দুবরাজপুরে পুরসভা এলাকায় স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের জন্য লাইন। নিজস্ব চিত্র।
এক ফালি কৃষি জমি নিজের নামেই। পরচাও রয়েছে। কিন্তু সরকারি ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্পের আওতায় কী ভাবে আসতে হয়, তা জানতেন না সিউড়ি ২ ব্লকের বনশঙ্কা এলাকার বাসিন্দা লায়লা বিবি। মঙ্গলবার ব্লকের পুরন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ‘দুয়ারে দুয়ারে সরকার’ শিবিরে গিয়েই মুশকিল আসান হল তাঁর। প্রকল্পের আওতায় এসে খুশি লায়লা বিবি।
একই ভাবে দুবরাজপুর ব্লকের যশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে আয়োজিত শিবির থেকে এ দিনই শান্তি ঘোষ এবং শেখ ফজলুর রহমান কৃষক বন্ধু প্রকল্পের আওতায় এসেছেন। অন্য দিকে মুরারই ১ ব্লকের মুরারই পঞ্চায়েতের সারওয়ার বিশ্বাসের জবকার্ড ত্রুটি মুক্ত হয়েছে এ দিনই। এ বার আর ১০০ দিনের কাজ পেতে তাঁর অসুবিধা হবে না।
মঙ্গলবার শুরু হওয়া ‘দুয়ারে দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে খুবই ভাল সাড়া পড়েছে বীরভূমে। শুধু তাৎক্ষণিক সমস্যা মেটানোই নয়, যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও এত দিন যাঁরা খাদ্যসাথী, স্বাস্থ্যসাথী, শিক্ষাশ্রী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, ঐক্যশ্রী, জাতিগত শংসাপত্র, তফসিলি বন্ধু, জয় জোহার, কৃষকবন্ধু এবং ১০০ দিনের কাজের মতো সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প থেকে বঞ্চিত ছিলেন, তাঁরা এ দিন আবেদন জানালেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার প্রতিটি প্রশাসনিক শিবিরে প্রথম দিনই প্রচুর সংখ্যায় আবেদন জমা পড়েছে। তবে, সবচেয়ে বেশি ছিল ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পে নাম তোলার হিড়িক। মোট ১২টি সরকারি প্রকল্পের সুবিধা দিতে (অনলাইন ও অফলাইন) শিবির আবেদন আহ্বান করা হলেও এ দিন জমা পড়া আবেদনের ৭০ শতাংশই ‘স্বাস্থ্যসাথী’-র। জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা মনে করাচ্ছেন, সরকার ঘোষণা করেছে প্রতিটি পরিবার এখন স্বাস্থ্যবিমার সুবিধা পাবে। ফলে যাঁরা এত দিন এই প্রকল্পের বাইরে ছিলন, তাঁরা আবেদন করতে শিবিরে আসবেনই। শিবিরগুলিতে আধিকারিকেরা এলাকার মানুষের থেকে জানতে চেয়েছেন, যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও উল্লিখিত কোন সরকারি প্রকল্পে সুবিধা তিনি পাননি। সম্ভব হলে সেদিনই, না হলে পরের দিন সমস্যা মেটাতে হবে। তার জন্যই অবেদন নেওয়া হয়েছে।
এ দিন মুরারই থেকে খয়রাশোল, প্রতি ব্লকে ও পুরসভায় মিলিত ভাবে মোট ২৫টি শিবিরের প্রতিটিতে চোখে পড়ার মতো লাইন পড়েছিল পুরুষ ও মহিলাদের। মাস্ক ছাড়া প্রবেশ রুখতে কড়া নজরদারি ছিল। পারস্পরিক দূরত্ব বিধি বজায় রাখার দিকেও নজর ছিল পুলিশ-প্রশাসনের।
এ দিন জেলাশাসক বিজয় ভারতী ও জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ পুরন্দরপুরের শিবিরে গিয়ে লাইনে দাঁড়ানো মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। শুধু পুরন্দরপুর নয়, প্রতিটি শিবিরে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিডিও, ওসি এবং সহভাগী দফতরের আধিকারিকেরা। জেলার বিভিন্ন শিবিরের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক ও মহকুমাশাসকেরা।
জেলাশাসক বলেন, ‘‘প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় মোট চার দফায় শিবির হবে। প্রথম দফায় ১১ দিনে ২৭৫টি শিবির হবে। চার ধাপে হবে ১২০০ শিবির। চিহ্নিত প্রকল্পগুলির সুবিধা দিতে আমরা তৈরি।’’ স্বাস্থ্যসাথী, কৃষক বন্ধু এবং জাতিগত শংসাপত্রের জন্য এ দিন আবেদন বেশি হয়েছে বলে জেলাশাসক জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy