প্রতীকী ছবি।
নেশাগ্রস্থ ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ট, আতঙ্কিত বৃদ্ধ দম্পতি পুলিশের কাছে আর্জি জানালেন— ‘ছেলের হাত থেকে আমাদের বাঁচান।’’ শনিবার এমনই কাণ্ড ঘটেছে সিউড়ি শহরে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের মল্লিকগুণা পাড়ায় স্ত্রী অঞ্জলিদেবীর সঙ্গে থাকেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী তরুণ জানা। টাকার জন্য তাঁদের মারধর করছে ছেলে কল্লোল— শনিবার পুলিশের কাছে এমনই অভিযোগ জানিয়েছেন তরুণবাবু। বৃদ্ধ দম্পতির অভিযোগ, পড়াশোনা করার সময়েই নেশা করা শুরু করেছিল ছেলে। যত দিন গিয়েছে, সব কাজ ছেড়ে দিয়ে নিত্যুনতুন নেশায় মত্ত থেকেছে ছেলে। এখন প্রায় চল্লিশ ছুঁই ছঁই বয়স তাঁর। সেই ছেলেই এখন বাবা-মায়ের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তরুণবাবুর আক্ষেপ, অনেক চেষ্টা করেও ছেলেকে মূলস্রোতে ফেরাতে পারেননি তাঁরা। ওই দম্পতির পরিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মদ, গাঁজা থেকে ব্রাউন সুগার, হেরোইন— কোনও নেশাই বাদ দেননি কল্লোল। আগে দু’বার তাঁকে নেশামুক্তি কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ফিরে এসেই ফের আগের রাস্তা বেছে নেন তিনি।
তরুণবাবুর দাবি, ২০১২ সালে নেশামুক্তি কেন্দ্র থেকে ফিরেই জোর করে তাঁর কাছ থেকে অবসরকালীন ভাতা হিসেবে পাওয়া সব টাকা (প্রায় ৭ লক্ষ) নিয়ে নেন ছেলে। ওই সময়ে তাঁকে সিউড়ি কলেজপাড়ায় একটি বইয়ের দোকান করে দেওয়া হয়েছিল। সেই দোকানে রাখা হয়েছিল জেরক্স মেশিনও। চুক্তি ছিল, বাবার কাছে আর কোনও দিনও একটিও টাকা চাইবেন না কল্লোল। ওই দম্পতির সঙ্গে এক বাড়িতেও থাকবেন না তিনি। অঞ্জলিদেবী রবিবার বলেন, ‘‘নেশার জন্য সর্বস্ব খুইয়ে এখন মাঝেমধ্যেই বাড়িতে এসে আমাদের উপর অত্যাচার করছে ছেলে। টাকার জন্যশনিবার প্রচণ্ড মারধর করেছে আমাদের দু’জনকে। রবিবার সকালে এসেও টাকার জন্য শাসিয়ে গিয়েছে। প্রচণ্ড আতঙ্কে রয়েছি।’’
এ নিয়ে অভিযুক্তের সঙ্গে কোনও ভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি। তরুণবাবু জানিয়েছেন, কল্লোলবাবুর স্ত্রী অত্যাচারের জেরে বিবাহবিচ্ছেদ করেছেন। নাতনিকে নিয়ে আলাদা বাড়িতে থাকেন ওই মহিলা।
পুলিশ জানায়, অভিযোগ পেলেও নির্দিষ্ট ঠিকানা না থাকায় কল্লোলকে ধরা যায়নি। তবে তাঁর খোঁজ চলছে। পুলিশের তরফে তরুণবাবুদের আশ্বস্ত করা হয়েছে— বাড়িতে কল্লোল এলেই যেন তাঁরা থানায় খবর দেন। তবে তাতেও ভয় পুরোপুরি কাটেনি ওই দম্পতির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy