Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

স্লোগান, মিছিলে প্রতিবাদ চলছেই

প্রায় দু’শো মানুষ ওই মিছিলে যোগ দেন।  উদ্যোক্তাদের পক্ষে, আসিব ইকবাল এবং রেজাউল শেখ জানান, প্রতিবাদে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন। মিছিল হয়েছে নানুরের বাসাপাড়া এলাকাতেও। স্থানীয় মসজিদ থেকে বোলপুর সড়ক পর্যন্ত মিছিল হয়। উদ্যোক্তারা জানান, মিছিলে হাজার দেড়েক মানুষ যোগ দেন।

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ নলহাটির ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ নলহাটির ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদন
নলহাটি শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৯:২৪
Share: Save:

‘নো সিএবি, নো এনআরসি’— আওয়াজ তুলে জেলায় আরও ছড়াল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি-র (এনআরসি) প্রতিবাদ। শুক্রবার মিছিল হয়েছে ময়ূরেশ্বর, সোঁতসাল, বোলপুর, ইলামবাজার, সদাইপুর সহ নানা প্রান্তে। নলহাটিতে প্রায় দেড় ঘণ্টা জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। টায়ার জ্বালিয়ে চলে বিক্ষোভ। অবরোধে যানজটও হয়।
সিএবি, এনআরসি-র প্রতিবাদে মিছিল করেন ময়ূরেশ্বরের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ জনের একাংশ। নমাজের পর ময়ূরেশ্বরের বড়ো মসজিদ থেকে থানা মোড় পর্যন্ত মিছিল করেন তাঁরা। প্রায় দু’শো মানুষ ওই মিছিলে যোগ দেন।
উদ্যোক্তাদের পক্ষে, আসিব ইকবাল এবং রেজাউল শেখ জানান, প্রতিবাদে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন। মিছিল হয়েছে নানুরের বাসাপাড়া এলাকাতেও। স্থানীয় মসজিদ থেকে বোলপুর সড়ক পর্যন্ত মিছিল হয়। উদ্যোক্তারা জানান, মিছিলে হাজার দেড়েক মানুষ যোগ দেন।

নলহাটিতে জাতীয় পতাকা হাতে শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটে থেকে পাঁচটা পর্যন্ত অবরোধ করেন হাজারখানেক মানুষ। টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। ফলে রাস্তায় সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পরে যানবাহন। বিল পাশের পরে বৃহস্পতিবার দুটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বাইশ মিনিট রেল অবরোধ করেছিল। এ দিনের বিক্ষোভকরীদের বক্তব্য, ‘‘জনবিরোধী এই বিল
এক সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে অবিচার করছে। কেন্দ্রীয় সরকার
এই বিল প্রত্যাহার না করলে আন্দোলন চলবে।’’

হঠাৎ অবরোধের ফলে থমকে যায় যান চলাচল। বহরমপুর, রঘুনাথগঞ্জ ও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বাস অবরোধে আটকে যায়। উত্তরবঙ্গ থেকে আসানসোল ও কলকাতামুখী বাস ও ছোট গাড়িও আটকে যায়। পরে নলহাটি পুলিশ এসে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করে। বাসের যাত্রী সামিরুল শেখ বলেন, ‘‘এই বিলের জন্য আন্দোলন দরকার। কিন্তু, রাস্তা অবরোধের ফলে আমার মতো অনেক মানুষের অসুবিধে হতে পারে। আন্দোলনকারীরা এই বিষয়টি একটু গুরুত্ব দিয়ে দেখলে ভাল হয়।’’
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে আনারুল শেখ, শহিদুল ইসলাম, তহিদুল শেখরা বলেন, ‘‘কয়েক পুরুষ ধরে ভারতে রয়েছি। কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকার বিভাজনের রাজনীতি করছে। আমরা তা হতে দেব না। সব সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেমিশে ভারতে থাকবে। বিল প্রত্যাহার না-হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।’’

সদাইপুরেও ক্ষোভ তীব্রতর হচ্ছে। পূর্ব ঘোষণা মতো জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দ সংগঠনের তরফে শুক্রবার বিকেলে এনআরসি, সিএবি বিরোধী সমাবেশ হয় সদাইপুর থানার সাহাপুর ফুটবল মাঠে। সমেবত হয়েছিলেন বহু মানুষ। অনেকের হাতে ছিল নো-এনআরসি, নো-সিএবি লেখা পোস্টার। ক্ষোভ উগরে দেন উপস্থিত নেতারা। শুধু সমাবেশ নয়, বিশাল মিছিল সাহাপুর সেলারপুর কুইঠা এই তিনটি গ্রাম ছুঁয়ে যায়। মিছিলে যোগ দেন হিন্দুরাও। সন্ধ্যার মুখে একই দাবিতে সদাইপুর থানার পানুরিয়া মোড়ে ৬০ জাতীয় সড়ক অবরোধ করে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ চালান কিছু বাসিন্দা। সিপিএমের এরিয়া কমিটির তরফেও শুক্রবার সিউড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নাগরিক সংশোধনী বিল বিরুদ্ধে একটি পথসভা হয়।

মহম্মদবাজার ব্লকের সোঁতসাল এলাকাতেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে আলিনগর জুম্মা মসজিদের সামনে থেকে বের করা হয় সিএবি ও এনআরসির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল। মিছিল আলিনগর জুম্মা মসজিদের সামনে থেকে শুরু করে সোঁতসাল বাসস্ট্যান্ড হয়ে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে এলাকা ঘুরে ফের আলিনগর জুম্মা মসজিদ প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। এতে প্রায় আধ ঘণ্টা যানজট হয় ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে। রাস্তা দিয়ে মিছিল যাওয়ার কারণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের সহযোগিতায় সমাধন হয়। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে জামশেদ আলি বলেন, ‘‘এই আইন মানুষের উপকার না করে হিন্দু-মুসলিমের বিভেদ সৃষ্টি করছে। পশ্চিমবাংলার মানুষে কোনও বিভেদ নেই। আমরা সকলেই ভাই ভাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CAB NRC Birbhum
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE