শংসাপত্র হাতে কদম বাউড়ি। —নিজস্ব চিত্র
পড়া বন্ধ করে বিয়ে ঠিক করে ফেলেছিল পরিবার। মেনে নিতে পারেনি তালড্যাংরা থানার কিয়াশোল এলাকার একাদশ শ্রেণির ছাত্রী কদম বাউড়ি। বিয়ের দিন সবার নজর এড়িয়ে ওই নাবালিকা সটান চলে গিয়েছিল স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে। সেখান থেকে খবর যায় অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে। খবর পায় ব্লক প্রশাসন। শেষ হাসিটা হেসেছিল কদমই। বন্ধ হয়েছিল বিয়ে। আর সেই হাসি আরও চও়ড়া হল বৃহস্পতিবার। সাহসিকতার জন্য কদমের হাতে তুলে দেওয়া হল ‘বীরাঙ্গনা’ খেতাব।
জেলা সমাজ কল্যাণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশু সুরক্ষা আয়োগের তরফে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সাহসী মেয়েদের ‘বীরাঙ্গনা’ খেতাব দেওয়া হয়। এই বছরের মাঝামাঝি নিজের বিয়ে রুখে বাঁকুড়া জেলা থেকে সেই স্বীকৃতি পেয়েছে কদম। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার প্রতাপবাগানে রামকিঙ্কর যুব আবাস প্রাঙ্গণে জেলা সমাজ কল্যাণ দফতরের একটি অনুষ্ঠানে তার হাতে পুরষ্কার তুলে দেওয়া হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু, সহকারী সভাধিপতি শুভাশিস বটব্যাল, বাঁকুড়ার বিধায়ক শম্পা দরিপা, জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস, বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত, জেলা সমাজ কল্যাণ আধিকারিক জয়ন্ত রায় প্রমুখ।
বৃহস্পতিবার কদম বলে, “সে দিন আমার বিয়ে হয়ে গেলে ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনও স্বপ্নই দেখতে পারতাম না। আমি অনেক দূর পর্যন্ত পড়াশোনা করতে চাই। এখন মোটেও বিয়ে করতে চাই না।” জেলা সমাজ কল্যাণ আধিকারিক জয়ন্তবাবু বলেন, “আমরা চাই কদমকে দেখে এই জেলার মেয়েরা অনুপ্রাণিত হোক।” তালড্যাংরা অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক বাসুদেব মণ্ডল বলেন, ‘‘বিয়ের দিন লুকিয়ে স্কুলে এসেছিল কদম। সেই সমস্ত কথা ভোলার নয়। বিয়ে বন্ধ করতে গিয়েছি শুনেই আমাদের ঘিরে শুরু হয়েছিল বিক্ষোভ। পুলিশের সহযোগিতায় কোনও ভাবে বিয়ে রোখা গিয়েছিল। কদমের এই সম্মানে আমরা গর্বিত।’’
নিজেদের ভুল তাঁরা এখন বুঝতে পেরেছেন বলে দাবি করছেন কদমের অভিভাবকেরাও। তাঁদের এক জন এ দিন বলেন, ‘‘ও আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে অনেক কিছু শিখিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy