Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ছক কষেই ভিড় সামাল বাঁকুড়ায়

বাঁকুড়ার লালবাজার সর্বজনীনের সম্পাদক মনোজ সরকার বলেন, “আমাদের স্বেচ্ছাসেবকদের সে ভাবে খাটতেই হয়নি। হাজার হাজার মানুষের ভিড় পুলিশ কর্মীরা দক্ষতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করেছেন। এত ভাল পরিষেবা কোনও বছর পাইনি।”

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৩৫
Share: Save:

যেন পরীক্ষা শেষ হল! পুজোর ভিড় নিয়ন্ত্রণের পরে এমনই স্বস্তির ছাপ দুই জেলা পুলিশের চোখে-মুখে। আর যাঁরা এই পরীক্ষা নিলেন, সেই আমজনতাও জানিয়ে দিলেন, পুলিশ বাহিনী সাফল্যের সঙ্গেই উত্তীর্ণ হয়েছে। পুজোর চারটে দিন শহরের পথেঘাটে যানজটের সমস্যা যেমন কম ছিল, তেমনই খোলা মনে ঠাকুর দেখায় মজে ছিলেন সাধারণ মানুষ।

এ বারও বাঁকুড়া শহরে থিম পুজো কম ছিল না। গা ছমছমে ‘দৈত্য গুহা’ থেকে ‘বিরাট দুর্গা’ প্রতিমা, কত কী ছিল। তাই সকাল থেকে মাঝরাত পর্যন্ত ভিড় উপচে পড়েছে পুজো মণ্ডপগুলিতে। তেমনই আঁচ করেছিল পুলিশ ও পুজো উদ্যোক্তরা। তাই পুজোর আগে থেকে দফায় দফায় পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠক করে পরিকল্পনা কষা হয়েছিল।

বাঁকুড়ার লালবাজার সর্বজনীনের সম্পাদক মনোজ সরকার বলেন, “আমাদের স্বেচ্ছাসেবকদের সে ভাবে খাটতেই হয়নি। হাজার হাজার মানুষের ভিড় পুলিশ কর্মীরা দক্ষতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করেছেন। এত ভাল পরিষেবা কোনও বছর পাইনি।”

বাঁকুড়ার সিনেমা রোড সর্বজনীনের সদস্য রুদ্র চৌধুরীর কথায়, “আমাদের বিরাট দুর্গা প্রতিমা দেখতে মানুষের ঢল সামলাতে পারব কি না, তা নিয়ে চিন্তা ছিল। তবে পুলিশের সক্রিয়তায় কোনও অসুবিধাই হয়নি।” বাঁকুড়া শহরের নাজিরবাঁধ লেনের বাসিন্দা অর্পিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ঠাকুর দেখা এতটা সুষ্ঠ ভাবে হবে, ভাবতেই পারিনি।’’ পাঠক পাড়ার বাসিন্দা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “অলিগলিতেও বেশ পুলিশ ছিল। তাই যানজট থেকে রেহাই পেয়েছি।’’

অন্য বছরের তুলনায় এ বারের পুজোর ভিড় নিয়ন্ত্রণে বাঁকুড়া পুলিশের পার্থক্য কোথায় ছিল? পুজো কর্তারা জানাচ্ছেন, এ বার মণ্ডপের ভিতর থেকে বাইরের রাস্তা— সর্বত্রই পুলিশ কর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতিই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। ‘নো এন্ট্রি’ রাস্তায় পুলিশের ভাল কড়াকড়ি থাকায় যানবাহন নিয়ে মণ্ডপের আশেপাশে কেউ ঘেঁষতে পারেননি। ঠিক সময় মেনে দর্শনার্থীদের মণ্ডপে ঢোকা ও বের করার কাজ করেছেন পুলিশ কর্মীরাই।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু বাঁকুড়া শহরের ভিড় সামলাতে অন্যান্য থানা থেকে অতিরিক্ত ২০০ জন সিভিক ভলান্টিয়ার ও ১৯৩ জন পুলিশ আনা হয়েছিল। বাঁকুড়া সদর থানার আইসি রাজর্ষি দত্ত বলেন, “পুলিশ সুপারের নির্দেশ মতো ছক কষে ভিড় সামলানো হয়েছে।’’

বিষ্ণুপুর শহরের বছরভর অন্যতম সমস্যা যানজট। প্রতিবারই এই শহরে ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে ভিড়ে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় হয় সাধারণ মানুষের।

এ বার অবশ্য আলাদা চিত্রই দেখা গিয়েছে। শহরের যানজট প্রবণ এলাকাগুলিতে বেশি সংখ্যায় পুলিশ ছিল। বিষ্ণুপুরের আইসি আস্তিক মুখোপাধ্যায় বলেন, “গত বছর পুজোয় ভিড় সামলাতে খুব মুশকিল হয়েছিল। তা থেকে শিক্ষা নিয়েই পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম।’’

বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “অন্য বারের তুলনায় এ বার আমাদের হাতে পুলিশ কর্মী কম ছিল। সবাই জান লড়িয়ে কাজ করেছেন। সেই সঙ্গে গতবারের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা ভিড় নিয়ন্ত্রণ করেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE