Advertisement
১১ মে ২০২৪

পতাকার সঙ্গে মিল রেখেই সভায় গেরুয়া-সবুজ চেয়ার

প্রথমে লাল, পরে নীল-সাদা রং ছুঁয়ে এ বার সবুজ-গেরুয়ার যুগলবন্দি। সভার ‘রঙে’ বদলটা স্পষ্ট! 

সামঞ্জস্য: পতাকার রং মিলিয়ে চেয়ার। মোদীর সভাস্থলে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

সামঞ্জস্য: পতাকার রং মিলিয়ে চেয়ার। মোদীর সভাস্থলে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

দয়াল সেনগুপ্ত
ইলামবাজার শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৯ ০০:০০
Share: Save:

প্রথমে লাল, পরে নীল-সাদা রং ছুঁয়ে এ বার সবুজ-গেরুয়ার যুগলবন্দি। সভার ‘রঙে’ বদলটা স্পষ্ট!

বুধবার ইলামবাজারের কামারপাড়া মাঠে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী সভায় তেমন ছবিই ধরা পড়ল। সভাস্থলে সার সার দিয়ে সাজানো সবুজ ও গেরুয়া চেয়ার। ছউনির কাপড়ের রংও সবুজ-গেরুয়া। বিজেপি-র দলীয় পতাকার সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্য রেখে। লাল চেয়ার খুঁজেও চোখে পড়েনি। অথচ চলতি জানুয়ারিতে সিউড়িতে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের সভা হওয়ার কথা ছিল। তাঁকে স্বাগত জানাতে গেরুয়া কার্পেট খুঁজতে হন্যে হয়ে পড়েছিলেন বীরভূমের বিজেপি নেতারা। ওই রঙের চেয়ার তো জোটেইনি। জেলার হেন ডেকোরেটর নেই, য়াঁর কাছে বিজেপি নেতারা কমলা রঙের কার্পেট বা চেয়ার খোঁজেননি। অসুস্থতার জন্য শাহ আসতে পারেননি সেই সভায়। তাঁর পরিবর্তে আসা স্মৃতি ইরানিকে স্বাগত জানানো হয় সবুজ কার্পেট দিয়েই।

সেই বীরভূমে চার মাস পরে প্রধানমন্ত্রীর সভায় ছবিটা বিলকুল আলাদা! রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, বাংলার রাজনীতি বরাবরই রং-সচেতন। বাম জমানায় যেমন লাল চেয়ার ছাড়া আর কোনও কিছু কার্যত দেখাই যেত না, ২০১১ সালে পালাবাদলের পর থেকে সবুজ চেয়ার ও কার্পেটের চাহিদা তুঙ্গে উঠেছে। তবে সভাস্থলের কাপড় সব সময়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পছন্দের রং নীল-সাদা করা হয়েছে। লাল তবু সঙ্গে ছিল। কিন্তু, কমলা বা গেরুয়া? এমন চেয়ারের চাহিদা এ রাজ্যে আগে দেখা যায়নি।

দল সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী সভার বরাত পেয়েছিলেন কলকাতার ডেকোরেটর ব্যবসায়ী রাজীব কুমার সিংহ। তিনিই সাজিয়ে তুলেছেন সভাস্থল। রাজীব বলছেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী ৯টি সভার দায়িত্ব পেয়েছি আমি। সবগুলিতেই দলের কথা মেনে গেরুয়া-সুবজ চেয়ার ও কাপড় ব্যবহার হচ্ছে। যখনই মোদীর সভা হবে, তখন এ ভাবেই হবে। সেই মতোই প্রস্তুতি নিয়েছি।’’

জেলার ডেকোরেটরেরাও একই ভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁদের একাংশ বলছেন, বিজেপির চাহিদা মেটাতে সবুজ-গেরুয়া কাপড় তো রেখেইছেন, অনেকে গেরুয়া বা কমলা রঙের চেয়ার আনিয়ে নিয়েছেন ইতিমধ্যেই। বরাত পেলে যাতে সরবরাহ অসুবিধা না হয়।

দুবরাজপুরের ডেকোরেটর সত্যনারায়ণ রুজের কথায়, ‘‘আমরা তো কোনও একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করছি না। যে দলই বরাত দিক, তার হয়েই কাজ করব। তাই সবুজ-গেরুয়া কাপড় ও গেরুয়া চেয়ার কিনে রেখেছি।’’ সিউড়ি শহরের ডেকোরেটর ব্যবসায়ী রথীন মণ্ডল অমিত শাহ, মুকুল রায়-সহ বেশ কয়েক জন নেতার সভার কাজের বরাত পেয়েছেন। তিনি বলছেন, ‘‘রুজিরুটির জন্য সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতেই হবে।’’ রাজনগরের ডেকোরেটোর মালিক শ্রীমন্ত পালও গেরুয়া কাপড় মজুত রাখছেন। বাজার বুঝে খয়রাশোলের এক ডেকোরেটর মালিক তপন কুমার ঘোষ অন্য পথ নিয়েছেন। ‘‘আমি বেশির ভাগ চেয়ার রেখেছি কাঠের রঙের। যে দল চাইবে উপরের কভারটা শুধু বদলে দিলেই হল।’’—হেসে বলছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Politics BJP CPM TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE