Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

হাজার শ্রমিক ২৩টি ট্রেনে, স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই

রামপুরহাট স্টেশনে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার পর্যন্ত মোট ২৩টি ট্রেন ঢোকে।

রামপুরহাট স্টেশনে, শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

রামপুরহাট স্টেশনে, শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২০ ০৩:১১
Share: Save:

ট্রেন ঢুকেছে স্টেশনে। শ্রমিক বোঝাই স্পেশ্যাল ট্রেন। যাত্রীরা ট্রেন থেকে নেমে সরকারি নিয়মকানুনের গেট পেরিয়ে সরকারি নিভৃতবাসে যাওয়ার জন্য বাস বা গাড়ির লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। কিন্তু গোটা প্রক্রিয়াটির মধ্যে স্বা স্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। স্যানিটাইজারে হাত পরিষ্কার করা নেই, মাস্ক নেই, পারস্পরিক দূরত্বটুকুও নেই। নামমাত্র থার্মাল স্ক্রিনিং-এর ব্যবস্থা আছে।

রামপুরহাট স্টেশনে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার পর্যন্ত মোট ২৩টি ট্রেন ঢোকে। রেলপুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে এই সময়ের মধ্যে এক হাজারেরও বেশি যাত্রী এই স্টেশনে নেমেছেন। যাঁদের কারও বাড়ি মাড়গ্রাম, লাভপুর, ইলামবাজার, মুরারই, দুবরাজপুরেরর প্রত্যন্ত গ্রামে। কিন্তু বাড়ির পথে নয়, তাঁদের হাতে চিহ্ন এঁকে নিভৃতবাসে পাঠানোর কথা ছিল। শুক্রবার সকালে দেখা গেল, লম্বা লাইনে এ ওর ঘাড়ের উপর ব্যাগপত্র নিয়ে পড়ছে, কথা বলছে মুখের কাছে মুখ এনে। বারণ করার কেউ নেই। চিহ্নিতকরণেরও কোনও ব্যবস্থা নেই। যদিও রামপুরহাটের এসডিপিও সৌম্যজিৎ বড়ুয়াকে এ দিন স্টেশনে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিভৃতবাসে পাঠানোর ব্যাপারে তদারকি করতে দেখা যায়।

এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ জয়পুর থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের বেশ কয়েকজনকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। মুর্শিদাবাদের কান্দির বাসিন্দা ওই শ্রমিকেরা অভিযোগ করেন, ২৬ মে জয়পুর থেকে ট্রেন ছেড়েছিল। নিউজলপাইগুড়ি অবধি ট্রেনটি যাওয়ার কথা। কিন্তু বর্ধমান ও রামপুরহাট স্টেশনে ট্রেনটি দাঁড়ায়নি। ২৮ মে নিউজলপাইগুড়ি স্টেশনে পৌঁছয় ট্রেনটি। ওই শ্রমিকেরা নামতে না পেরে নিউ জলপাইগুড়ি অবধি চলে গিয়েছিলেন। ২৯ মে রাত্রি ১২ টা ১০ নাগাদ ট্রেনটি ফের নিউ জলপাইগুড়ি থেকে রওয়ানা দেয়। শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ রামপুরহাট স্টেশনে ট্রেনটি থামে। রেলপুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ট্রেনটি থেকে ২৬ জন যাত্রী নামেন। ঠিক একই সময়ে মুম্বই থেকে মালদহগামী একটি ট্রেন রামপুরহাট স্টেশনে পৌঁছয়। ঐ ট্রেনটি থেকে ১০০ জন যাত্রী রামপুরহাট স্টেশনে নামেন। তারও আগে এ দিন সকালে কেরালা থেকে একটি ট্রেন রামপুরহাট স্টেশনে পৌঁছয়। সেটি থেকে ২৪ জন যাত্রী নামেন।

তারাপীঠের কাশীপুর গ্রামের বাসিন্দা সবুর শেখের মতো অনেকে অনেক সকালে বা শেষ রাতে পৌঁছেও প্রতীক্ষায় থেকেছেন নিভৃতবাসে নিয়ে যাওয়ার গাড়ির জন্য। এ দিন সকালে স্টেশনের বাইরে দক্ষিণবঙ্গ পরিবহন সংস্থার সাতটি বাস দাঁড়িয়ে

থাকতে দেখা যায়। দুটি বেসরকারি বাস এবং বেশ কয়েকটি ছোট গাড়িও ছিল এই পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে যাওয়ার জন্য। আগত যাত্রীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য পাঁচ-ছ জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটরও ছিলেন। লাইনেও অধৈর্য হয়ে যাওয়া শ্রমিকেরা শৃঙ্খলা মানছিলেন না বলে পুলিশ বারবার হাঁকাহাঁকি করছিল। ব্যবস্থা থাকলেও নজরে পড়েনি স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনও লক্ষণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE