বাসস্ট্যান্ডে জমায়েত। —নিজস্ব চিত্র।
একই দলের দু’টি মিছিল। যার জেরে বৃহস্পতিবার দিনভর যানজটে জেরবার হলেন বিষ্ণুপুরের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, শাসকদলের দুই নেতার দ্বন্দ্বেই সকাল ও দুপুরে আলাদা করে দু’টি মিছিল বেরোল। তাঁদের শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টার জন্য গাঁ-গঞ্জ উজিয়ে অনুগামীদের নিয়ে আসা হয়েছে। পথে বেরিয়ে নাকানি-চোবানি খেয়ে তার খেসারত দিতে হয়েছে আমজনতাকে। দুই নেতা বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টাচার্য ও পুরপ্রধান শ্যাম মুখোপাধ্যায় এক সঙ্গে মিছিল করতে না পারার জন্য পরস্পরকে দুষেছেন।
কংগ্রেসের টিকিটে লড়া তুষারবাবু বিধানসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী শ্যামবাবুকে পরাজিত করার পর থেকেই দুই নেতার আকচাআকচি দেখছেন শহরবাসী। দলের কর্মীরা জানাচ্ছেন, পরে তুষারবাবু তৃণমূল শিবিরের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় দুই নেতার সম্পর্ক তিক্ত হয়েছে বই কমেনি। নানা ঘটনায় তা বারবার সামনে এসেছে।
ব্রিগেডের জনসভার জন্য দুই নেতা আলাদা ভাবে মিছিল করতে চলেছেন শুনে বুধবারই তাঁদের নিয়ে বৈঠক করতে বিষ্ণুপুরে এক রাজ্য যুব নেতা ছুটে আসেন বলে জানিয়েছেন দুই নেতা। কিন্তু, তা ফলপ্রসূ হয়নি। এ দিন সকালে মহকুমা অফিসের সামনে থেকে তুষারবাবুর নেতৃত্বে মিছিল শুরু হয়। বিধায়কের সঙ্গে সামনে ছিলেন উপপুরপ্রধান বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায়, কাউন্সিলর দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। সেই মিছিলে মড়ার, বাঁকাদহ, বেলশুলিয়া, অযোধ্যা, ভড়া, লায়েকবাঁধ, দ্বারিকা, উলিয়ারা, রাধানগর প্রভৃতি গ্রাম থেকে কয়েক হাজার মানুষ যোগ দেন বলে নেতৃত্বের দাবি।
আবার দুপুর গড়াতেই আবার দুপুর গড়াতেই বিষ্ণুপুরে ঢুকতে শুরু করে একের পর বাস, ট্রাক, ট্রেকার, ভ্যান। সওয়ারীরা সবাই শ্যামবাবুর অনুগামী। শ্যামবাবুর ঘনিষ্ঠদের দাবি, বিভিন্ন জায়গা থেকে ১০০টি মোটরবাইক, ২৫টি বাস, শতাধিক ভ্যান ও একাধিক ছোটগাড়ি ভর্তি কর্মীরা এসেছেন। তাঁদের নিয়ে শ্যামবাবুর নেতৃত্বে মিছিল শহর পরিক্রমা করে।
এক সঙ্গে মিছিল করা গেল না কেন?
তুষারবাবুর দাবি, ‘‘এক সঙ্গে মিছিল করার জন্য এক রাজ্য নেতা আমাদের নিয়ে বসেছিলেন। কিন্তু, পুরপ্রধান রাজি হননি। তাই মানুষের সমস্যা হবে জেনেও আমি আলাদা ভাবে মিছিল করেছি।’’ তাঁর অভিযোগ, শহরের বিভিন্ন জায়গায় ব্রিগেড সমাবেশের জন্য তাঁর কর্মীরা হোর্ডিং লাগিয়েছিলেন। সেগুলি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে।’’
আবার শ্যামবাবু বলছেন, ‘‘রাজনৈতিক কারণে বিধায়কের সঙ্গে আমার মতপার্থক্য দীর্ঘ দিনের। সে কারণে মতান্তর থাকাটাই স্বাভাবিক। আমি বরাবর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল করে এসেছি। এদিক-ওদিক করি না। আমার কর্মী-সমর্থকরাই আমার সম্পত্তি। তাই এক সঙ্গে মিছিল করা সম্ভব হল না।’’
যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁয়ের বক্তব্য, ‘‘আলাদা ভাবে তাঁরা মিছিল করতেই পারেন। তাঁরা কী বলছেন জানি না। তবে, তাঁদের মধ্যে রাজনৈতিক মতপার্থক্য নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy