যাত্রীরা সাবধান
রেলযাত্রীর একটু অমনোযোগের সুযোগেই ব্যাগ চুরি যাওয়া এখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১৭-৯-১৪ তারিখের আপ-১৩১৪৭ উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসে আমি দক্ষিণেশ্বর থেকে উঠি। আমার টিকিট ছিল এস-২ কোচের ১৫ নম্বর সাইড লোয়ার বার্থ। কোচবিহার এ বি এন শীল কলেজে অধ্যাপনাসূত্রে আমাদের অনেককেই প্রায়শ যাওয়া-আসা করতে হয়। তাই বেশ কয়েক জন সহকর্মীও ছিলেন সে দিন আমার সহযাত্রী। গল্পে-কথায় আমরা ওই কোচের তিন সহকর্মী ফরাক্কা সেতু পার করে রাত্রি প্রায় দুটোর সময় ঘুমোনোর জন্য যে যার বার্থে চলে যাই। আমার ব্যাগটি পাশেই ঝোলানো ছিল। রাত্রি আড়াইটে নাগাদ ট্রেনটি যখন মালদহ টাউন স্টেশনে দাঁড়ায়, তখন আমি আধো-ঘুমে আচ্ছন্ন প্ল্যাটফর্মে চলমান চা, রসগোল্লাওয়ালাদের ফেরিওয়ালি সুর আমার কানে পৌঁছেছিল। অল্প কিছুক্ষণ বাদেই চোখ খুলে দেখি আমার ব্যাগটি উধাও। তখনও অবশ্য ট্রেনটি স্টেশনে দাঁড়ানো। সেখানে কর্তব্যরত রেলরক্ষীদের তৎক্ষণাৎ জানালাম, কিন্তু দেখলাম, তাদের মধ্যে অদ্ভুত এক নির্লিপ্ততা। তার পর এনজেপি পৌঁছে মালদহ টাউন জিআরপি-র কাছে একটি জেনারেল ডায়েরি করলাম, যার নম্বর: শূন্য এফ আই আর, জিডি নম্বর ১১২৩, তারিখ ১৮-৯-১৪। দু’দিন পরে খবর এল ওই একই আপ উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসে অন্য দুই যাত্রীর দু’টি ব্যাগ উধাও হয়ে গেছে। খোওয়া যাওয়া ব্যাগের এক সহৃদয় অধিকারীর সদর্থক সক্রিয়তায় আমি নিউ কোচবিহার স্টেশনে তাঁর কাছ থেকে আমার ব্যাগটি পেলাম। চোর-দলের পান্ডা অনেক বিবেচনা করেই বোধহয় আমার সার্ভিস আই কার্ড, মোবাইল সিম কার্ড এবং ২২-৯ তারিখে কলকাতা ফেরার ডাউন উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের রিজার্ভেশন টিকিটটি ব্যাগসমেত ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি আমার এটিএম কার্ড, পার্স, ডঙ্গল, পেনড্রাইভ, চশমা এবং দরকারি কাগজপত্র-ভর্তি ফাইলটি নিজ জিম্মায় রেখে আমাকে যথেষ্ট সমস্যার মধ্যেই রেখে দিলেন।
অমরেশ মণ্ডল। বেলঘরিয়া,কলকাতা-৫৬
যঃ বীরেন্দ্রঃ সর্বভূতেষু
বেতারখ্যাত বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র সম্পর্কে শ্রদ্ধেয় জগন্নাথ বসুর (পত্রিকা, ২০-৯) লেখায় অনেক অজানা তথ্য জানতে পারলাম। মহালয়ার দিনে বেতারে বীরেন্দ্রকৃষ্ণের চণ্ডীপাঠ না শুনলে মনে হয় দুর্গাপূজা যেন অসমাপ্ত। কিন্তু ‘যা বীরেন্দ্র সর্বভূতেষু’ এই নামকরণ উপযুক্ত হয়নি। ‘যদ্’ শব্দের (সর্বনাম) স্ত্রী লিঙ্গের প্রথমার একবচনে হয় ‘যা’। দেবীর সর্বনামীয় বিশেষণ হিসাবে হয় ‘যা’। অতএব ‘যা দেবী সর্বভূতেষু’ সংস্কৃত ব্যাকরণসম্মত। কিন্তু তা বলে ‘যা বীরেন্দ্র সর্বভূতেষু! হওয়া উচিত ছিল ‘যঃ বীরেন্দ্রঃ সর্বভূতেষু’।
পৃথ্বীশ চক্রবর্তী। কলকাতা-১৪০
কী করে বাঙালি চিনবেন
প্রবাসী বা অনাবাসী বাঙালিরা যদি পশ্চিমবঙ্গের খাঁটি বাঙালিদের চিনতে চান, তবে কয়েকটি ব্যাপারের দিকে নজর রাখুন।
১) এক জন অবাঙালি যখন বাংলা ভাষায় কথাবার্তা চালাচ্ছেন, তখন তাঁর সমানে যিনি অনর্গল হিন্দিতে কথা বলছেন, বুঝবেন তিনি অবশ্যই বাঙালি।
২) শহরতলির ট্রেনে যখন দেখবেন, অবাঙালিরা নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া করে দিব্যি চার জন বসে যাচ্ছেন, তখন উল্টো দিকে ট্রেনের সিটটাকে সোফা-কাম বেডের মতো করে একটু সরতে বললে শুধু মাত্র নড়ে বসেন, যিনি কিছুতেই নিজের আরামটুকু ছাড়তে রাজি নন, বুঝবেন তিনি অবশ্যই বাঙালি।
৩) ট্রেনের কামরায় বা পাড়ায় পাড়ায় যে বিষয়েই আলোচনা শুরু হোক না কেন, সেটাকে যিনি রাজনীতির দিকে জোর করে টেনে নিয়ে যাবেন, বুঝবেন তিনি অবশ্যই বাঙালি। পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র এরাই, যারা শুধু নিজের বাড়ি, পাড়া, রাজ্য, দেশের ব্যাপারে সচেতন না হয়ে সব সময় নিকারাগুয়ার কৃষিব্যবস্থা বা কিউবার চিনিকে কী ভাবে আরও সুস্বাদু করা যায় এ সব ব্যাপারেই সর্বদা সাংঘাতিক রকম চিন্তিত থাকে।
৪) পয়লা বৈশাখে এসএমএস পাঠানোর সময় যারা লেখে ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’।
তালিকা নিতান্তই অসমাপ্ত, সমাপ্ত করার দায়িত্ব অন্য পাঠক-পাঠিকারাও একটু নিন।
অরূপরতন আইচ। কোন্নগর, হুগলি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy