Advertisement
১১ মে ২০২৪
Mask

‘মাস্ক’ নেই, কান ধরে ওঠবস করালেন ডিএম

মঙ্গলবার নিজের অফিসে যাওয়ার পথে পুরুলিয়া শহরের রাঁচী রোডে পথচারীদের ‘মাস্ক’ না পরে ঘুরতে দেখে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন জেলাশাসক।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২০ ০২:৪০
Share: Save:

লকডাউন-পর্বের গোড়ার দিকে ‘মাস্ক’ না পরায় পুরুলিয়া শহরের পথে নেমে ‘ধমক’ দিয়েছিলেন জেলাশাসক রাহুল মজুমদার। এ বার শহরে দু’জনের করোনা ধরা পড়ার পরে পথে নেমে ‘মাস্ক’ না পরা লোকজনকে ‘শাস্তি’ দিলেন নিজে।

মঙ্গলবার নিজের অফিসে যাওয়ার পথে পুরুলিয়া শহরের রাঁচী রোডে পথচারীদের ‘মাস্ক’ না পরে ঘুরতে দেখে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন জেলাশাসক। সঙ্গী অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) মুফতি শামিম সওকত ও মহকুমাশাসক (পুরুলিয়া) প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী।

রাস্তার পাশে দোকানের বাইরে ‘মাস্ক’ ছাড়া এক ব্যক্তিকে দেখে জেলাশাসক জানতে চান— ‘‘মাস্ক কোথায়?’’ ঘাবড়ে গিয়ে পকেট হাতড়ে ওই ব্যক্তি ‘মাস্ক’ বার করে তড়িঘড়ি নাক-মুখ ঢাকেন। ততক্ষণে আশপাশের লোকজনও কেউ ‘মাস্ক’, কেউ রুমাল বার করে মুখ ঢাকতে শুরু করেন। কিছু দূরে এক যুবক তখনও ‘মাস্ক’ না পরায় জেলাশাসক তাঁর কাছে যেতেই যুবক আমতা আমতা করতে থাকেন। তিনি বলেন, ‘‘তিনি অফিসে ‘মাস্ক’ রেখে সবে বেরিয়েছেন। তাই সঙ্গে নেই। তাঁকে কান ধরে ওঠবস করতে বলা হয়।

রাস্তায় ট্রাক্টর, সাইকেল ও মোটরবাইক চালকদের নাক-মুখ না ঢেকে যেতে দেখে জেলাশাসক ফের গাড়ি থেকে নামেন। বেগতিক বুঝে ট্রাক্টরে আচমকা ব্রেক কষে গলায় ঝোলানো গামছা দিয়ে নাক-মুখ বাঁধতে শুরু করেন চালক ও ট্রাক্টরে থাকা লোকজন। যাঁদের সঙ্গে তা-ও নেই, তাঁরা সরে পড়তে শুরু করেন। তাঁদেরই কেউ কেউ নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে ধরা পড়ে অসহায় ভাবে জানান, বাইরে বেরোলেই ‘মাস্ক’ পরেন। কিন্তু এখন নেই। কান ধরে ক্ষমা চেয়ে করে তবে ছাড় মেলে তাঁদের।

ভিক্টোরিয়া স্কুল মোড়েও অনেকে ‘মাস্ক’হীন অবস্থায় ছিলেন। এক মোটরবাইক চালকের মাথায় হেলমেট থাকলেও মুখে ‘মাস্ক’ না দেখে মোটরবাইকের চাবি খুলে নেন পুলিশকর্মীরা। অন্যদের কান ধরানো হয়।

হাসপাতালের উল্টো দিকের একটি ওষুধের দোকানে ঢুকে জেলাশাসক দেখেন, কর্মীদের কারও ‘মাস্ক’ ঝুলছে থুতনিতে, কারও বা গলায়। জেলাশাসক তাঁদের বলেন, ‘‘কান ধরে ওঠবস করালে কি হুঁশ ফিরবে? মাস্ক কি মাফলার যে গলায় ঝুলিয়ে রেখেছেন? এত লোক হাসপাতাল থেকে আসছেন। আপনি নিজে যদি সংক্রমিত হন, কে দায় নেবে?’’ দোকানের কর্মীরা জানান, এ বার থেকে তাঁরা নিয়মিত ‘মাস্ক’ পরবেন। কাছে দাঁড়ানো একটি ফলের ঠেলার কাছে দঁড়িয়ে পড়েন জেলাশাসক। ফল বিক্রেতা দ্রুত সরে গিয়ে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগে নাক-মুখ ঢাকতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

পরে জেলাশাসক বলেন, ‘‘সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। বার বার সরকারের তরফে বলা হচ্ছে ন্যূনতম সাবধানতা হিসেবে ‘মাস্ক’ পরুন। দুর্ভাগ্য এটা মানুষকে এত বার করে বোঝাতে হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এত দিন মানবিক ভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু করোনা সংক্রমণ ছড়ানোয় কড়া হতে হচ্ছে। ওঠবস করানো বা ধমক দেওয়া সমাধানের পথ নয়। আসলে মানুষকে বুঝতে হবে, এটা তাঁর ভালর জন্যই বলা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mask Coronavirus in West Bengal Purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE