকেরা। তবে তাঁর ও তাঁর পরিবারের লোকজনের সংস্পর্শে কারা এসেছিলেন, তা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ।

আদ্রায় এই প্রথম কেউ করোনা আক্রান্ত হলেন। এ দিন সকালে ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সুনসান তল্লাট। রাস্তাঘাটে লোকজন নেই। এমনকি, পাশের ইয়ং মার্কেট এলাকার একাংশেও লোকজনের দেখা পাওয়া যায়নি। হাতে গোনা কয়েকটি মাত্র দোকান খোলা ছিল। কিন্তু সেখানেও ভিড় নেই ক্রেতাদের।

এ দিকে, শহরের অন্যতম বড় ব্যবসায়িক কেন্দ্র পুরনো বাজার এলাকা ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ হওয়ায় বেচাকেনার কী হবে, তা নিয়ে কিছুটা হলেও দুর্ভাবনায় পড়েছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। এখানে রয়েছে চাল, ডাল, আটা, মশলার একাধিক বড় আড়ত। পাশাপাশি, জামা-কাপড়ের দোকান, রান্নার গ্যাসের এজেন্টের অফিস প্রভৃতি। আদ্রার অন্য এলাকার ব্যবসায়ীরা পুরনো বাজার থেকে মালপত্র কিনে নিয়ে যান। তাঁরা জানাচ্ছেন, নিষেধাজ্ঞা না ওঠা পর্যন্ত তাঁদের কাশীপুর, রঘুনাথপুর থেকে জিনিসপত্র কিনতে যেতে হবে।

বিডিও বলেন, ‘‘পুরনো বাজারে বহু এলাকার মানুষ আসেন। তাই কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়ে অনেকখানি এলাকা জুড়েই ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ ও ‘বাফার জ়োন’ করা হয়েছে। ওই এলাকার প্রবেশ পথে পুলিশি পাহারা থাকছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE