মন্ত্রী-উবাচ: বাঁকুড়ার সারেঙ্গার কুসুমটিকরি গ্রামে বুধবার একটি জল প্রকল্পের উদ্বোধন ও আরও কয়েকটি প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
সেই বাঁকুড়া। সেই পানীয় জল। আরও এক বার জলের বিনিময়ে ভোট চাওয়া। বক্তা সেই সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
আরও এক বার জল প্রকল্পের উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে উঠে এল নির্বাচনে ‘আশীর্বাদ’-এর অনুরোধ। বুধবার সারেঙ্গার কুসুমটিকরি গ্রামে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের একটি জল প্রকল্পের উদ্বোধন করতে এসেছিলেন ওই দফতরের মন্ত্রী সুব্রতবাবু। তিনি রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রীও। পঞ্চায়েত ভোটের বাকি আর বছর খানেক। এ দিন মঞ্চ থেকে সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘স্বাধীনতার পর থেকে বাঁকুড়ার মানুষ জলের জন্য হাহাকার করছেন। আমাদের সরকার তাঁদের দীর্ঘদিনের এই চাহিদা মিটিয়েছে। আগের সরকার চাইলে করতে পারত। কিন্তু করেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনাদের জল দিয়েছেন। সামনেই ভোট আসছে। এক হাতে জল খাবেন, অন্য হাতে আশীর্বাদ করবেন।’’
প্রশাসনিক মঞ্চকে কাজে লাগিয়ে বাঁকুড়ায় ভোট প্রচারের অভিযোগ আগেও উঠেছে সুব্রতবাবুর বিরুদ্ধে। গত বিধানসভা ভোটের মাসখানেক আগে বড়জোড়ায় জল প্রকল্পের উদ্বোধন করতে এসে একই ভাবে তিনি ‘জল খাবেন, ভোট দেবেন’ বলে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু, বাঁকুড়ায় খুব ভাল ফল হয়নি তৃণমূলের। বাঁকুড়া ও বড়জোড়া, দুই কেন্দ্রেই হেরে যান শাসকদলের প্রার্থীরা। সেই ফল নিয়ে দলের অন্দরে বিস্তর কাটাছেঁড়া হয়েছে। দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতাও বিষয়টি ভাল ভাবে নেননি। সুব্রতবাবুর এ দিনের বক্তব্যের পরে বিরোধীদের কটাক্ষ, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটেও ওঁর আবেদন জলে না যায়!’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অমিয় পাত্র বলেন, ‘‘তৃণমূলের অবস্থা এতই খারাপ যে, ভোট পেতে পানীয় জলকেও পণ্য হিসাবে ব্যবহার করছে।’’
কুসুমটিকরির প্রকল্পটিতে দামোদর থেকে নলবাহিত পরিস্রুত পানীয় জল ইন্দাস, ওন্দা, বিষ্ণুপুর, সিমলাপাল ও সারেঙ্গা ব্লকের ১৭টি মৌজার প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন। মাথাপিছু প্রায় ৭০ লিটার করে রোজ জল দেওয়া হবে। সুব্রতবাবু জানান, প্রকল্পের জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ৮৩৩ কোটি টাকা। বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে সেই টাকা রাজ্য সরকার পেয়েছে। এ দিন মেজিয়া, গঙ্গাজলঘাটি, ইঁদপুর, তালড্যাংরা, কোতুলপুর, জয়পুর, সোনামুখী ও পাত্রসায়র ব্লকের জল প্রকল্পের শিলান্যাসও করেন মন্ত্রী।
সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘রাস্তা, বাড়ি, শৌচালয় নির্মাণের প্রকল্পগুলিতে আগে কেন্দ্র পুরো টাকা দিত। এখন রাজ্য অর্ধেক দেয়। কিন্তু শুধু প্রধানমন্ত্রীর নামে প্রচার হচ্ছে।’’ ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ প্রকল্পের নাম ‘বাংলার গৃহ যোজনা’ করা হয়েছে বলে তিনি জানান। ছিলেন পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা, দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব সৌরভকুমার দাস, বাঁকুড়ার জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু, জেলা সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy