বিষ্ণুপুরের কাঁকিলা গ্রামে বেসরকারি বিএড কলেজের পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র
শিল্পাঞ্চলের চেনা গন্ডি ছাড়িয়ে এডসের আক্রান্তের কথা আরও বেশি করে উঠে আসছে জেলার ব্লক এলাকাগুলি থেকেও। গত কয়েক বছরে বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলার রিপোর্টে উঠে এসেছে বিষয়টি।
নতুন করে চিন্তায় পড়েছেন জেলা স্বাস্থ্যকর্তারা। তবে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রসূনকুমার দাস বলছেন, “এডস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে এমনটা ধরে নেওয়া ঠিক নয়। বর্তমানে মানুষের মধ্যে সচেতনতা অনেকটাই বেড়েছে। তাই তাঁরা পরীক্ষা করতে নিজেরাই এগিয়ে আসছেন।’’ এটি একটি ভাল দিক বলে মনে করছেন তিনি। বিশ্ব এডস দিবসে তাঁদের বার্তা— আরও বেশি করে সবাই এগিয়ে আসুন রক্ত পরীক্ষা করাতে। রোগ চিহ্নিত হলে এডস লড়াই করতেও সুবিধা হবে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাঁকুড়ায় ৫৯৫ জন এইচআইভি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। মৃত্যু হয়েছে তাঁদের মধ্যে চার জনের। বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলার আওতায় থাকা খাতড়া ও বাঁকুড়া সদর মহকুমায় মোট ৪৪৭ জন ও বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য জেলায় ১৪৮ জন এইচআইভি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, জেলার শিল্পাঞ্চল বড়জোড়া ব্লকে এইচআইভির সংক্রমণ মিলেছে ৫৬ জনের রক্তে। তাঁদের মধ্যে ৩২ জন পুরুষ, ১৯ জন মহিলা ও ৫ জন শিশু।
বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলের তুলনায় অনেক বেশি এডস আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে বাঁকুড়া ১ ব্লকে। সেখানে মোট ৭৭ জনের রক্তে এইচআইভির সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে পুরুষ ৪৩ জন, মহিলা ৩২ জন আর দু’জন শিশু। এই হিসাবই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে বিভিন্ন মহলে। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানান, শিল্পাঞ্চল এলাকায় দূর-দূরান্ত থেকে শ্রমিকেরা আসেন। এডসের খবরও বেশি মেলে। বাঁকুড়া ১ ব্লক জেলার শিল্পাঞ্চল নয়। কিন্তু এই এলাকায় এডস আক্রান্তের সংখ্যা কী ভাবে বাড়ছে, সেই উত্তর এখনও অজানা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশের অভিযোগ, বাঁকুড়া ১ ও বাঁকুড়া ২ ব্লক এলাকার কিছু ধাবায় লুকিয়ে যৌন ব্যবসা হয়। তার থেকেই এমনটা হতে পারে। তবে পুলিশ এই অভিযোগ মানতে নারাজ। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “বাঁকুড়া ১ ব্লকের প্রচুর মানুষ কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। হতে পারে বাইরে থেকেই তাঁরা এই রোগ বহন করে নিয়ে আসছেন। সঠিক ভাবে তদন্ত না করে নিশ্চিত হওয়ার উপায় নেই।’’
জেলা পুলিশের ওই কর্তার মত মেনে নিচ্ছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রসূনবাবুও। তিনি বলেন, “কর্মসূত্রে মানুষ বাইরে যাচ্ছেন। ফলে রোগটি কোথা থেকে শরীরে ঢুকছে তা অনুমানের ভিত্তিতে বলা যাবে না।” শনিবার বাঁকুড়া শহরে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে এডস নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে পদযাত্রা হয়। জেলা স্বাস্থ্য কর্তারা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু, জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস, বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত, উপপুরপ্রধান দিলীপ অগ্রবাল প্রমুখ।
বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ (২) নিলয় চক্রবর্তী বলেন, “যৌন সংসর্গের সময়ে সুরক্ষার জন্য কন্ডোম ব্যবহার করতে বলে আমরা বিভিন্ন স্তরে
প্রচার চালাচ্ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy