Advertisement
১১ মে ২০২৪

ছ’টি শিশুর ‘স্বাস্থ্য দত্তক’

সূত্রের খবর, বৈঠকে ব্লকের যুগ্ম বিডিও নয়নতারা রক্ষিত অপুষ্টিতে ভোগা কয়েকজন শিশুর ‘স্বাস্থ্য দত্তক’ নেওয়ার প্রস্তাব দেন। সিদ্ধান্ত হয়, ছয় শিশুর ‘স্বাস্থ দত্তক’ নেবেন যুগ্ম- বিডিও, ব্লকের সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের আধিকারিক অরুণাভ মাইতি, প্রকল্পের দুই সুপারভাইজার নন্দা দে এবং সুমিতা পাল, ‘নিউট্রেশন ইনটারভেনশন প্রোগামে’র জেলার ‘কো-অর্ডিনেটার’ স্বাতী দত্ত এবং ব্লকের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকর্তা সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়।

অপুষ্ট শিশুকে কোলে নিয়ে জয়েন্ট বিডিও। নিজস্ব চিত্র

অপুষ্ট শিশুকে কোলে নিয়ে জয়েন্ট বিডিও। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৯ ০১:৫৮
Share: Save:

অপুষ্টিতে ভোগা ছয় শিশুর ‘স্বাস্থ্য দত্তক’ নিলেন প্রশাসন ও সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্পের আধিকারিক, কর্মী-সহ অপুষ্টি নিয়ে কাজ করা সংস্থার সদস্যেরা। মঙ্গলবার রঘুনাথপুর ১ ব্লকে শিশুদের অপুষ্টিজনিত সমস্যা নিয়ে বৈঠক হয়।

সূত্রের খবর, বৈঠকে ব্লকের যুগ্ম বিডিও নয়নতারা রক্ষিত অপুষ্টিতে ভোগা কয়েকজন শিশুর ‘স্বাস্থ্য দত্তক’ নেওয়ার প্রস্তাব দেন। সিদ্ধান্ত হয়, ছয় শিশুর ‘স্বাস্থ দত্তক’ নেবেন যুগ্ম- বিডিও, ব্লকের সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের আধিকারিক অরুণাভ মাইতি, প্রকল্পের দুই সুপারভাইজার নন্দা দে এবং সুমিতা পাল, ‘নিউট্রেশন ইনটারভেনশন প্রোগামে’র জেলার ‘কো-অর্ডিনেটার’ স্বাতী দত্ত এবং ব্লকের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকর্তা সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই ছয় শিশুর বয়স ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর। স্বাস্থ্য দত্তকের অর্থ— অপুষ্টিতে ভোগা ওই শিশুদের পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার দায়িত্ব নেবেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা।

রঘুনাথপুর ১ ব্লকে চরম অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা ৫৩। তুলনায় কম অপুষ্টির শিকার শিশু রয়েছে ১ হাজার ৮৩০ জন। যুগ্ম-বিডিও বলেন, ‘‘সরকারি আধিকারিকেরা চরম অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের ‘স্বাস্থ্য দত্তক’ নিলে প্রশাসনের প্রতি সেই পরিবারগুলির ভরসা বাড়বে। সেই জন্যই আমি ওই প্রস্তাব দিয়েছিলাম।” তাঁর সংযোজন, ‘‘বিডিওর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে সরকারী আধিকারিক ও কর্মীদের স্বাস্থ্যদত্তক বিষয়ে উৎসাহী করা যায়।”

ডুমরাকুড়ি গ্রামের সাথী আগরির ‘স্বাস্থ্য দত্তক’ নিয়েছেন যুগ্ন-বিডিও। ঝরিয়াডির প্রবীর দাস নামে এক শিশুর ‘স্বাস্থ্য দত্তক’ নিয়েছেন অরুণাভবাবু। স্বাতীদেবী বেড়োর রোহিত রায়ের স্বাস্থ্য দত্তক নিয়েছেন। নন্দাদেবী ও সুমিতা পাল নিয়েছেন যথাক্রমে গোসাইডাঙ্গার নিশা মাল ও আলালডির চন্দন বাউরী নামে দুই শিশুর ‘স্বাস্থ্য দত্তক’। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় দুরমুট গ্রামের শিশু রাকেশ বাউরীর ‘স্বাস্থ্য দত্তক’ নিয়েছেন।

সাথী আগরির মা দুর্গামনি আগরি বলেন, ‘‘জন্মের পর থেকেই সাথী অপুষ্টিতে ভুগছে। চিকিৎসক দেখিয়েও ফল হয়নি। সাধ্যমত পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার চেষ্টা করি। প্রশাসনের কর্তারা স্বাস্থ্য দত্তক নিয়ে আরো বেশি পুষ্টিকর খাবার দেবেন বলেছেন। মেয়ে সুস্থ হয়ে উঠবে। এর থেকে ভালো আর কিছু হতে পারে না।”

অপুষ্টির শিকার শিশুদের সুস্থ স্বাভাবিক করে তোলার জন্য সরকারি প্রকল্প রয়েছে। প্রকল্প রূপায়নে ‘মাষ্টার প্ল্যান’ তৈরি হবে। অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের পরিবারগুলির কাছে মাসে অন্তত একদিন করে যাবেন স্বাস্থ্য প্রশাসনের কর্তারা। শিশুরা নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার পাচ্ছে কি না, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাচ্ছে কি না, সেই বিষয়গুলির উপর নজরদারি চালাবেন সংশ্লিষ্ট অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীরা।

অরুণাভবাবু বলেন, ‘‘মাষ্টার প্ল্যান অনুযায়ী কাজ করলে তিন মাসের মধ্যে চরম অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের স্বাস্থ্যের কিছুটা উন্নতি হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health Adoption Child Health Health Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE