Advertisement
০২ মে ২০২৪
Political News

এত দিনে একটা নিরপেক্ষ স্বর শোনা গেল

আদালত কিন্তু শুধু নির্দেশ দিয়েই হাত গুটিয়ে নেয়নি। স্বাভাবিকতা ফেরানোর সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে। নির্দেশ পালিত না হলে পাহাড়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে।

রাজ্যের সর্বোচ্চ আদালত এবং দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

রাজ্যের সর্বোচ্চ আদালত এবং দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৭ ০৪:৫৪
Share: Save:

টানা আগুন জ্বলছে পাহাড়ে। সবাই চাপান-উতোরে মগ্ন। নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে একটা দৃঢ় কণ্ঠস্বর জরুরি উচ্চারণটা করুক— রোজ মনে হচ্ছিল এ কথা। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা এবং পরিস্থিতি বজায় রাখতে দায়বদ্ধ যাঁরা, তাঁরা সকলে পরস্পরের ত্রুটি খুঁজতে ব্যস্ত ছিলেন। কাঙ্ক্ষিত এবং নিরপেক্ষ কণ্ঠস্বরটা অবশেষে এল বিচার বিভাগ থেকে। অত্যন্ত কড়া বার্তা দিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত এবং রাজ্যের সর্বোচ্চ আদালত যুগপত্ মনে করিয়ে দিল, হিতাহীত জ্ঞানশূন্য হওয়াটা মানায় না— সরকারকেও মানায় না, রাজনৈতিক দলকেও না।

পাহাড়ের অশান্তিতে পক্ষ এখন তিনটি— বিক্ষোভকারী, রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকার। যে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সম্মুখীন পাহাড় আজ, তার দায় কিন্তু কোনও পক্ষই এড়াতে পারে না। অশান্তির সূত্রপাত কী ভাবে হল, কারা পরিস্থিতিকে হিংসাত্মক করে তুলল, কারা অযৌক্তিক অবস্থানে রয়েছে— এ সব নিয়ে ভূরি ভূরি প্রশ্ন হয়তো রয়েছে। কিন্তু সে সব প্রশ্নকে ঘিরে তর্ক জুড়ে দেওয়ার সময় এটা নয়। পাহাড়ের পরিস্থিতি যে স্বাভাবিক নয়, এ ভাবে যে জীবন চলতে পারে না, স্বাভাবিকতা ফেরানোই যে সর্বাপেক্ষা জরুরি, পাহাড় প্রসঙ্গে এখন সবচেয়ে বড় কথা সেটাই। সেই কথাটা কোনও পক্ষ বলছিল না। খালি দোষারোপের পালা, খালি আগুন, খালি পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া আর রক্তপাত আর প্রাণহানী। অবিলম্বে এই চরম নৈরাজ্যের অবসান চেয়েছে বিচার বিভাগ।

আদালত কিন্তু শুধু নির্দেশ দিয়েই হাত গুটিয়ে নেয়নি। স্বাভাবিকতা ফেরানোর সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে। নির্দেশ পালিত না হলে পাহাড়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে। তেমন হস্তক্ষেপ যদি সত্যিই হয়, প্রশাসনের গরিমা কি বাড়বে? মোর্চার মাহাত্ম্যও কি বাড়বে?

সব পক্ষের হাতেই এখনও কিন্তু সতর্ক হওয়ার সুযোগ রয়েছে। পাহাড়ে অবিলম্বে কী পদক্ষেপ করতে হবে, আদালত নিজের নির্দেশে এখনও পর্যন্ত শুধু সেটুকুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছে। সে নির্দেশ পালিত হলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে। কিন্তু স্থায়ী শৃঙ্খলার জন্য বৃহত্তর সমাধান সূত্র জরুরি। সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলিকেই কিন্তু সেই সমাধান সূত্রে পৌঁছনোর জন্য এগোতে হবে। এখনই, এই মুহূর্ত থেকেই রফা সূত্রের খোঁজ শুরু করতে হবে। না হলে সে বিষয়েও বিচার বিভাগের হস্তক্ষেপ আসতে পারে। তেমন দৃষ্টান্ত কিন্তু এ দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের পক্ষে একেবারেই গৌরবের বিষয় হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE