পড়ে নষ্ট হচ্ছে যন্ত্রপাতি। — নিজস্ব চিত্র
উদ্বোধনের পরে চালু হতেই পেরিয়ে গিয়েছিল বছর খানেক। আর মাস কয়েক চলার পরে ২০০৬ সালে ময়ূরেশ্বরের কোটাসুর দুগ্ধ শীতলীকরণকেন্দ্রে সেই যে তালা বন্ধ হয়ে গিয়েছে তা আজও খোলেনি। এর ফলে তালাবন্ধ ওই ঘরে পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে বহু মূল্যবান যন্ত্রপাতি। অভিযোগ, প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই।
২০০৪ সালে ময়ূরেশ্বরের কোটাসুরে ব্লক প্রাণী স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে চার হাজার লিটার দুধ সংরক্ষণের ক্ষমতা বিশিষ্ট ওই শীতলকরণ কেন্দ্রটি বেশ কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে তৈরি হয় সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতির তত্ত্বাবধানে। উদ্দেশ্য ছিল, বিক্রেতারা খরচের বিনিময়ে অবিক্রিত দুধ যাতে ওই শীতলীকরণ কেন্দ্রে সংরক্ষণ করে লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পান। ২০০৫ সালের মার্চ মাসে ওই শীতলীকরণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী আনিসুর রহমান। কিন্তু কেন্দ্রটি চালু করার মুখেই নানা যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে। সেই ত্রুটি সারিয়ে মাস পাঁচেক পরে চালু করা হয় ওই কেন্দ্র। কিন্তু মাস কয়েক চলার পরে ফের একই ত্রুটি দেখা দেওয়ায় পুরোপুরি তালাবন্ধ হয়ে যায় কেন্দ্রটি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বার বার প্রশাসনের দৃষ্টি আর্কষণ করা হয়েছে। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটি মেরামত করে ওই কেন্দ্র চালু করার কোনও ব্যবস্থাই হয়নি।
দুগ্ধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ময়ূরেশ্বরের বলরাম ঘোষ, গদাধর ঘোষরা জানান, ‘‘অনেক সময় চাহিদা না থাকায় দুধ অবিক্রিত থেকে যায়। তখন নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ব্যবসায়ী কিংবা আড়তদারের কাছে নামে মাত্র মূল্যে সেই দুধ বিক্রি করে দিতে হয়। চালু থাকলে ওই সমস্যা হত না। কিন্তু বহুবার প্রশাসনকে জানিয়েও তা চালু করা যায়নি।’’ শুধু দুধ বিক্রেতাদের সমস্যাই নয়, তালাবন্ধ ঘরে নষ্ট হচ্ছে কয়েক লক্ষ টাকার যন্ত্র। ভাঙা জানলা দিয়েই দেখা যায় ভিতরে পড়ে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের যন্ত্রপাতি। বারান্দার এক কোণে পড়ে রয়েছে জেনারেটারটি। কেন্দ্রটি কার্যত স্থানীয় বাসিন্দাদের কৃষি সামগ্রী এবং জ্বালানী সংরক্ষণের জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ওই কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের এক কর্মী জানালেন, ‘‘একেই বলে সরকারি প্রকল্প! ১০ টাকা মেরামতি খরচ বরাদ্দের অভাবে ১০০০ টাকার জিনিস অনায়াসেই নষ্ট করে দেওয়া যায়। অথচ বাড়িতে আমরা ১০০ টাকার চটিও কতবার সারিয়ে পড়ি। মেরামত না হোক নিদেন পক্ষে যন্ত্রপাতিগুলো উদ্ধার করে অন্য কোনও প্রকল্পে লাগানো হলেও কিছু টাকা অন্তত সাশ্রয় হত।’’ সংশ্লিষ্ট ময়ূরেশ্বর ২ নং ব্লকের বিডিও সৈয়দ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘‘ওই প্রকল্প সম্পর্কে কিছু জানা নেই। খোঁজ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে কি করা যায় দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy