আন্দোলন: কাটমানি নিয়ে সিপিএমের বিক্ষোভ। শুক্রবার রামপুরহাট পুরসভার সামনে। নিজস্ব চিত্র
কাটমানি ফেরতের দাবিতে রামপুরহাট পুরসভার সামনে বিক্ষোভ দেখাল সিপিএম। শুক্রবার রামপুরহাটে দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল বের করে সিপিএমের রামপুরহাট ১ নম্বর পূর্ব এরিয়া কমিটি। রামপুরহাট পুরসভার সামনে কিছুক্ষণের জন্য বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। তার পরে রামপুরহাট পাঁচমাথা মোড়ে প্রতীকী পথ অবরোধ করেন দলের নেতা-কর্মীরা। রামপুরহাট মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয়। একই দাবিতে বৃহস্পতিবার রাতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার দেয় ডিওয়াইএফআই।
এ দিন সিপিএমের কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মন। উপস্থিত ছিলেন রামপুরহাট পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর সঞ্জীব মল্লিক সহ অন্য নেতারা। সঞ্জীববাবু অভিযোগ জানিয়ে বলেন, ‘‘রামপুরহাট শহরে বাড়ি তৈরির প্রকল্পে তৃণমূলের নেতারা উপভোক্তাদের কাছ থেকে বাড়ি পিছু ৪০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। ব্লক এলাকায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা করে তোলা আদায় করা হয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কাটমানি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে প্রশাসনের তরফে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।’’
সিপিএমের অভি্যোগের বিষয়ে রামপুরহাটের পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারি বলেন, ‘‘সরকারি গাইডলাইন মেনে রামপুরহাট পুরসভা ওই প্রকল্পের কাজ করেছে। উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে সরাসরি প্রকল্পের টাকা যায়। অন্য কারও সেই টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। আর এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগও জমা পড়েনি।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘লোকসভা নির্বাচনের আগেও সিপিএম এমন আন্দোলন করেছিল। সামনে পুরসভা নির্বাচন। তার আগে এ সব নিয়ে রাজনীতি করছে সিপিএম।’’
রামপুরহাটের মহকুমাশাসক নাভেদ আখতার বলেন, ‘‘আমার কাছে কোনও স্মারকলিপি জমা পড়েনি। কয়েক জন আমার সঙ্গে দেখা করে গিয়েছেন। আগামী দিনে তাঁরা কিছু দাবি নিয়ে স্মারকলিপি জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন।’’
অন্য দিকে ‘কাটমানি’ ফেরত চেয়ে বিডিও-র কাছে আবেদন জানালেন উপভোক্তারা। ময়ূরেশ্বরের দাসপলশা পঞ্চায়েত এলাকায়। পঞ্চায়েত প্রধান এবং স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের দাবি, বিজেপি চক্রান্ত করে ওই অভিযোগ করিয়েছে। বিজেপি নেতৃত্ব তা মানেননি।
প্রশাসনিক ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন ওই পঞ্চায়েত এলাকার ৪০ জন উপভোক্তা লিখিত ভাবে বিডিও-র কাছে পঞ্চায়েতের সদস্য সুখেন দে সহ ৪ তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। কাটমানি ফেরতেরও দাবি জানিয়েছেন তারা।
গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরির প্রথম দফার টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাওয়ার আগে বা পরে তাঁদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। সরকারি বরাদ্দ থেকে ‘কাটমানি’র টাকা খরচ হওয়ায় বাড়ি তৈরির কাজ পুরোপুরি শেষ করা যায়নি। সুখেনবাবুদের দাবি, বিজেপির প্ররোচনায় ওই ব্যক্তিরা মিথ্যা অভিযোগ করছেন। একই বক্তব্য পঞ্চায়েত প্রধান চন্দনা বাগদি এবং তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির সভাপতি জুল্লুর রহমানেরও। অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য বিশ্বজিৎ মণ্ডল জানান, এতে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ক্ষোভেরই প্রকাশ ঘটেছে। ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকের বিডিও অর্ণবপ্রসাদ মান্না জানান, অভিযোগ এখনও তিনি হাতে পাননি। পেলে তদন্ত করে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy