সভার ভিড়। নিজস্ব চিত্র
ধর্ম থেকে রাজনীতি, ইডি-সিবিআই থেকে বিরিয়ানি, তৃণমূলের রাজ্য যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রায় ৪৫ মিনিটের বক্তব্যে ধরা থাকল অনেক কিছুই।
শুক্রবার নলহাটি হরিপ্রসাদ হাইস্কুল মাঠের সভা করেন অভিষেক। যুব সভাপতির কথায়, ‘‘ইতিমধ্যে দু’দফায় ভোট শেষ হয়েছে। আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, রায়গঞ্জে তৃণমূল ৫ এ ৫ পাবে। ৩৭টা বাকি আছে। এখন লড়াইটা হচ্ছে ৩৭ এ ৩৭।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘প্রথম দফায় কোমর ভেঙেছি, দ্বিতীয় দফায় হাত ভেঙেছি, তৃতীয় দফায় পা ভাঙব, চতুর্থ দফায় হাড় ভাঙব,পঞ্চম দফায় মাথা ভাঙব। আর শেষ দফায় বলো হরিবোল, ভারতীয় জনতা পার্টিকে খাটে তোল।’’
অভিষেকের বক্তব্যের আগাগোড়াই নিশানায় ছিল বিজেপি। পাঁচ বছর সরকারে থেকেও মানুষের জন্য কিছুই না করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেবল নিজের প্রচার আর গুজরাটে কোটি কোটি টাকা খরচ করে মূর্তি বানানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এই যুবনেতা। বিজেপি বিভাজনের রাজনীতি করে বলেও ফের মন্তব্য করেছেন তিনি। অভিষেকের কথায়, ‘‘এরা বলছে জয় শ্রী রাম। মানুষ বলছে পেট্রোল, ডিজেল, গ্যাসের কেন এত দাম। এরা বলছে জয় শ্রী রাম। মানুষ বলছে ২৩ শে এপ্রিলের পরে থাকবে না দেশে বিজেপির নাম।’’ আরএসএস আর সিপিএম একাকার হয়ে গিয়েছে বলেও দাবি অভিষেকের। তাঁর কথায়, ‘‘যারা আগে হার্মাদ ছিল, তারা আজ আরএসএস করছে।’’
ছুঁয়ে যান ধর্মীয় অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গও। অভিষেকের কথায়, ‘‘আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ পুজো দুর্গাপুজো। সেই দুর্গোৎসবের সময় ভারতীয় জনতা পার্টি কাউকে একটা শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছে? ওরা বলছে ইমাম ভাতা, মোয়াজ্জেম ভাতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার দিচ্ছে। আমাদের দল সর্ব-ধর্ম সমন্বয়ে বিশ্বাস করে। ’’ এই দ্বিচারিতা ভারতবর্ষের মানুষ ধরে নিয়েছেন বলেও মনে করেন অভিষেক।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
মঞ্চ থেকেই অভিষেক সভায় উপস্থিত ১৮ থেকে ৪০ বছরের যুবকদের কাছে প্রশ্ন রাখেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় জওয়ানদের নামে ভোট চাইছেন। কোনও প্রধানমন্ত্রী কি এটা পারেন।’’ এর পরেই কটাক্ষ, ‘‘নওয়াজ শরিফ যখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী তখন শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে গিয়ে বিরিয়ানি খেয়ে এলেন। এখন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও বলছেন, নরেন্দ্র মোদীকে চাই।’’ বিঁধেছেন অমিত শাহকেও। ইডি, সিবিআইয়ের ভয় তৃণমূল পায় না বলেও ফের জানিয়ে দিয়েছেন অভিযেক।
এ দিনের সভায় অভিষেক ছাড়াও তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়, জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এবং জেলা নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
তবে অভিষেকের সভায় কর্মী, সমর্থকদের পৌঁছনো থেকে নানা অব্যবস্থা নিয়ে মেজাজ হারাতে দেখা যায় তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। অভিষেকের নিরাপত্তা কর্মীরা অনুব্রতের নিরাপত্তা কর্মীদেরও নিরাপত্তাজনিত পরীক্ষা করতে করতে গেলে বেজায় চটে যান অনুব্রত। দু’কিলোমিটার দূরে বাস রাখায় সভায় পৌঁছতে দেরি হয় কর্মীদের। তার পরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে সকলকে ঘুরে বেড়াতে দেখে মঞ্চ থেকেই বকাবকি শুরু করেন স্থানীয় নেতাদের। নলহাটির বিধায়ক মৈনউদ্দিন শামস এবং দলের রামপুরহাট মহকুমা পর্যবেক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্যের প্রতি ক্ষোভ উগরে দেন। মুরারইয়ের বিধায়ক আব্দুর রহমানের বক্তব্য চলাকালীন দু-বার থামিয়ে কর্মী, সমর্থকদের সারিবদ্ধভাবে বসার জন্যও বলতে শোনা যায় তাঁকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy