হনুমানের আক্রমণে জখম গ্রামবাসী। সোমবার কোমায় ছবিটি তুলেছেন তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
‘বাঁদরের জন্য আজ ইস্কুল বন্ধ’।
চক দিয়ে এমনই কথা লিখে রাখা হয়েছে সিউড়ি ২ ব্লকের কোমা উচ্চ বিদ্যালয়ের গেটে। বাস্তবে এক হনুমানের উপদ্রবে শনিবার থেকে বন্ধ হয়ে রয়েছে ওই স্কুল। শিকেয় উঠেছে পঠনপাঠন। কখন ওই হনুমান এসে কামড়ে আঁচড়ে দেয় কিংবা তাড়া করে, সেই ভয়ে স্কুলেই আসছে না পড়ুয়ারা। স্কুল খুলে রেখে বসে আছেন শিক্ষকেরা। একই ছবি পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়েও।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক অসিতকুমার দে বলছেন, ‘‘দিন পনেরো ধরে একটি হনুমান চরম উপদ্রপ শুরু করেছে। গোটা গ্রাম আতঙ্কিত। একাধিক জনকে কামড়েছে। শনিবার স্কুলে পার্থ সাহা নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে কামড়ে দেয়। তাঁকে সিউড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। আক্রান্ত হয়েছে চিন্ময় বাগদি, শুভজিৎ কর্মকার, সম্পদ মুখাপাধ্যায় নামে তিন পড়ুয়াও।’’ হনুমানের উপদ্রপে ভয় এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, স্কুলে পড়ুয়াদের পাঠাচ্ছেন না অভিভাবকেরাও। বিডিও এবং বন দফতরকে ইতিমধ্যেই জানিয়েছে স্কুল। ডিএফও কল্যাণ রাই বলেন, ‘‘হনুমানটিকে ধরার চেষ্টা চলছে। খাঁচা নিয়ে বনকর্মীরা গ্রামে গিয়েছেন। তবে হনুমানটি এখন ঠিক কোথায় রয়েছে, তার খোঁজ চলছে।’’
সোমবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, হনুমানের খোঁজে এক দল বালক হাতে লাঠি বল্লম নিয়ে রাস্তায় বেরিয়েছে। এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, গ্রামেই থাকত ওই হনুমানটি। দিন পনেরো আগে হঠাৎ অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করে। তার পর থেকেই কখনও পথচলতি লোককে কামড়ে-আঁচড়ে জখম করছিল, কখনও লোক দেখলেই তাড়া করে যাচ্ছে। কোথায় কখন কোন দিক থেকে আক্রমণ শানাবে পবননন্দন, সেটাই বুঝতে পারছেন না গ্রামের মানুষ। রবিবার প্রাথমিক স্কুলের গেটে দাঁড়িয়ে থেকে হনুমানের কামড় খেয়েছেন ক্ষেত্রনাথ দাস। তিনি বলছেন, ‘‘হঠাৎ কোথা থেকে যেন উদয় হল। আমাকে দেখেই কাপড় দিল। খুব ব্যথা।’’ স্কুলের ঠিক বাইরে ব্যবসা করেন উত্তম দে। তিনি অভিভাবকও। বলছেন, ‘‘যা পরিস্থিতি ছেলেকে স্কুলে পাঠাতে ভরসা পাচ্ছি না।’’ গ্রামের বধূ রাখি ধাত্রী, শ্যামলী দাসরা জানাচ্ছেন, হনুমানের উপদ্রবে তাঁরা জল আনতে যেতেও ভয় পাচ্ছেন।
স্কুল চত্বরে একটি খাঁচায় টোপ দিয়ে আপাতত হনুমানের অপেক্ষায় বনকর্মীরা। কবে সেটি ধরা পরে, তার অপেক্ষায় কোমা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy