অমানবিক: পুরুলিয়া শহরের পি এন ঘোষ স্ট্রিটে। নিজস্ব চিত্র
রাস্তার উপরে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবক সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে রইলেন বেশ কিছুক্ষণ। পাশ দিয়ে অনেকে চলে গেলেও কেউ উদ্ধারে এগিয়ে যাননি বলে অভিযোগ। উল্টে অনেকে ওই যুবকের ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পরে পুলিশ গিয়ে বছর চল্লিশের ওই যুবককে উদ্ধার করে পুরুলিয়া মেডিক্যালে ভর্তি করাতে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা জানান তাঁর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার বেলার দিকে পুরুলিয়া শহরের পি এন ঘোষ স্ট্রিটের এই ঘটনায় শহরের অনেকেই তাজ্জব। কেন ওই যুবককে কেউ উদ্ধার করতে এগিয়ে গেলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, খালি গা ও বারমুডা পড়া ওই যুবক বেলা প্রায় সাড়ে এগারোটা নাগাদ রাস্তার উপরে আচমকা পড়ে যান। তিনি জল খেতে চাইলে কেউ এক জন জলের বোতল এগিয়ে দেন। তারপরেই জ্ঞান হারান তিনি। রাস্তার উপরেই পড়ে থাকেন। পাশ দিয়ে হেঁটে যান পথচারীরা। চলে যায় গাড়িও। কিন্তু কেউ তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে যাননি বলে অভিযোগ। বরং তাঁকে ওই অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে অনেকের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়।
স্থানীয়েরা জানান, ওই যুবককে মাঝে মধ্যে এলাকায় দিনমজুরি করতে দেখা যেত। তবে তাঁর নাম, পরিচয় কেউ জানাতে পারেননি। সেখান থেকে পুরুলিয়া সদর থানা খুব বেশি দূরে নয়। খবর পেয়ে পুলিশ কর্মীরা গিয়ে গ্লাভস পরে এলাকায় জীবাণুনাশক ছড়িয়ে ওই যুবককে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু ততক্ষণে সময় আরও গড়িয়ে গিয়েছে।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘খবর পাওয়ার পরেই দ্রুত ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাবার পরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানান। ওই ব্যক্তির পরিচয় খোঁজা হচ্ছে।’’ পুরুলিয়া পুরসভার প্রশাসক তথা বিদায়ী পুরপ্রধান সামিমদাদ খান বলেন, ‘‘করোনা নিয়ে ভয় থাকলেও মানবিকতা ভুললে চলবে না। অত্যাধিক গরম বা অন্য কোনও শারীরিক সমস্যাতেও কেউ রাস্তায় জ্ঞান হারাতে পারেন। নিজে না ছুঁতে চাইলে পুরসভাকে জানাতে পারে। পুলিশ বা হাসপাতালেও জানাতে পারতেন। কে জানে, সময় নষ্ট না করে দ্রুত ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারলে হয়তো প্রাণে বাঁচানো যেত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy