Advertisement
১১ মে ২০২৪
TMC

পুরভোটের মুখেই বিজেপিতে প্রভাত

দুবরাজপুরে এ দিন সিএএ-র সমর্থনে ‘অভিনন্দন যাত্রা’ কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি। মিছিল শেষে শহরের পথিকৃত ময়দানে একটি সভা করেন বিজেপি নেতৃত্ব।

দলবদল। নিজস্ব চিত্র

দলবদল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৩৬
Share: Save:

শহরে জল্পনা ছিল, বিজেপি-তে তিনি যাচ্ছেনই। গত বছর জুনে তৃণমূলের শহর সভাপতি পদ ও দল ছাড়ায় পরে সেই জল্পনা আরও জোরাল হয়েছিল। কিন্তু, এ বিষয়ে উচ্চবাচ্য করেননি প্রভাত চট্টোপাধ্যায়। ঠিক পুরভোটের প্রাক্কালে শুক্রবার বিজেপিতে যোগ দিলেন দুবরাজপুরের ওই প্রাক্তন তৃণমল নেতা। যা জেনে শহরের রাজনৈতিক সচেতন মানুষ বলছেন, পুরভোটের লড়াই এ বার জমবে।

দুবরাজপুরে এ দিন সিএএ-র সমর্থনে ‘অভিনন্দন যাত্রা’ কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি। মিছিল শেষে শহরের পথিকৃত ময়দানে একটি সভা করেন বিজেপি নেতৃত্ব। জেলার তাবড় নেতারা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্য নেতা রীতেশ তিওয়ারি। তিনিই মঞ্চে প্রভাতবাবুর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন। বিজেপি-র দাবি, প্রভাতবাবুর মতো অভিজ্ঞ নেতা দলে আসায় শহরে দলীয় সংগঠন আরও মজবুত হবে। মঞ্চ থেকে বিজেপি-র জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল হুঙ্কারও দিয়েছেন, এ বার দুবরাজপুর পুরসভায়
ক্ষমতা দখল করবে তাঁদের দলই! প্রভাতবাবুর দাবি, ‘‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোট হলে, মানুষ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে ১৬টির মধ্যে ১৪টি আসন বিজেপি পাবে।’’

তিন বারের কাউন্সিলর প্রভাতবাবু। তার মধ্যে দু’বার তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন তিনি। হাতের তালুর মতো শহর ও শহরের বাসিন্দাদের চেনেন। প্রথমে কংগ্রেস করলেও তৃণমূল দল গঠিত হওয়ার পর থেকে শহরে তৃণমূলকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন তিনিই। শুধু তাই নয়, রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে ’১৩ সালে পুরভোটের আগে দুবরাজপুরের তিন বারের পুরপ্রধান, কংগ্রেসের পীযূষ পাণ্ডে-সহ বেশ কয়েক জন কাউন্সিলরকে তৃণমূলে নিয়ে আসার নেপথ্যেও ছিলেন সদ্য প্রাক্তন শহর সভাপতি। বিজেপি-তে এ হেন প্রভাতবাবুর যোগদান তৃণমূলের জয়ের রাস্তা কিছুটা কঠিন করবে বলেই মনে করছেন শহরবাসীর একাংশ।

বিষয়টিকে অবশ্য পাত্তা দিতে নারাজ তৃণমূল। শাসকদলের বর্তমান শহর সভাপতি তথা বিদায়ী পুরপ্রধান পীষূষ পাণ্ডে বলেন, ‘‘প্রভাতবাবু অনেক আগেই দল ছেড়েছেন। পুরনির্বাচনে কোনও প্রভাবই উনি ফেলতে পারবেন না। সব ক’টি আসনেই তৃণমূল জিতবে।
তাই কোন দলে উনি যোগ দিলেন সেটা বিষয় নয়।’’

ঘটনা হল, গত বছর লোকসভা ভোটের ফল সামনে আসতেই কপালে ভাঁজ পড়ে শাসক শিবিরের। কারণ, ওই ফলের নিরিখে দুবরাজপুরের ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১১টিতেই তৃণমূল পিছিয়ে ছিল বিজেপি-র কাছে। সেই ঘটনার জন্য দায় নিলেও দলে নিজের কাজ ঠিক ভাবে করেননি প্রভাতবাবু এই অভিযোগে দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ছিল। তৃণমূলের একটা সূত্র বলছে, প্রভাতবাবুর আশায় জল ঢেলে পীযূষবাবুকেই পুরপ্রধান পদে বসায় দল। সেই থেকে প্রকাশ্যে না হলেও দু’জনের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছিল। সামনের পুরভোটে পীযূষবাবুকে সামনে রেখেই লড়তে চায় দল— এই সঙ্কেত স্পষ্ট হতেই প্রভাতবাবু
বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে জল্পনা ছড়ায়। গত বছর জুনে দুবরাজপুরে সেই জল্পনা উস্কে খোদ জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘দুবরাজপুরের শহর সভাপতি কোনও কর্মসূচিতে আসছেন না...শুনছি, তিনি নাকি
গিরগিটি হবেন। সাত দিন সময় দিলাম। দলে থাকতে চাইলে সেই সময়ের মধ্যে ফিরুন। নইলে দলের কিছু আসবে-যাবে না।’’

এর পরের দিনই পুরনো দলের সঙ্গে সব সম্পর্ক চুকিয়ে দেন প্রভাতবাবু। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপি-তে যাননি। অনেকেই বলছেন, সঠিক সময়ের অপেক্ষা করছিলেন। পুর-ভোটের আগে সময়টাকেই উপযুক্ত মনে করলেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Dubrajpur BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE