Advertisement
০৭ মে ২০২৪

ছাত্রছাত্রীদের উত্‌সাহ দানে পুরস্কার প্রাক্তনীর

এলাকায় ৭৫ শতাংশ তফসিলি সম্প্রদায়ের বাস। ১০ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। এমন একটা এলাকা ঘিরে গড়ে ওঠা সাহাপুর হাইস্কুল ১০৭ বছরে পা ফেলেছে। মাড়গ্রাম থানার এই স্কুলে বন্যাপ্রবণ এলাকা রামপুরহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির রানাপুর, হাবাত কুড়ো, কুজোপাড়া, সরলপুর, নুরুদ্দিপুর, বাটি এই সমস্ত গ্রামগুলির ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করতে আসে।

প্রাক্তনী দেবাশিস দাসের সঙ্গে চার পড়ুয়া। —নিজস্ব চিত্র।

প্রাক্তনী দেবাশিস দাসের সঙ্গে চার পড়ুয়া। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:১৬
Share: Save:

এলাকায় ৭৫ শতাংশ তফসিলি সম্প্রদায়ের বাস। ১০ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। এমন একটা এলাকা ঘিরে গড়ে ওঠা সাহাপুর হাইস্কুল ১০৭ বছরে পা ফেলেছে। মাড়গ্রাম থানার এই স্কুলে বন্যাপ্রবণ এলাকা রামপুরহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির রানাপুর, হাবাত কুড়ো, কুজোপাড়া, সরলপুর, নুরুদ্দিপুর, বাটি এই সমস্ত গ্রামগুলির ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করতে আসে। তাদেরকে বর্ষার সময় জল কাদা-ভেঙে তিন-চার কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে কাউকে কাঁদর, ছোট ছোট খাল ডিঙিয়ে আসতে হয়।

তাই এই স্কুলের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের উত্‌সাহ দানের জন্য কৃতী ছেলেমেয়েদের বছর দু’য়েক থেকে সোনার মেডেল দিচ্ছেন স্কুলেরই প্রাক্তন ছাত্র দেবাশিস দাস। ৫৪ বছর বয়সী দেবাশিসবাবু হেতমপুর কলেজে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক। তাঁর কথায়, “গ্রামের এই স্কুলে দূর দূরান্ত থেকে কষ্ট করে ছেলেমেয়েরা এখনও পড়তে আসে। তাদের উত্‌সাহ দানের প্রয়োজন আছে এবং সেক্ষেত্রে তাদের ভবিষ্যত্‌ সোনার মতো উজ্জ্বল যেন হয়, সে জন্য গত বছর থেকে আমার পিতৃপুরুষদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে চারটি সোনার মেডেল পুরস্কার দিচ্ছি। এতে আগামীদিনে যাতে অন্য পড়ুয়ারা উত্‌সাহ পায় সেই চেষ্টা করছি।” সাহাপুর হাইস্কুলে এ বছর যারা পুরস্কার পেয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে উচ্চ মাধ্যমিকের মানোয়ারা বেগম এবং টোটন মাল। মাধ্যমিকে পুরস্কার প্রাপকেরা হল শৌভিক দে এবং মধুমিতা প্রামাণিক। প্রধান শিক্ষক আশিস সরকার বলেন, “এ বারে স্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষাত্রী ১১৩ জন। তাদের মধ্যে ছাত্রী ৬৪ ও ছাত্র ৪৯ জন। স্কুলে তফসিলি অধ্যুষিত পড়ুয়াদের সংখ্যা বেশি। এলাকায় আগের থেকে অবশ্যই মেয়েদের শিক্ষার অগ্রগতি বেড়েছে। গত বছর উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে মানোয়ারা বেগম ৮২ শতাংশ ফল করেছিল। যেটা প্রত্যন্ত একটা স্কুল থেকে অবশ্যই ভাল ফল বলে আমি মনে করি।”

স্কুলের সহকারী শিক্ষক অধীর দাস জানালেন, অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়ে স্কুলে বেশিরভাগ তফসিলি এবং সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে আসে। মানোয়ারাদের উত্‌সাহ দানে স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র তথা হেতমপুর কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক দেবাশিসবাবুর অবদান শুধু আজকের নয়। মেডেল দেওয়ার আগে তিনি ডিকশনারি ছেলেমেয়েদের দিয়েছেন। সোমবার থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। তার আগে দেবাশিসবাবুর সোনার মেডেল দেওয়া অবশ্যই স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ভাল ফল করতে উত্‌সাহ করবে বলে মনে করছে মানোয়ারা, শৌভিক, টোটন মাল ও মধুমিতারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rampurhat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE