Advertisement
E-Paper

শুধু উদ্বেগ প্রকাশ নয়, অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করাও কমিশনের দায়িত্ব

রাত পোহালেই পুরসভার নির্বাচন। আর এ রাজ্যে সাম্প্রতিক কালের যে কোনও নির্বাচনের মতো এ নির্বাচনকে ঘিরেও বিস্তর অভিযোগ বিরোধীদের।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৭ ০৩:৫৬

রাত পোহালেই পুরসভার নির্বাচন। আর এ রাজ্যে সাম্প্রতিক কালের যে কোনও নির্বাচনের মতো এ নির্বাচনকে ঘিরেও বিস্তর অভিযোগ বিরোধীদের। ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ, বাইক বাহিনীর দাপটের অভিযোগ, পুলিশি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ। তার সঙ্গে এক রাশ আশঙ্কা— ভোট আদৌ অবাধ হবে তো? অভিযোগ আর আশঙ্কা যদি শুধু বিরোধীদের হত, তা হলে এখনই সে নিয়ে খুব বেশি চর্চার প্রয়োজন হয়তো ছিল না। কারণ ভারতীয় গণতন্ত্রে অধিকাংশ নির্বাচনের আগেই বিরোধীরা শাসকের বিরুদ্ধে এমন নানা অভিযোগ তুলে থাকেন। কিন্তু অভিযোগগুলিকে নিয়ে উদ্বেগে থাকতে হচ্ছে, কারণ ভোট অবাধ না-ও হতে পারে এমন আশঙ্কা নির্বাচন কমিশনেরও রয়েছে। রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার নিজেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পুর নির্বাচন যদি অবাধ না হয়, পুলিশকেই তার দায় নিতে হবে— এমন সতর্কবার্তাও দিয়ে রেখেছেন।

মাত্র সাতটি পুরসভার নির্বাচন। এ নির্বাচনের জয় বা পরাজয় কোনও ভাবেই রাজ্যের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দেবে না। এই নির্বাচনের ফলাফল যা-ই হোক, তাতে রাজ্যের রাজনৈতিক প্রবাহ ওলট-পালট হয়ে যাবে, এমন সম্ভাবনাও সুদূরপরাহত। তা সত্ত্বেও নির্বাচন দখল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়! গণতন্ত্রের জন্য এই পরিস্থিতি কতটা দুর্ভাগ্যজনক, তা নিশ্চয়ই আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

রাজ্য নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনমুখী পুর এলাকাগুলি সফর করেছেন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন। নির্বাচনের দিন কী ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকা উচিত, সে বিষয়ে প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন। নির্বাচনের দিন কী কী ঘটা উচিত নয়, সে বিষয়েও পুলিশকে সতর্ক করেছেন। বিরোধীদের মনে ভরসা কিন্তু তাতেও জাগাতে পারেননি তিনি। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মতো নয়, ভোটের দিন পুলিশ শাসক দলের কথা মতোই কাজ করবে— বিরোধীরা এমন আশঙ্কাই বার বার প্রকাশ করছেন। অর্থাৎ, কমিশনের সক্ষমতা নিয়েই সন্দিহান এ রাজ্যের বিরোধী শিবির। এই পরিস্থিতি কি নির্বাচন কমিশনের পক্ষে আদৌ গৌরবজনক?

এই অগৌরবকেও কিন্তু গৌরবে বদলে দেওয়া যায়। তার জন্য প্রয়োজন দৃঢ়তা এবং ঋজুতা। নির্বাচন যদি শান্তিপূর্ণ ভাবে মিটে যায়, তা হলে প্রশ্ন তোলার অবকাশই থাকবে না। কিন্তু যদি শান্তিপূর্ণ না থাকে পরিস্থিতি, যদি নাগরিকের অধিকার হরণের চেষ্টা হয়, তা হলে সেই দৃঢ়তা এবং ঋজুতার পরিচয় দেওয়া জরুরি হয়ে পড়বে।

নির্বাচন কমিশনারের বিবৃতি শুনে কিন্তু মনে হচ্ছে, নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ রাখতে কমিশন বদ্ধপরিকর। যদি সত্যিই নির্বিঘ্নে মেটে ভোটপর্ব, কমিশন তার হৃত গৌরব কিছুটা হলেও পুনরুদ্ধার করবে। আর যদি তা না হয়, দায় শুধু পুলিশের উপর নয়, কমিশনের উপরেও বর্তাবে। আরও এক বার এ-ও প্রমাণ হবে যে ভোটের আগে কমিশনের দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলি রুটিন বিবৃতি মাত্র।

Anjan Bandyopadhyay Newsletter West Bengal Municipal election state election commission
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy