—ফাইল চিত্র।
যথেষ্ট প্রচার দিয়ে বীরভূমে শুরু হয়েছিল সিপিএমের ‘লং মার্চ’ কর্মসূচি। মঙ্গলবার তার শেষ পর্যায়ে ছিল জনসভা। সিউড়িতে সেই সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।
জেলার চারটি প্রান্ত থেকে সিপিএমের ‘অধিকার যাত্রা’র অঙ্গ হিসেবে চারটি দীর্ঘ মিছিল এ দিন সিউড়িতে পৌঁছয়। রাজনগর, দুবরাজপুর, কোটাসুর থেকে ‘লং মার্চ’ কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া সিপিএমের বিভিন্ন গণ-সংগঠনের কর্মীরা বিকেল পর্যন্ত সিউড়িতে আসেন। সব চেয়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে, ৩০ সেপ্টেম্বর নলহাটির লোহাপুরের কাঁটাগড়িয়া থেকে বের হওয়া মিছিল। ৮৪ কিলোমিটার পথ পার হয় সেটি।এ দিন সিউড়ির এস পি মোড়ে ওই মিছিলের সঙ্গে পা মেলান রাজ্য সম্পাদক। বিকেল সাড়ে ৩টেয় জেলা স্কুলের মাঠের মঞ্চে বক্তৃতা শুরু করেন সূর্যকান্ত। জনসভায় ভিড় অবশ্য খুব বেশি হয়নি। সিপিএমের নিজের হিসেবে, চারটি মিছিলের হাজার দুয়েক কর্মী ছিলেন। আরও কয়েকশো কর্মী-সমর্থক আলাদা ভাবে এসেছিলেন। প্রথম থেকেই রাজ্যের তৃণমূল ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা করেন সূর্যকান্ত। তাঁর দাবি, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের অচ্ছে দিন আর এ রাজ্যের উন্নয়ন— দুই-ই সমার্থক। এই জেলায় বালি, পাথর সব লুটপাট চলছে। আর কেন্দ্রে মোদী সরকারের বন্ধুরা দেশের টাকা লুট করে বাইরে পালাচ্ছে।’’
সূর্যকান্তের নিশানায় ছিলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলও। তাঁর নাম না করে সিপিএম নেতা বলেন, ‘‘বীরভূমে যা কিছু হারাচ্ছে, সে জন্য দায়ী কেষ্টাই। যা কিছু হারায় গিন্নি বলেন কেষ্টা ব্যাটাই চোর— এটা আমার কথা নয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা পুরাতন ভৃত্যের লাইন।’’ পরক্ষণেই তাঁর হেঁয়ালি, ‘‘পুরাতন ভৃত্য তো। তা-ই ওঁর দিদি ওঁকে ছাড়তে পারছেন না! লুঠতরাজ থেকেই হচ্ছে খুনোখুনি। অথচ হামলা, মিথ্যা মামলার মুখে পড়তে হচ্ছে আমাদের।’’ অনুব্রত ‘কেষ্ট’ নামেই বেশি পরিচিত। সূর্যকান্তের অভিযোগ, গত পঞ্চায়েত ভোটে ৩৪ শতাংশ আসনে বিরোধীদের লড়তে দেয়নি তৃণমূল। আর ত্রিপুরায় ৯৬ শতাংশ পঞ্চায়েত আসনে বিরোধীদের লড়তে দেয়নি বিজেপি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘ওরা শুধু দাবি করছে, এ ওর বিকল্প, সে তার।’’
অনুব্রতকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি তোলেননি। তৃণমূলের অন্য কোনও জেলা নেতাও সিপিএমের সভা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।
এ দিনের সভায় প্রথম থেকেই সিপিএম কর্মীদের একাংশের ‘বাধা’র মুখে পড়েছিলেন কয়েক জন সংবাদকর্মী। অভিযোগ, তাঁদের কটূক্তি করে সভা থেকে চলে যেতে বলা হয়। সূর্যকান্তও সাংবাদিকদের ছবি তোলার ধরণ নিয়ে আপত্তি তোলেন। অভিযোগ, এর পরেই দলীয় কর্মীদের একাংশের হেনস্থা, গালিগালাজ ও ধাক্কাধাক্কির মুখে পড়ে সভা থেকে চলে যেতে বাধ্য হন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy