Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

হাতেগোনা যাত্রী নিয়ে চলল প্রথম দিনের বাস

সাত জন যাত্রীকে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হল কলকাতার দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার একটি বাস।

ফাঁকা: সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডে একটি বাসে এক যাত্রী। নিজস্ব চিত্র

ফাঁকা: সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডে একটি বাসে এক যাত্রী। নিজস্ব চিত্র

শুভদীপ পাল
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২০ ০৫:৪১
Share: Save:

চিত্র এক: তখন ঘড়ির কাঁটা সাড়ে আটটা ছুঁইছুঁই। বাসে বসে সবেধন এক জন যাত্রী। অথচ, বাস ছাড়ার সময় হয়ে গিয়েছে। এক জন সওয়ারি নিয়ে কি আর বাস চালানো যায়। আধ ঘণ্টা অপেক্ষার পরে আরও চার যাত্রী নিয়ে বহরমপুরের উদ্দেশে রওনা হল উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বাসটি।

চিত্র দুই, তখন বেলা একটা। সাত জন যাত্রীকে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হল কলকাতার দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার একটি বাস।

লকডাউনের কারণে দু’মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পরে বুধবার থেকে চালু হয়েছে সরকারি বাস পরিষেবা। কিন্তু, প্রথম দিনে মিলল না প্রত্যাশিত যাত্রী। এ দিন উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার তিনটি বাস সিউড়ি থেকে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হয়। সংস্থার কর্মীরা জানিয়েছেন, এ দিন সকালে প্রথম সিউড়ি থেকে ইসলামপুরের উদ্দেশে রওনা হয় একটি বাস। যেখানে যাত্রী ছিলেন ন’জন। সিউড়ি থেকে বালুরঘাট এবং বহরমপুরের উদ্দেশে রওনা হওয়া বাস দুটির একটিতে সাত জন এবং অন্যটিতে পাঁচ জন যাত্রী ছিলেন। যাঁরা স্ট্যান্ড থেকে চেপেছেন, তাঁরা সেখানেই টিকিট কেটেছেন। প্রত্যেক যাত্রীর থার্মাল স্ক্রিনিংও করা হয়েছে।

এ দিন বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা গেল, প্রত্যেক বাসকর্মীদের করোনা প্রতিরোধের জন্য বিশেষ পোশাক (পিপিই), মাস্ক এবং গ্লাভস পড়তে দেখা যায়। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার সিউড়ি ডিপোর সহ পরিদর্শক বিমলেন্দু সাহা বলেন, ‘‘অনেক মানুষ জানেন না যে বাস চলাচল শুরু হয়েছে। তাই এ দিন যাত্রী কম ছিল। যাত্রী সংখ্যা বাড়ল বলে।’’ অন্য দিকে, দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার চারটি বাস এ দিন সিউড়ি থেকে কলকাতা, বর্ধমান, দুর্গাপুর এবং বাঁকুড়া এই চারটি রুটে নির্ধারিত সময়ে রওনা হয়। প্রত্যেক বাসে যাত্রী ছিল হাতেগোনা। সংস্থার কর্মীরা জানিয়েছেন, ৭-৮ জনের বেশি যাত্রী হয়নি। সংস্থার সিউড়ি ডিপো ইনচার্জ তাপস মুখোপাধ্যায়ও দ্রুত যাত্রী বাড়বে বলে আশাবাদী। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা থেকে বলা হয়েছে বাসে ২০ জনের বেশি যাত্রী নিয়ে যাওয়া যাবে না। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা সংখ্যাটা বেঁধেছে ২৫-এ। দুই পরিবহণ সংস্থাই জানিয়েছে, যাত্রীদের চাহিদার উপরে নির্ভর করে আগামী দিনে বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে।

বাস চলাচল শুরু হওয়ায় খুশি যাত্রীরা। বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে রাজু শেখ বললেন, ‘‘কলকাতায় থাকি। লকডাউনের আগে বাড়ি এসে আটকে পড়েছিলাম। জরুরি নথি সবই কলকাতায় রয়ে গিয়েছে। সেগুলিই আনতে চললাম।’’ আর এক যাত্রী রঘুনাথ দে বলেন, ‘‘আমার বর্ধমানে নামার কথা ছিল। কিন্তু, ভুল করে কলকাতা থেকে সিউড়ি চলে এসেছি। তাই ফের বর্ধমান যাব। বাস না চললে এখানেই আটকে পড়তাম।’’

তবে করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে রয়েছেন বাসকর্মী থেকে শুরু করে যাত্রী সকলেই। এক চালক এবং কন্ডাক্টর বললেন, ‘‘যাত্রীরা সকলে বাসে না ওঠা পর্যন্ত আমরা গাড়িতে চাপছি না। কারণ, কোন যাত্রী আক্রান্ত সেটা বুঝতে পারছি না। তাই যতটা সম্ভব নিজেকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করছি।’’ বাস চলাচলে আতঙ্কিত শহরবাসীর একাংশ। তাঁরা বলছেন, ‘‘এ ভাবে নজরদারি না রেখে গণপরিবহণ চালু হলে সংক্রমণ আরও বাড়তে এতটুকু সময় লাগবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE