Advertisement
০২ মে ২০২৪

অঞ্জলির ফাঁকে তিন মহিলার হার ‘ছিনতাই’

পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন শ্রীরামকৃষ্ণের আবির্ভাব তিথিতে প্রতি বছরের মতো কয়েক হাজার ভক্তের ভিড় জমেছিল সেই আশ্রমে। সেই সুযোগই কাজে লাগায় দুষ্কৃতীরা।

অভিযোগকারী মহিলারা। নিজস্ব চিত্র

অভিযোগকারী মহিলারা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৯ ০৩:১৩
Share: Save:

মন্দিরে তখন তুমুল ভিড়। ভক্তদের অনেকে ব্যস্ত অঞ্জলি দিতে। অভিযোগ, ভিড়ের ঠেলাঠেলির সুযোগে তিন মহিলার গলার হার ছিনতাই করে পালাল দুষ্কৃতীরা। শুক্রবার সকালে বোলপুর শ্রী শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রমে।

পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন শ্রীরামকৃষ্ণের আবির্ভাব তিথিতে প্রতি বছরের মতো কয়েক হাজার ভক্তের ভিড় জমেছিল সেই আশ্রমে। সেই সুযোগই কাজে লাগায় দুষ্কৃতীরা।

এ দিন ভোরে মঙ্গলারতির পরে শুরু হয়েছিল পুজো। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অঞ্জলি দেওয়ার সময়ে প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়েছিল আশ্রমের মূল মন্দিরে। আচমকা তিন মহিলা তাঁদের গলার হার ছিনতাই হয়েছে বলে চিৎকার শুরু করেন। ছিনতাইবাজ সন্দেহে এক মহিলাকে ধরে ফেলেন কয়েক জন। মন্দিরের একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ তাঁর সঙ্গে কথা বলেন আশ্রমের লোকেরা। অভিযোগ, ওই মহিলা সঠিক ভাবে নিজের পরিচয়, ঠিকান জানাতে পারেননি। মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে বোলপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ আশ্রমে গিয়ে ওই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিয়ে যায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাছাড়িপট্টির বাসিন্দা বছর ষাটেকের অরুণা ঘোষ শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মতিথিতে পুজো দিতে এসেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ভিড়ের মধ্যে হঠাৎ গলার সোনার হার টেনে নেওয়া হয়। সঙ্গে ছিল সোনার লকেটও। একই অভিজ্ঞতা হয়েছে রামকৃষ্ণ রোডের বাসিন্দা অশোকা গড়াই, ত্রিশূলাপট্টির বাসিন্দা পূর্ণিমা গঙ্গোপাধ্যায়েরও। ছিনতাইয়ের খবর ছড়াতেই আশ্রমের মূল মন্দিরের চাঞ্চল্য ছড়ায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বোলপুর শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রমে বছরে দু’বার বড় উৎসব হয়। একটি শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মতিথিতে। অন্যটি সারদা মায়ের জন্মতিথিতে। ওই দুই তিথিতেই প্রচুর ভক্ত আসেন আশ্রমে। ভক্তদের একাংশের অভিযোগ, এর আগেও দু’বার উৎসবের সময় ভক্তদের সোনার হার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছিল। এ বার একসঙ্গে তিনটি হার ছিনতাই হওয়ার অভিযোগের জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ভক্ত মহলে।

পুলিশ সূত্রে খবর, মন্দিরের প্রবেশপথ ও আশ্রমের স্কুলে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও মূল মন্দিরে কোনও ক্যামেরা নেই। মন্দিরে দু’জন নিরাপত্তাকর্মী রয়েছেন। তাঁদের এক জন আশ্রমের প্রবেশপথ, অন্য জন আশ্রমের স্কুলের অফিসে মোতায়েন থাকেন।

অরুণাদেবী বলেন, ‘‘অঞ্জলি দেওয়ার পরে ঠাকুরকে প্রণাম করছিলাম। আচমকা গলায় টান পড়ে। দেখি গলায় হার নেই। সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার শুরু করি।’’

মন্দির কমিটির সভাপতি সতীনাথ লাহা বলেন, ‘‘মন্দিরের মূল প্রবেশপথে একটি সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও, মন্দিরে ক্যামেরা নেই। দুষ্কৃতীরা সে কথা জানত বলে মনে হয়। তা-ই সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারি না থাকা জায়গাতেই হামলা চালানো হয়েছে। আগামী দিনে মন্দিরের নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হবে। মূল মন্দিরে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর ব্যবস্থাও হবে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, এ নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এক মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Snatching Miscreants
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE