স্বস্তি: সিউড়িতে তনুশ্রী পাত্র। নিজস্ব চিত্র
উপভোক্তা বিষয়ক দফতর ও প্রশাসনের তৎপরতায় পরীক্ষায় বসতে পারলেন প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণের (ডিএলএড) এক ছাত্রী। বহু আবেদন নিবেদনের পরে পরীক্ষায় বসতে পেরে ভীষণ খুশি তনুশ্রী পাত্র নামে ওই ছাত্রী।
কোথায় সমস্যা, কী ভাবেই বা মিটল?
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তনুশ্রীর বাড়ি ঝাড়খণ্ডের রানিশ্বর থানার মহিষবাথান গ্রামে। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার যোগ্যতামান অর্জনের জন্য ২০১৫ সালের জুন মাসে সিউড়ির একটি বেসরকারি ডিএলএড (ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টরি এডুকেশন) কলেজে ভর্তি হন তিনি। বৃহস্পতিবার সকলে সকলে অ্যাডমিড হাতে পেলেও পাননি কেবল ছাত্রী। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় ঝাড়খণ্ড বোর্ড থেকে আসা ওই ছাত্রীর উচ্চমাধ্যমিকে ইংরাজি না থাকায় রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেয়নি। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তনুশ্রীর।
এমন সময়ে কেউ উপভোক্তা বিষয়ক দফতরে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। সমস্যা বুঝিয়ে বলতেই সক্রিয় হন দফতরের কর্তারা। তনুশ্রীকে তাঁরা নিয়ে যান অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) রঞ্জনকুমার ঝা-এর কাছে। তারপর নিয়ে যাওয়া হয় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদেও। প্রশাসনের তৎপরতায় শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটায় ওই ছাত্রীকে পরীক্ষায় বসার অমুমতি দেয় পর্ষদ।
ওই ছাত্রীর কথায়, ঝাড়খণ্ড বোর্ডে কেউ উচ্চমাধ্যমিক দিলে তাঁর ইংরাজী রাখা আবশ্যক নয়। বদলে সে ৫০ নম্বরের বাংলা ও ৫০ নম্বরের হিন্দি রাখতে পারে। অনুশ্রীর কথায়, ‘‘আমারও তাই ছিল। কিন্তু যখন বেসরকারি কলেজে ভর্তি হই, তখন কোনও প্রশ্ন তোলা হয়নি। তা হলে শেষ কেন এমনটা করা হবে?’’
এই প্রশ্নটাই বড় করে দেখেছিলেন উপভোক্তা বিষয়ক দফতরের বীরভূম আঞ্চলিক অফিসের সহ অধিকর্তা বিজয়কৃষ্ণ চৌধুরী, উপভোক্তা কল্যাণ আধিকারিক অদ্রিজা চক্রবর্তীরা। তাঁরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, একটি অস্বচ্ছল পরিবারে বিয়ে হয়েছে তনুশ্রীর। দু’টি শিশু সন্তানও রয়েছে।
সংসারের হাল ফেরানোর জন্যই বহু কষ্টে পড়াশোনা চালাচ্ছে। বিজয়কৃষ্ণবাবুর কথায়, ‘‘সমস্যাটা ফোরামে তুলে কলেজকে জরিমানা করলেও দু’টো বছর ফেরানো যেত না। তাই প্রথম কাজ ছিল পরীক্ষায় বসার ব্যবস্থা করা। প্রশাসনের কাছে দৌড়ে যাই। তাতেই কাজ হল।’’
শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে পরীক্ষা। একেবারে শেষলগ্নে সেই পরীক্ষায় বসার অনুমতি পেয়ে খুশি তনুশ্রী। তাঁর কথায়, ‘‘প্রশাসনের কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। এ বার পরীক্ষাটা ভাল করে দিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy