ব্লক অফিসে সভাপতি ও সহ-সভাপতি। নিজস্ব চিত্র
দু’পক্ষের টানাপড়েনে শুক্রবার পুরুলিয়ার বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি নির্বাচন অন্য মাত্রা পেয়ে গেল। দু’পক্ষের নেতা-কর্মীদের জমায়েতকে ঘিরে দিনভর উত্তেজনা ছিল পুরোমাত্রায়। তবে, নির্বিঘ্নেই সব মিটেছে। তৃণমূল এবং বিজেপি-কংগ্রেস জোটের সম সংখ্যক সদস্য থাকায় নিয়ম অনুযায়ী লটারি হয়। তাতে সহকারী সভাপতি নির্বাচিত হন বিজেপির গুরুবারি মান্ডি। কয়েক মাস আগে বিজেপি সদস্যদের সমর্থনে কংগ্রেসের রামজীবন মাহাতো বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন।
বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, ‘‘গোড়া থেকেই তৃণমূল বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির দখল পেতে বিজেপি সদস্যদের নানা ভাবে বাধা দিচ্ছিল। আমাদের দলের তরফে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় এখানে অন্তত গণতন্ত্র বজায় রইল। বরাবাজারবাসীর আশাও পূর্ণ হল।’’ অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের বরাবাজার ব্লকের কার্যকরী সভাপতি প্রতুল মাহাতো দাবি করেন, ‘‘বিজেপি মিথ্যা অভিযোগ করছে। ভাগ্য প্রসন্ন নয়। তাই দু’বারেই লটারিতে বিরোধীরা জিতলেন।’’
বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির মোট আসন সংখ্যা ২৮। তার মধ্যে তৃণমূল ১৪টি আসন পায়। বিজেপি ১৩ ও কংগ্রেস একটি আসন পায়। কংগ্রেসের সদস্য বিজেপিকে সমর্থন করায় সভাপতি নির্বাচনের জন্য লটারি করা হয়েছিল। বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করেন, তাঁদের সমর্থনে কংগ্রেসের রামজীবনবাবু লটারিতে সভাপতি হিসেবে জয়ী হলেও প্রশাসন তা মানতে চায়নি। শেষে তাঁরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। কয়েক মাস আগে হাইকোর্ট বিজেপির পক্ষেই রায় দেয়। সভাপতি হন রামজীবনবাবু।
সে দিন পঞ্চায়েত সমিতির অফিসের বাইরে দু’তরফের জমায়েত দেখে সহ-সভাপতি নির্বাচন ঘিরে আগেভাগেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল পুলিশ-প্রশাসন। এ দিন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বরাবাজার-বান্দোয়ান রাস্তায় বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা জমায়েত করেছেন। অন্য দিকে, তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা জড়ো হয়েছেন ডাক বাংলো ময়দানে। চারপাশে পুলিশে-পুলিশে ছয়লাপ। পঞ্চায়েত সমিতির অফিসের দরজার সামনে বাহিনী নিয়ে দাঁড়িয়ে এসডিপিও (মানবাজার) আফজল আবরার, বরাবাজার থানার আইসি সৌগত ঘোষ। পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের পরিচয়পত্র যাচাই করে তবেই ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে ছিলেন মানবাজার মহকুমার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট নীলাঞ্জন তরফদারও।
বিডিও (বরাবাজার) শৌভিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সহ-সভাপতি পদের নির্বাচনের জন্য সভা ছিল। সেখানে দু’তরফের সদস্য সম সংখ্যক হওয়ায় পঞ্চায়েতের নিয়ম অনুযায়ী লটারি করা হয়। একটি বাক্সে দুই প্রার্থীর নাম লেখা কাগজ ছিল। বাইরে থেকে একটি বছর দশের ছেলেকে ডেকে এনে কাগজ তুলতে বলা হয়। তাতে গুরুবারি মান্ডির নাম ওঠে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy