স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন—ফাইল চিত্র
কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন থেকে রিপোর্ট এলেও মাড়গ্রামে একের পর এক শিশুমৃত্যুর কারণ এখনও জানতে পারল না স্বাস্থ্য দফতর। মাড়গ্রামের এঁটালোপাড়ায় বমি-পেটব্যথা নিয়ে চার জনের মৃত্যুর পরে মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে আক্রান্ত শিশুদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পাঠিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। মৃতদের একজনের ময়নাতদন্তও করা হয়েছিল। বুধবার সন্ধ্যায় রামপুরহাট ২ ব্লক স্বাস্থ্য দফতরে ট্রপিক্যাল থেকে রিপোর্ট এসে পৌঁছায়। মৃত এক শিশুর ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টও বুধবার সন্ধ্যায় এসে পৌঁছয়। দুটি রিপোর্ট হাতে পেলেও স্বাস্থ্য দফতর এখনই মৃত্যুর কারণ নির্দিষ্ট ভাবে জানতে পারেনি।
রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রপিক্যাল থেকে আসা রিপোর্ট এক এক জনের ক্ষেত্রে এক এক রকম। আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে যারা হাসপাতালে ভর্তি ছিল তাদের এক রকম রিপোর্ট, আবার যাদের বাড়িতে চিকিৎসা চলেছে তাদের রিপোর্ট আলাদা। স্বাস্থ্য অধিকর্তাদের দাবি, ‘‘আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন রকমের রিপোর্ট হওয়ার জন্য এখনই মৃত্যুর কারণ নির্দিষ্ট ভাবে বলা যাবে না। রিপোর্ট নিয়ে আরো বেশি বিশ্লেষণ করা দরকার।’’ তবে জলবাহিত কোনও রোগে মৃত্যু হয়নি বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। কারণ জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর থেকে পরীক্ষায় জলে কোনও জীবাণু পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছেন স্বাস্থ্য দফতর। রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ ত্রিদিব মুস্তাফি বলেন, ‘‘আক্রান্ত শিশুরা সকলেই এখন সুস্থ। ট্রপিক্যাল থেকে আসা বেশির ভাগ রিপোর্টে বিষক্রিয়া থেকে হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সেটা কোনও জীবাণু ঘটিত বিষক্রিয়া না কোনও খাদ্য থেকে বিষক্রিয়া সেটা খুঁজে দেখার চেষ্টা করা হচ্ছে। যে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এসেছে, তা প্রাথমিক রিপোর্ট। তাতে সুনির্দিষ্ট কোনও কারণ বলা নেই। ময়নাতদন্তের বিশ্লেষণ প্রয়োজন। এলাকা থেকে সংগৃহীত খাদ্যের রিপোর্ট এখনও এসে পৌঁছয়নি। তাই হঠাৎ করে মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনই বলা সম্ভব নয়।”
এলাকায় আতঙ্ক অবশ্য কমেনি। এলাকার অনেক শিশুকে তাঁদের পরিবারের লোকজন আতঙ্কে অন্যত্র আত্মীয় পরিজনদের বাড়িতে নিয়ে চলে গিয়েছেন। এর ফলে ওই সমস্ত শিশুরা এখন কোথায় কেমন আছে সেটা স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষে লক্ষ্য রাখা এবং ওই সমস্ত শিশুদের খবর নেওয়াও স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষে মুশকিল হয়ে পড়েছে।
স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশে বুধবার সন্ধ্যায় মাড়গ্রামের এঁটালোপাড়ায় আক্রান্ত শিশু ও মৃত শিশুদের বাড়ি গিয়ে রোগের উপসর্গ নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন বর্ধমান মেডিক্যালের বিশেষজ্ঞ দল। ওই দলে বর্ধমান মেডিক্যালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চিকিৎসকরা ছিলেন।
পরপর শিশুমৃত্যুর ঘটনার পরে স্থানীয় বাসিন্দারা মাড়গ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সব সময়ের জন্য ইন্ডোর পরিষেবা চালু রাখার দাবি রাখেন। স্বাস্থ্য দফতর এলাকার বাসিন্দাদের দাবির কথা মেনে মাড়গ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আরও একজন মেডিক্যাল অফিসার নিয়োগ করেছে। বুধবার থেকে মাড়গ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১০ শয্যার ইন্ডোর পরিষেবা চালু হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy