Advertisement
১১ মে ২০২৪

আবর্জনা জমলে জরিমানা

সোনামুখীর পুরপ্রধান সুরজিৎ মুখোপাধ্যায় জানান, শহর লাগোয়া প্রায় সাত একর জায়গা জেলা প্রশাসন পুরসভাকে চিহ্নিত করে দিয়েছে। সেখানেই এখন আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। তবে বিষ্ণুপুর পুরসভার বর্জ্য ফেলার জায়গা নিয়ে সমস্যা এখনও মেটেনি। প্রায়ই জঙ্গলে আবর্জনা ফেলা হয় বলে অভিযোগ।

মাঝে মধ্যেই ওই সব শহরের পথে দিনের পর দিন আবর্জনার স্তূপ জমে থাকার অভিযোগ ওঠে। ফাইল চিত্র।

মাঝে মধ্যেই ওই সব শহরের পথে দিনের পর দিন আবর্জনার স্তূপ জমে থাকার অভিযোগ ওঠে। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৪৪
Share: Save:

শহরকে আবর্জনামুক্ত না করতে পারলে পুরুলিয়ার তিনটি পুরসভাকে জরিমানা করা হবে বলে জানিয়ে দিয়ে গেলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের প্রধান সচিব সুব্রত গুপ্ত। শনিবার পুরুলিয়ার সার্কিট হাউসে পুরুলিয়া, ঝালদা ও রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান, কাউন্সিলর ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে আবর্জনা-মুক্ত শহর গড়তে সরকারের এমনই কড়া অবস্থানের কথা জানান প্রধান সচিব।

জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘শুধু পুরসভাই নয়, আবর্জনা সাফাই নিয়ে গাফিলতি প্রমাণিত হলে পুরপ্রধান, উপপুরপ্রধান থেকে আধিকারিকেরাও জরিমানার মুখে পড়তে পারেন। গ্রিন ট্রাইবুনালের এমনটাই বিধি। সবাইকে তা মানতে হবে।’’

পুরুলিয়ার মতো বাঁকুড়া জেলাতেও বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর ও সোনামুখী পুর কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বৈঠকে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট) দ্রুত শুরু করার নির্দেশ দেন প্রধান সচিব।

ঘটনা হল, দুই জেলার ছ’টি পুরসভার মধ্যে শুধু মাত্র বাঁকুড়া পুরসভারই আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। সম্প্রতি সোনামুখীও জমি পেয়েছে। বাকি পুরসভাগুলির ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জমি নেই। পরিস্থিতি এমনই যে মাঝে মধ্যেই ওই সব শহরের পথে দিনের পর দিন আবর্জনার স্তূপ জমে থাকার অভিযোগ ওঠে। বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস দ্রুত বিষ্ণুপুরের সমস্যা মেটানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

প্রশাসন সূত্রে খবর, সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট বা আবর্জনা সাফাইয়ের বিষয়ে বৈঠকে জোর দেওয়া হয়। সাফাই বা নিকাশির কাজ ‘গ্রিন ট্রাইবুনাল’-এর নিয়ম মেনে না করায় ইতিমধ্যে রাজ্যকে একাধিকবার জরিমানা দিতে হয়েছে বলে কর্তারা জানিয়েছেন।

শহর বাড়লেও আবর্জনা সাফাই স্থায়ী সমস্যা হয়ে উঠেছে। পুরুলিয়ার পুরপ্রধান সামিমদাদ খান জানান, শহরের বাইরে ছড়রার পরিত্যক্ত এয়ারস্ট্রিপের কাছে জমি পেয়ে পুরসভা আবর্জনা ফেলছিল।

কিন্তু এয়ারস্ট্রিপ চালু নিয়ে আলোচনা শুরুর পরে সেই জমি পুনরায় ফিরিয়ে নেয় প্রশাসন। নতুন করে ডুঁড়কু গ্রামের অদূরে জমির খোঁজ দিয়েছে। কিন্তু কাছেই মন্দির থাকায় ও মেলা বসে বলে সমস্যার আশঙ্কায় সেখানে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে না। বর্তমানে ভাড়া নেওয়া জমিতে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘যা পরিস্থিতি আবর্জনা-মুক্ত না করা গেলে এ বার আমাদের বরাদ্দ থেকে জরিমানার টাকা কেটে নেওয়া হবে। ফের প্রশাসনের কাছে জমি চাইব।’’

রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত এলাকায় জমি চিহ্নিত হলেও আমাদের হস্তান্তর করা হয়নি। তাই ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরি করা যায়নি। শহরের বাইরে ময়লা ফেলা হচ্ছে। দেখছি কত দ্রুত সমস্যা মেটানো যায়।’’
ঝালদার পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকার বলেন, ‘‘যেখানে ফাঁকা পাই, সেখানেই এখন আমরা আবর্জনা ফেলি।’’ তিনি জানান, প্রশাসন ২ নম্বর ওয়ার্ডে ইচাগ রোডে কিছু জমি দিলেও তা নিয়ে বন দফতর আপত্তি জানিয়েছে। আগামী সোমবারই তিনি প্রশাসনের কাছে জমি চেয়ে চিঠি দেবেন বলে জানিয়েছেন।

সোনামুখীর পুরপ্রধান সুরজিৎ মুখোপাধ্যায় জানান, শহর লাগোয়া প্রায় সাত একর জায়গা জেলা প্রশাসন পুরসভাকে চিহ্নিত করে দিয়েছে। সেখানেই এখন আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। তবে বিষ্ণুপুর পুরসভার বর্জ্য ফেলার জায়গা নিয়ে সমস্যা এখনও মেটেনি। প্রায়ই জঙ্গলে আবর্জনা ফেলা হয় বলে অভিযোগ। বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান শ্যাম মুখোপাধ্যায় বলেন, “শহরের ভিতরে জায়গা নেই। প্রশাসন কাছাকাছি জমি খুঁজছে। আমরা আশাবাদী শীঘ্রই তা পাওয়া যাবে।”

বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত বলেন, “ডিসেম্বরের মধ্যেই বাড়ি বাড়ি পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য আলাদা ভাবে সংগ্রহ করার কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান সচিব। আমরা উদ্যোগী হয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bankura Purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE